অর্থভুবন ডেস্ক
শেষ মার্কিন সেনাদলের ভিয়েতনাম ত্যাগের ৫০ বছরের কিছু বেশি সময় পরে দেশটির সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি সই করল যুক্তরাষ্ট্র। রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সফর উপলক্ষে হয়েছে এই চুক্তি। এর মধ্য দিয়ে আদর্শিক মিল থাকা চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির জটিল কূটনীতিতে ঢুকে পড়লেন হ্যানয়ের কমিউনিস্ট শাসকরা।
জো বাইডেনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম প্রথমবারের মতো কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ তথা ‘বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারত্ব (সিএসপি)’ চুক্তি সই করেছে।
দুই বছর ধরে ওয়াশিংটন এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব রুখতে ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে মনোযোগী হয়।
ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের সম্পর্ক দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এতে চীনের ওপর মার্কিন নির্ভরতা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। বিশেষত ভিয়েতনামের তরুণ জনবল যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের ক্ষেত্র। ডেল, গুগল, মাইক্রোসফট ও অ্যাপলের মতো বড় মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিপণ্যের যন্ত্রাংশ সরবরাহ চালু রাখতে চীনকে বাদ দিয়ে ভিয়েতনাম কয়েক বছর ধরেই ওয়াশিংটনের মনোযোগের কেন্দ্রে। এয়ারলাইনস খাতেও বড় চুক্তি হয়েছে বাইডেনের সফরে।
ভিয়েতনামকে স্পষ্টতই দুই পরাশক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তাদের আচরণে সেই ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে। বাইডেনের সফরের আগেই ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এনগুয়েন ফু ট্রং বেইজিংয়ের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রশংসা করেন। তবে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের আগ্রাসী দাবি নিয়ে অন্য প্রতিবেশীদের মতো ভিয়েতনামেরও অসন্তোষ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এশিয়া-প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের অধ্যাপক আলেক্সান্ডার ভুইভিং বলেন, কোনো তৃতীয় দেশই প্রতিদ্বন্দ্বী দুই শক্তির মধ্যে কারো পক্ষ নিতে চায় না। তবে এই অঞ্চলে (এশিয়া) অনেক দেশের নিরাপত্তা ও উন্নতির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
১৯৫৫ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিশ শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম স্বাভাবিক সম্পর্ক শুরু করে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে। সেই যুদ্ধে ৩৮ লাখ ভিয়েতনামি এবং ৫৮ হাজার মার্কিন সেনা প্রাণ হারায়। সূত্র : এএফপি, দ্য ডিপ্লোম্যাট