অর্থভুবন ডেস্ক
নম্রতা ও কোমলতা মহান আল্লাহর প্রিয় হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। এই গুণের মাধ্যমে বিশ্ব জয় করা যায়। আমাদের নবীজি (সা.) এই মহৎ গুণ দিয়ে গোটা বিশ্ব জয় করেছিলেন। বর্বর ও হিংস্র মানুষদের মন জয় করে, তাদের সোনার মানুষে পরিণত করেছিলেন।
এখানে মহান আল্লাহ মহানবী (সা.)-এর নম্রতার প্রশংসা করেছেন, আর এটি যে মানুষকে জয় করার একটি চাবিকাঠি, সেদিকেও ইঙ্গিত করেছেন। নবী (সা.) এতটাই নম্র ছিলেন যে এক বেদুইন একবার মসজিদে পেশাব করে দিলেও তিনি তাকে কোনো শাস্তি দেননি।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একবার একজন বেদুঈন দাঁড়িয়ে মসজিদে পেশাব করল। তখন লোকেরা তাকে বাধা দিতে গেলে নবী (সা.) তাদের বলেন, তোমরা তাকে ছেড়ে দাও এবং ওর পেশাবের ওপর এক বালতি পানি ঢেলে দাও।
অর্থাৎ নম্র ও সুন্দর আচরণ করাই মুমিনের ভূষণ। রূঢ় আচরণ মুমিনের চরিত্রের সাথে যায় না। নম্র লোকদের আমাদের নবীজি (সা.) ভীষণ ভালো বাসতেন, তাই তো নম্রতার কারণে তিনি ইয়েমেনবাসীর ঈমানের প্রশংসা করেছেন । আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ইয়েমেনবাসী তোমাদের কাছে এসেছে।
কারো সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করলেই সম্মান বেড়ে যায় না। অন্যকে সম্মান করলে, নম্র আচরণ করলে মর্যাদা কমে যায় না; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কেউ মানুষের সঙ্গে নম্র আচরণ করলে মহান আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবু হুরায়রা? (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সদকা? করাতে সম্পদের হ্রাস হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা সমুন্নত করে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮৬)
এর বিপরীতে অহংকার, রূঢ় স্বভাব মানুষের ব্যক্তিত্ব খাটো করে দেয়, মানুষকে ইহকালে অন্যদের চোখে নিন্দিত করে তোলে, আর পরকালে তাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত করে দেয়।
হারিস ইবনে ওয়াহাব খুজাঈ (রা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমাদের জান্নাতি লোকদের পরিচয় বলব না? তারা দুর্বল ও অসহায়; কিন্তু তাঁরা যদি কোনো ব্যাপারে আল্লাহর নামে কসম করে বসেন, তাহলে তা পূরণ করে দেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামি লোকদের পরিচয় বলব না? তারা রূঢ় স্বভাব, অধিক মোটা ও অহংকারী তারাই জাহান্নামি।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯১৮)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে নম্র হওয়ার তাওফিক দান করুন।