অর্থভুবন প্রতিবেদক
কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য অনুসারে জান্নাতের দরজা আটটি। অন্যদিকে রাসুলুল্লাহ (সা.) আটটি আমলকে জান্নাতের দরজা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নিম্নে তার আমলগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
জান্নাতের দরজা আটটি
জান্নাতের দরজা আটটি।
জান্নাতের দরজাতুল্য হওয়ার অর্থ
আল্লাহ তাআলা মুমিনের আমল অনুসারে তাকে জান্নাত দান করবেন। আবার বিশেষ বিশেষ আমলের জন্য আল্লাহ বিশেষ বিশেষ জান্নাত দান করবেন।
বিশেষ দরজাগুলো যেখানে থাকবেবিশেষ আমলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশেষ দরজাগুলো জান্নাতের অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত।
জান্নাতের দরজাতুল্য আমল
হাদিসে আটটি আমলকে জান্নাতের দরজা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তা হলো, মা-বাবার আনুগত্য, আল্লাহর জিকির ও তাওবা।
২. নামাজ : ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল নামাজ। জান্নাতে নামাজ নামে একটি দরজা থাকবে। যে ব্যক্তি যথাযথভাবে নামাজ পড়বে তাকে সে দরজা দিয়ে প্রবেশের আহ্বান করা হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘(জান্নাতের একাধিক দরজা রয়েছে) যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করবে তাকে নামাজের দরজা দিয়ে প্রবেশের জন্য আহ্বান করা হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬৬৬)
৩. আল্লাহর পথে সংগ্রাম : আল্লাহর পথে সংগ্রাম ইসলামী রাষ্ট্র ও মুসলিম জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এই সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব ইসলামী রাষ্ট্রের। জান্নাতের একটি দরজার নাম হবে ‘বাবুল জিহাদ’। যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করবে তাদের এই দরজা দিয়ে আহ্বান জানানো হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করবে তাদের বাবুল জিহাদ দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের আহ্বান জানানো হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬৬৬)
৪. রোজা : সিয়াম বা রোজা ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ এবং আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয় আমল। আল্লাহ রোজা পালনকারীকে জান্নাতের বিশেষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করাবেন। সে দরজার নাম হবে রাইয়ান। মহানবী (সা.) বলেন, যারা রোজা পালন করবে তাদের রাইয়ান দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের আহ্বান জানানো হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬৬৬)
৫. সদকা : দান-সদকার মাধ্যমে অসহায় মানুষের বিপদ দূর হয়। এ জন্য আল্লাহ দানকারীর বিপদ দূর করে দেন। জান্নাতে ‘সদকা’ নামে একটি বিশেষ দরজা থাকবে। নিয়মিত দান-সদকাকারীরা সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। রাসুলুল্লাহ বলেন, ‘দানকারীদের সদকা নামক দরজা দিয়ে প্রবেশের আহ্বান জানানো হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬৬৬)
৬. মা-বাবার আনুগত্য : মা-বাবা সন্তানের জন্য জান্নাত লাভের মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বাবাকে জান্নাতের মধ্যবর্তী তথা সর্বোত্তম দরজা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘জান্নাতের সর্বোত্তম দরজা হচ্ছে বাবা। তুমি ইচ্ছা করলে এটা ভেঙে ফেলতে পারো অথবা এর রক্ষণাবেক্ষণও করতে পারো।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯০০)
৭. জিকির : আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। কায়েস বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নামাজ পড়ছিলাম এমন অবস্থায় নবী (সা.) আমার কাছ দিয়ে গমন করলেন। তিনি নিজের পা দিয়ে আমাকে আঘাত (ইশারা) করে বললেন, আমি তোমাকে কি জান্নাতের দরজাগুলোর একটি দরজা সম্পর্কে জানাব না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোনো শক্তি কারো নেই)। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৮১)
৮. তাওবা : তাওবা বা অনুপাতের সঙ্গে গুনাহ ত্যাগ বান্দার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের দরজা আটটি। সাতটি বন্ধ আছে। একটি দরজা তাওবাকারীর জন্য খোলা রয়েছে যত দিন সূর্য পূর্বদিক থেকে উদিত হবে।’ (মুস্তাদরিকে হাকিম, হাদিস : ৭৭৪৫)