ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, মসজিদ কমিটির পদকে নেতৃত্ব মনে করা চরম বোকামি; বরং কমিটির কোথাও জায়গা হলে এটাকে নিছক খেদমত মনে করা দরকার। এ খেদমত আল্লাহর ঘরের খেদমত, মুসল্লিদের খেদমত। তাই দুনিয়ার কোনো চাওয়া-পাওয়া ছাড়া মুক্তমনে শুধু আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের ইচ্ছায় ইবাদত মনে করে খেদমতের মানসিকতা নিয়ে কমিটিতে অংশ নিতে হয়। সামাজিক পদমর্যাদা বৃদ্ধির অভিলাষে কমিটিতে যোগ দেওয়া হারাম।
অথচ দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকায় একটি চক্রের লোভাতুর দৃষ্টি দেখা যাচ্ছে মসজিদ কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারি হওয়ার দিকে। এমন অনেকেই আছে জুমার নামাজটাও ঠিকমতো আদায় করে না, ওয়াক্তিয়া নামাজ তো দূরের কথা! তা ছাড়া সব ধরনের অনৈতিক ও ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। অথচ স্থানীয় ক্ষমতাবলে সে মসজিদ কমিটির সভাপতি অথবা সেক্রেটারি!
আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন আমানত নষ্ট করা হবে তখন থেকে কিয়ামতের অপেক্ষা করতে থাকবে। জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), কিভাবে আমানত নষ্ট করা হবে? তিনি বলেন, যখন অযোগ্যকে দায়িত্ব দেওয়া হবে তখন থেকে কিয়ামতের অপেক্ষা করতে থাকো।
অন্যদিকে কোরআনের মর্ম অনুযায়ী যাদের নিকট নিম্নোক্ত চারটি বৈশিষ্ট্য আছে শুধু তারাই মসজিদ আবাদ (রক্ষণাবেক্ষণ বা পরিচালনা) করতে পারবে।
১. যারা আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর দৃঢ় বিশ্বাসী;
২. যারা সালাত কায়েম করে;
৩. যারা জাকাত প্রদান করে; এবং
৪. যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না।
এই চারটি বৈশিষ্ট্য যাদের কাছে বিদ্যমান শুধু তারাই পারবে মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করতে।
দলিল : ‘নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর ঘর মসজিদ আবাদ (রক্ষণাবেক্ষণ বা পরিচালনা) করবে, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামাজ ও আদায় করে জাকাত; আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
তাই মসজিদ পরিচালনা কমিটিরও এ বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। তাহলেই মসজিদের উন্নয়ন আশা করা যায়। খতিব সাহেবদের উচিত কমিটিকে ভয় না করে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে সততার সঙ্গে দ্বিনি দায়িত্ব পালন করা।
লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক