অর্থভুবন ডেস্ক
অনেক শিক্ষার্থী জ্যামিতি বিষয়ে দুর্বল হওয়ার কারণে গণিতে ভালো করতে পারে না। জ্যামিতিতে দুর্বলতার অন্যতম কারণ হলো না বুঝে মুখস্থ করার প্রবণতা। কিন্তু কিছু বিষয় কৌশল অবলম্বন করলেই জ্যামিতিতে ভালো করা সম্ভব। জানাচ্ছেন এনাম-উজ-জামান
জ্যামিতির মৌলিক সংজ্ঞাগুলো সম্পর্কে জানতে হবে
জ্যামিতি সম্পর্কে ভালো করতে হবে এর মৌলিক বিষয়গুলো যেমনÑ ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত, সামান্তরিক, ট্রাপিজিয়াম ইত্যাদির সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে, আত্মস্থ করতে হবে। এই বিষয়গুলো এড়িয়ে গেলে পরের অংশে কী বলা হলো বা কোনটি প্রমাণ করতে বলা হলো তা যেমন বোঝা যাবে না, তেমনি বিভিন্ন জ্যামিতিক অনুসিদ্ধান্ত ব্যবহার করতেও অসুবিধায় পড়তে হবে। তাই জ্যামিতিতে ভালো করতে হলে মৌলিক বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। এ জন্য মনোযোগ দিয়ে অনুশীলনীর আগের অংশটি পড়তে হবে।
বিভিন্ন কোণের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হবে
জ্যামিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সম্পাদ্য। সম্পাদ্যে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ত্রিভুজ, বৃত্ত ও চতুর্ভুজ আঁকতে বলা হয়। চিত্রটি আঁকলেই শুধু হবে না। কীভাবে চিত্রটি আঁকা হলো তার বিবরণও আঁকতে হয়। এসব চিত্র আঁকার সময় উল্লেখ করে দেওয়া থাকে সূক্ষ্মকোণ আঁকতে হবে নাকি স্থূলকোণ আঁকতে হবে। শুধু সম্পাদ্য আঁকার সময় যে কোণের প্রয়োজন হয় তা নয়, উপপাদ্য প্রমাণের সময়ও বিভিন্ন কোণ যেমন বিপ্রতীপ কোণ বা সম্পূরক কোণ ইত্যাদির প্রসঙ্গ আসে। তাই সম্পাদ্য ও উপপাদ্যে ভালো করতে এসব কোণের নাম, সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা অত্যাবশ্যকীয়।
জ্যামিতিক পরিভাষা সম্পর্কে জানতে হবে
জ্যামিতিতে ভালো করতে হলে জ্যামিতিক পরিভাষা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে হবে। যেমন ধরা যাক সর্বসমতা। দুটি ত্রিভুজ যখন একটির ওপর অপরটি পূর্ণভাবে সমাপতিত হয় তখন ত্রিভুজ দুটিকে পরস্পরের সর্বসম ত্রিভুজ বলে। এখানে আবার মজার ব্যাপার আছে। আমরা জানি, ৫-এর সঙ্গে ৫ যোগ করলে ১০ হয়। আবার ৬-এর সঙ্গে ৪ যোগ করলেও ১০ হয়। আবার, ৮-এর সঙ্গে ২ বা ৭-এর সঙ্গে ৩ যোগ করলেও কিন্তু ১০ হয়। তেমনি সর্বসমতারও কিন্তু নির্দিষ্ট একটি নিয়ম নেই। দুটি ত্রিভুজের তিনটি বাহু পরস্পর সমান হলে যেমন ত্রিভুজ দুটি সর্বসম হয় তেমনি দুটি ত্রিভুজের একটি বাহু এবং ওপর দুই বাহুর অন্তর্ভুক্ত কোণ সমান হলেও কিন্তু ত্রিভুজ দুটি সর্বসম হবে। এই জ্যামিতিক পরিভাষা এবং অনুসিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকলে জ্যামিতি বিষয়ে ভালো করা যায় না।
সূত্র সম্পর্কে জানতে হবে
পরিমিতি ও ঘন জ্যামিতি সূত্র এবং গাণিতিক দক্ষতা নির্ভর। এই অংশে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত এসব আকৃতি তার সঙ্গে বিভিন্ন ত্রিমাত্রিক আকৃতি যেমন সিলিন্ডার, গোলক, প্রিজম ইত্যাদি দিয়েই ক্ষেত্রফল, আয়তন, পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়। সূত্রগুলোর প্রমাণসহ ভালোভাবে বুঝে ও সূত্রগুলোর প্রয়োগ কৌশল আয়ত্ত করতে পারলেই এ অংশে ভালো করা সম্ভব।
নিয়মিত অনুশীলনের বিকল্প নেই
জ্যামিতিতে ভালো করতে হলে অনুশীলনের বিকল্প নেই। শুধু বুঝলেই হবে না নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। অনেকে ভয় পেয়ে জ্যামিতি অংশ পরিহার করে। কিন্তু ভয় পেয়ে এড়িয়ে গেলে কিংবা মুখস্থ করলে জ্যামিতিতে ভালো করা যায় না। তাই মৌলিক বিষয়গুলো আয়ত্ত করো এবং নিয়মিত অনুশীলন করো। জ্যামিতি তোমার কাছে সহজ হয়ে উঠবে।