অর্থভুবন প্রতিবেদক
বাংলাদেশের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে এ দেশের মানুষ ও প্রকৃতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এক সৌদি নাগরিক। সম্প্রতি সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে বাংলাদেশে এসেছেন সৌদি নাগরিক আবু নাসের। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নে এসে নিজ কর্মীর স্বজনদের ভালোবাসা ও আতিথেয়তায় মুগ্ধ হচ্ছেন। আবু নাসেরের প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মঠবাড়ী ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী দুই ভাই দেলোয়ার ও মনির। তাদের ভালোবাসার টানে বাংলাদেশ ভ্রমণ করছেন ওই সৌদি নাগরিক।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আবু নাসের বড়শি দিয়ে পুকুর থেকে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন, জাল দিয়ে পুকুর থেকে মাছ ধরা দেখছেন, গ্রামীণ পরিবেশে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, স্থানীয় হাট-বাজার থেকে ঘুরে ঘুরে শাকসবজি কিনছেন। এ সময় দোভাষী হিসেবে তাকে সহযোগিতা করছেন সৌদি প্রবাসী দেলোয়ারের চাচা আবদুস সাত্তার।
এ সময় সৌদি নাগরিক আবু নাসের বলেন, আমাদের কর্মচারী দেলোয়ার ও মনির আমাদের খুবই আস্থাভাজন। তাদের আমি অনেক ভালোবাসি। দীর্ঘদিন কাজ করার সুবাদে আমরা তার সততা ও কাজের দক্ষতায় সন্তুষ্ট। তাদের ভালোবাসার টানে এখানে এসে আমার খুব ভালো লাগছে। তাদের পরিবারের লোকজন অনেক ভালো।
তিনি আরো বলেন, ‘সৌদিতে বাংলাদেশের কর্মজীবীদের কার্যকলাপ অনেক ভালো। তারা অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। তাদের আমাদের পরিবারের সদস্যদের মতোই মনে করি ও নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসি। তারাও আমাদের অনেক ভালোবাসে।’ আবু নাসের বলেন, ‘এখানে দেখছি সবাই কাজকর্ম করে, মুরগির ফার্ম আছে, ক্ষেতখামার আছে, নিজেরাই মাছ চাষ করে, কোনো তরকারির জন্য হোটেলে যাওয়া লাগে না। আর আমাদের এসবের জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। এ বিষয়গুলো আমার খুব ভালো লাগছে, উপভোগ করছি।’
দেলোয়ারের বাবা মিন্টু মিয়া বলেন, ‘আমার দুই ছেলে সৌদি আরবে থাকেন। তাদের প্রতিষ্ঠানের মালিক সৌদি নাগরিক আবু নাসের আমাদের মতো এমন অজপাড়াগাঁয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসবেন তা আমার কল্পনাতেও ছিল না। আমার অনেক ভালো লাগছে, গর্ববোধ করছি। আমার ছেলেদের সততা, আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় তার মতো একজন মানুষ আজ আমাদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। বাবা হিসেবে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি ও খুশির বিষয় আর কী হতে পারে।’
‘তিনি আট দিন আমাদের এখানে থাকবেন। আমরা চেষ্টা করছি তিনি যেন বাংলাদেশ ও এ দেশের মানুষ সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা নিয়ে যেতে পারেন। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক যেনো আরো সুদৃঢ় হয়।’
সৌদি প্রবাসী দেলোয়ার বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে আমাদের একসঙ্গে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে তিনি একাই গত ৬ সেপ্টেম্বর আমাদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। আমার পরিবারের লোকজন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে বরণ করে নিয়ে গেছেন। আশা করি আমাদের গ্রাম ও গ্রামীণ পরিবেশ দেখে তার ভালো লাগবে। এতে আমাদের মালিক-শ্রমিকের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। ভ্রমণ শেষে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর তার নিজ দেশ সৌদি আরবে ফেরার কথা রয়েছে।