অর্থভুবন প্রতিবেদক
মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বরিশালে ৬০ টাকার একটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপে ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি এবং ফলন কমের অজুহাতে উচ্চমূল্যের অতীত রেকর্ড ভেঙেছে ডাবের দাম। এর আগে কখনোই এমন উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়নি। সর্ব্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্থানীয় প্রান্তিক কৃষক বা গৃহস্থ একটি ডাব মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকায় পাইকারি
ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করলেও তা খুচরা বাজারে এসে বেড়ে যাচ্ছে সাতগুণের বেশি। এর চেয়েও বেশি দামে নগরীর হাসপাতাল ও ক্লিনিক এলাকায় ডাব বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ দাম বৃদ্ধির পেছনে মধ্যস্বত্বভোগীসহ সিন্ডিকেটের অসাধু ব্যবসায়ীরাই দায়ী বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করে অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় আনার।
নগরীর কাউনিয়ার বাসিন্দা সোহেল হাওলাদার জানান, ১৫ দিন আগে যে ডাব কিনেছি ৬০ টাকায় সেই ডাব এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। কদিনের মধ্যে এক লাফে অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছেন। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
এক ডেঙ্গু রোগীর স্বজন মোজাম্মেল হক জানান, ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন ডাব বা স্যালাইনের পানি খাওয়াতে। ডাব কিনতে এসে দেখি বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম চাইছেন। ব্যবসায়ীদের স্বেচ্ছাচারিতা ঠেকাতে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
খুচরা ডাব বিক্রেতা ইউনুস আলী জানান, শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে ডাব বেশি পাওয়া যায় না। এছাড়া ডেঙ্গুজ্বরসহ অন্যান্য জ্বরের কারণে ডাবের চাহিদাও বেড়েছে। গৃহস্থদের কাছ থেকে একটি ডাব কিনে নগরীতে আনতেই দেড়শ টাকা খরচ হয়ে যায়। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।
গৃহস্থ ডাব বিক্রেতা সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের তালুকদার বাড়ির খলিলুর রহমান জানান, কয়েক দিন আগেও প্রতিটি ডাব ৩০ টাকায় বিক্রি করেছি। সেই ডাবের দাম কিভাবে বেড়ে গেল তা জানা নেই।
বরিশাল নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ১৫ দিনের ব্যবধানে ডাবের দাম সাত গুণ বেড়ে যাওয়া কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। অতি মুনাফালোভীদের জন্য জনসাধারণের এমন করুণ দশা। তাই অবিলম্বে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইন্দ্রানী দাস জানান, এমন পরিস্থিতি এ-ই প্রথমবার হওয়ায় ডাব ব্যবসায়ীদের ন্যায্য দামে বিক্রিসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। তারা নির্দেশনার ব্যত্যয় করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের নিয়মিত বাজার মনিটরিং চলছে।