অর্থবুবন ডেস্ক
দলীয়করণ বন্ধ করে প্রশাসনে সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, উল্লেখ করে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এএসএম আব্দুল হালিম বলেছেন, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। কিন্তু রাষ্ট্রের মালিকানা এখন জনগণের হাতে নেই।
সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সুবিধা দিয়ে নিজেদের লোক বসিয়ে রেখেছে। নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানও সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
শনিবার ‘সর্বব্যাপী দলীয়করণ ও সাজানো প্রশাসন- অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অন্তরায়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন এএসএম আব্দুল হালিম।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এ সেমিনারের আয়োজন করে পলিসি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ সোসাইটি (পিএমআরএস)। পিএমআরএসের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব মো. ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এএসএম আব্দুল হালিম বলেন, বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় গণতন্ত্র ও বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক জনগণের ভোটাধিকার হরণ। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। কিন্তু রাষ্ট্রের মালিকানা এখন জনগণের হাতে নেই। বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসীন হয়েই নানাবিধ চালাকি ও হীন কৌশলের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে সর্বব্যাপী দলীয়করণের মাধ্যমে নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। অথচ নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ।
মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, প্রশাসনকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে করে ২০১৪ ও ২০১৮-এর মতো আরেকটি নির্বাচন তারা (সরকার) করার সুযোগ পায়। এখন সবার দাবি, এমন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বসাতে হবে, যাতে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি আরও বলেন, দেড় দশক ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না গণতন্ত্রহীনতায়। এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে এসব সমস্যা আরও বাড়তে পারে। এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা স্পষ্ট। কিন্তু পরিকল্পিত সাজানো-গোছানো প্রশাসন রেখে যাকেই নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হোক, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ দলীয়করণ প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। এর বিহিত না করে নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা একটি সুষ্ঠু, সুন্দর সিস্টেম চাই। আমরা চাই গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতার পরিবর্তন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। সেই দেশের আমলাতন্ত্র পাকিস্তানের মতো হবে কেন? এখান থেকে বের হতে হবে। সেমিনারে আলোচক হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক ডিআইজি খান সাইদ হাসান, শিক্ষক, কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, সাবেক সচিব আব্দুর রশিদ সরকার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ইফতেখার আহমেদ ও সাবেক যুগ্ম সচিব বিজন কান্তি সরকার।