অর্থভুবন ডেস্ক
সারা দেশের ফুলচাষিদের সুবিধার্থে রাজধানীর গাবতলীতে গত শুক্রবার উদ্বোধন করা হয়েছে পাইকারি ফুলের বাজার। তবে এখনও এ বাজারে ব্যবসায়ীদের তেমন আনাগোনা নেই। বাজারে এখনও তৈরি হয়নি ফুল কেনাবেচার পরিবেশ।
শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, বাজারের মেইন গেটে তালা ঝুলছে। ফুলবাজারের আশপাশে কোথাও কোনো ফুলের গাড়ি নেই। বাজারে ছিল না ফুল ব্যবসায়ীদের সমাগম। সকাল ৭টার পর মেইন গেট খুলে ভেতরটা পরিষ্কার করছিলেন ফুল বাজারের কর্মচারী ফেরদৌস আলম। তিনি বলেন, এ পাইকারি বাজারটি সবেমাত্র উদ্বোধন হয়েছে। স্যারেরা বলেছেন, এ বাজারে ফুল কেনাবেচা শুরু হতে সময় লাগবে।
গাবতলীতে ফুলের পাইকারি বাজার স্থাপন হওয়ায় বাজারের পাশে থাকা মানুষদের মনে কিছুটা উচ্ছ্বাস দেখা যায়। তবে কবে এ বাজার চালু হবে তা জানেন না তারা। বাজারের পাশেই থাকেন মঈন উদ্দিন (৪৫)। তিনি বলেন, এ এলাকায় পাইকারি ফুলের বাজার হওয়ায় কিছু মানুষ নতুন করে কাজের সুযোগ পাবে। তবে উদ্বোধনের পরও বাজারের গা ঘেঁষেই এখনও ছোট ছোট দোকান ও খাবার হোটেল রয়েছে। এগুলো না সরানো পর্যন্ত মনে হয় এ মার্কেটে কেনাবেচা শুরু হবে না।
গাবতলীর পাইকারি ফুল বাজরের মূল ভবনটি বেশ সাজানো গোছানো মনে হলেও বাইরের পরিবেশ এখনও অনেকটাই অগোছাল। কবে নাগাদ এ বাজার ফুল ব্যববসায়ীদের আনোগোনায় সরগরম হয়ে উঠবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বাজারের বেশ কয়েকটি নীতিমালা নিয়ে ফুল ব্যবসায়ীদের মধ্যে আপত্তি দেখা দেওয়ায় এটি চালু হতে একটু দেরি হবে।
নীতিমালার মধ্যে ১ বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে ব্যবসায়ীদের স্থান বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আপত্তি রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ফুল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নীতিমালা সংশোধন নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আলোচনা চলছে। এটি সমাধানের পর বাজারের আরও যে কাজগুলো বাকি আছে সেগুলো শেষ হলেই দ্রুতই এটি চালু হবে।
ফুলের এ নতুন পাইকারি বাজার নিয়ে ফ্লাওয়ার গ্রোয়ার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ ও আগারগাঁও পাইকারি ফুল ব্যবসায়ীদের সভাপতি নূর মোহাম্মদ বলেন, রাজধানীতে নতুন একটি পাইকারি ফুলের বাজার উদ্বোধন হওয়ায় আমরা ফুল ব্যবসায়ীরা অনেক খুশি হয়েছি। তবে বাজার উদ্বোধন হলেও সেখানে এখনও ফুল কেনাবেচার পরিবেশ তৈরি হয়নি। আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য যে সরকারি যে নীতিমালা দেওয়া হয়েছে এর মধ্যে বেশ কিছু নিয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে এগুলো মেনে নেওয়ার ব্যাপারে কিছুটা আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাজারের এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে, এগুলো শেষ হলেই বাজার চালু হবে। বর্তমানে দেশের ২৪টি জেলায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হচ্ছে। এখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজের সুযোগ হয়েছে ১৫ লাখ মানুষের। নতুন করে গাবতলীতে ফুলের পাইকারি বাজার উদ্বোধন হওয়ায় ফুলের সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে এই পাইকারি বাজার পরিপূর্ণভাবে চালু না হওয়া পর্যন্ত সেই আশা আঁধারেই থেকে যাবে বলে মনে করছেন ফুল ব্যবসায়ীরা।