নিজস্ব প্রতিবেদক,অর্থভুবন
‘অটিজম’ মূলত কিছু মানুষের মধ্যে থাকা স্নায়ুবিক বিকাশজনিত অসামঞ্জস্যের একটি নাম। সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি হাজারে দুটি শিশু অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার নিয়ে বেড়ে ওঠে। শারীরিক বা মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এমন শিশুদের বহুদিন আগে থেকেই মৌলিক শিক্ষার সঙ্গে নানানরকম প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন। বর্তমানে ৫০ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকা সেখানে কাজ করছেন ২৭৮ শিশুকে নিয়ে। অনেকেই এখনো না জানলেও, বসুন্ধরা টিস্যুর প্রতি প্যাক বিক্রি থেকে একটি অংশ বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশনের তহবিলে যাচ্ছে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে। বসুন্ধরা টিস্যু তাদের মানসম্মত হাইজিন প্রোডাক্টগুলো দিয়েই শুধু নয়, সঙ্গে ব্র্যান্ডের কমিউনিকেশন কনটেন্টসহ সব কাজকর্মেও যে কোনো রকম অশুদ্ধতার বিরুদ্ধে একবিন্দুও ছাড় না দেওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। অটিজম সম্পর্কে যেহেতু দেশের মানুষের মনে অনেক ভুল চিন্তা-ধারণা বিরাজ করে এবং না বুঝে প্রায় সবাই অটিজমগ্রস্তদের পরিবার ও সমাজের বোঝা মনে করে তাই দেশের সাধারণ সব নাগরিককে অটিজম সম্পর্কে আলোকিত ও সচেতন করার লক্ষ্যে সম্প্রতি ব্যাপক ও বহুমুখী অভিযান হাতে নিয়েছে বসুন্ধরা টিস্যু। ‘ভেঙে দিই অটিজমের অশুদ্ধ ধারণা’ থিমের আওতায় ২০২২ সালে শুরু করে ডিজিটাল মাধ্যমে ব্র্যান্ডটির বিভিন্ন কনটেন্টে পর্যায়ক্রমে এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে অটিজম সম্পর্কে যুগে যুগে চলতে থাকা নানান মিথ আর ভুল ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। এজন্য সেসব কনটেন্টের ভাবনা আর বাস্তবায়নেও বেছে নেওয়া হচ্ছে মনোযোগ আকর্ষণকারী নানান অভিনব কৌশল, যার পরিপ্রেক্ষিতে পাঠক-দর্শকের কাছ থেকেও মিলছে স্বতঃস্ফূর্ত উৎসাহ ও সাড়া।
তারপর এ বছর আরও বড় আঙ্গিকে সব গণমাধ্যমে দীর্ঘ সময় ধরে প্রচারিত হচ্ছে কেন অটিজমগ্রস্ত মানুষকে বোঝা মনে না করে তাদের বুঝতে সবারই এগিয়ে আসা প্রয়োজন সেই সচেতনতা বিষয়ে সিরিজ বিজ্ঞাপন। ক্যাম্পেইনের এই পর্বের স্লোগান ‘না বুঝলেই বোঝা’। এর আওতায় আছে বসুন্ধরা টিস্যুর নবনিযুক্ত ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত তিনটি বিজ্ঞাপনচিত্র, যেগুলো টিভির পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরমগুলোয়ও দেখানো হচ্ছে। সারা দেশের প্রিন্ট মিডিয়া, লোকাল ডিসপ্লে নেটওয়ার্কসহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, বিলবোর্ড, যানবাহন এবং রেডিওতেও প্ল্যাটফরম-উপযোগিতা নিশ্চিত করে ক্যাম্পেইনটির মূল বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বসুন্ধরা সিটিতে স্থাপন করা একটি অভিনব আউটডোর ইনস্টলেশনের মাধ্যমেও ইন্টারঅ্যাকটিভ উপায়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে এই ‘না বুঝলেই বোঝা’ আইডিয়াটির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে।
আবহমান বাংলাদেশি আঙ্গিকে একটি মিউজিক ভিডিওতেও চঞ্চল চৌধুরী বাউল হয়ে গানে গানে আরও বিস্তারিত সহজ ভাষায় আপামর মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন অটিজম এবং অটিজমগ্রস্তদের বোঝার আহ্বান। এ ভিডিওটিও রেডিও-টিভিতে এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে প্রচারিত হচ্ছে, পাশাপাশি জনসাধারণের দোরগোড়ায়ও পৌঁছে যাবে বিভিন্ন আয়োজনের অংশ হিসেবে।
এরই মধ্যে অটিজম সম্পর্কে সবকিছু যেন কার্যত সবাই জানতে পারে সেজন্য দেশের প্রথম অটিজম অ্যাওয়্যারনেস ওয়েবসাইটও চালু করেছে বসুন্ধরা টিস্যু। এখানে অটিজমসংক্রান্ত সঠিক তথ্যের পাশাপাশি এ-বিষয়ক বিভিন্ন সাপোর্ট গ্রুপ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ডায়াগনসিস এক্সপার্টদের খোঁজও আছে।
অটিজমগ্রস্ত মানুষকে দরকারি প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিষয়ে আশপাশের অন্যদের ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে তাদের জীবনযাপন কিছুটা হলেও সহজ স্বাভাবিক করে তোলার লক্ষ্যে এই নিরলস ধারাবাহিক কার্যক্রম সামনেও অব্যাহত রাখার ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী বসুন্ধরা টিস্যু।
