অর্থভুবন ডেস্ক
৫৫ শতক জমিতে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে আখ। আকারে লম্বা এ আখের বাইরের অংশ দেখতে কালো ও খয়েরি। দেশি আখের মতো হলেও এর কাণ্ড নরম। হাত দিয়েই উঠানো যায় ছোবড়া। রসও মিষ্টি বেশি হওয়ায় এ জাতের আখ চাষে লাভও বেশি। তবে এ আখ চিনি উৎপাদনের জন্য নয় বরং চিবিয়ে খাওয়ার জন্য। ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগারকেইন। অল্প খরচে অধিক লাভের আশায় এ আখ চাষ শুরু করেছেন জয়পুরহাটের তরুণ কৃষক মহসীন আলী। জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের পাঁচগ্রাম মাঠে এ আখের চাষ করেছেন তিনি। মহসীন আলী জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে এ আখ চাষের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন তিনি। এরপর বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে ২০২২ সালে ১৮ হাজার টাকায় ফিলিপাইনের ?ব্ল্যাক সুগারকেইন জাতের ৩০০টি আখ সংগ্রহ করেন। সেই আখ থেকে সাড়ে ৪ হাজার বীজ তৈরি হয়। আখের বীজ রোপণের আগে ৫৫ শতক জমিতে ৮০ ভাঁড় জৈব সার (গোবর), ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা ইউরিয়া, পটাশিয়াম ও ফসফেট দিয়ে জমি প্রস্তুত করে সব বীজ রোপণ করেন। রোপণ করা বীজ কিছু নষ্ট হলেও প্রতিটি বীজ থেকে চার-সাতটি করে চারা জন্মায় এবং খেতে ১৫ হাজার আখ আছে। এ আখ চাষে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। ১৫ হাজার আখের মধ্যে ২ হাজার আখ ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। আরও ১৩ হাজার আখ ৮-১০ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। খয়েরি রঙের এ আখ চাষের পর অনেকেই বীজ কেনার জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের ফাঁসিতলা এলাকার রফিকুল, দুলু ও মিনারুল আখের ৬ হাজার চারা কিনেছেন। রফিকুল বলেন, ৬ হাজার চারা ২৫ হাজার টাকায় কিনেছি। শুনেছি এ আখ নরম, খেতে মিষ্টি, রসও বেশি। চিবিয়ে খাওয়ার জন্য এর চাহিদা আছে। তাই এবার প্রথম ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ করার কথা ভাবছি। এ জন্য তিনজন মিলে ২০ শতক করে ৬০ শতক জমিতে এ আখ রোপণ করব। কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, এ উপজেলায় এবারই প্রথম ফিলিপাইনের আখ চাষ হচ্ছে। তিনি এ আখ চাষ করে লাভবান হবেন। কৃষকদের মধ্যে এ আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে এবং তাকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।