অর্থভুবন ডেস্ক
জাতীয়ভাবে ‘ক্যান্সার রোগী রেজিষ্ট্রেশনের’ মাধ্যমে রোগীর পরিসংখ্যান জানা ছাড়াও ক্যান্সারের ধরণ সম্পর্কে তথ্য জরুরি। একই সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে আক্রান্তদের মৃত্যু হার কমানো সম্ভব বলে মনে করেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা।
তাই দেশে ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, চিকিৎসকদের দক্ষতা বাড়ানো ও গবেষণা কাজে সহায়তার উপর দিতে হবে। এছাড়াও ক্যান্সার চিকিৎসায় খরচ কমানোর ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্ট ঢাকা সামিটে’ বক্তারা এসব পরামর্শ দেন। দিনব্যাপী এ আয়োজনে অংশ নেন দেশের বিখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, ক্যান্সার গবেষক এবং ক্যান্সার সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা।
এছাড়া অংশনেন সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও। গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্ট প্রতিনিধিদের কাছে বাংলাদেশের ক্যান্সারের বর্তমান পরিস্থিতি ও সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন দেশের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে সারাবিশ্বে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ঘোষণা করে ক্যান্সার মুনসট ২.০। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রয়োজন উন্নত রাষ্ট্রগুলোর সাথে কম উন্নত দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগীতা। এজন্য বিশ্বব্যাপী গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্ট সামিট আয়োজন করছে মার্কিন এ সংস্থাটি। এর ধারাবাহিকতায় এবারের আয়োজন বাংলাদেশে।
গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্ট সামিট ঢাকার আয়োজক ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন বলেন, সংস্থাটি বাংলাদেশে এসেছে বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় বাংলাদেশে যেসব সমস্যা আছে সেসব নির্ণয় করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমরা তাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, আমাদের দেশে ক্যান্সারের কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই, মেডিকেল গবেষণার পরিসর কম এবং পারস্পরিক সহযোগিতা আরো কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় এসব।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন বলেন, এ ধরণের সামিটে অংশ নিয়ে আমাদের দেশের তরুণ চিকিৎসকরা তাদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক তৈরি করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও গবেষণার পরিসর বাড়াতে পারবেন। এছাড়া আমরা স্বল্প খরচে কেমো থেরাপি দিতে পারবো, কম খরচে রেডিয়েশন থেরাপি দিতে পারবো, কম টাকায় মেশিন দিতে পারবো, যেভাবে আমাদের মেশিন গুলোকে সচল রাখতে পারবো এধরণের সামিটে এই আলোচনা গুলোই হওয়া দরকার।
গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্টের ডিরেক্টর ডা. উইল ফ্রেড নাগওয়া বলেন, শুধু বাস্তবায়নের জন্য আমাদের কোনো নতুন চিকিৎসা বা উদ্ভাবনের প্রয়োজন নেই। আমাদের শুধু এই মুহূর্তে যে জিনিসগুলো প্রয়োজনীয় সেগুলোর উদ্দ্যোগ নিতে হবে, মূলত এর তিনটি কার্যকরী প্রক্রিয়া রয়েছে। এক- টিকা, দুই- রোগ শনাক্ত করা এবং তিন- চিকিৎসা করা। যেসব চিকিতসাব্যবস্থা এরইমধ্যে ব্যবহারযোগ্য রয়েছে, তা সাধারণ মানুষের আয়ত্তে নিয়ে আসা। বাংলাদেশের অনকোলজি ক্লাবের সাথে সমন্বয় রেখে কিভাবে এদেশের নারীদের স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু ক্যান্সার কিভাবে পুরোপুরি নির্মূল করা যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করা।
গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্ট সামিট ঢাকার অন্যতম আয়োজক এবং যুক্তরাষ্ট্রের পিটার্সবার্গ ইউপিএমসি হিলম্যান ক্যান্সার সেন্টার ডিরেক্টর ও অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল হক বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র বা পুরো বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য কমাতে চাই। এটাই আমাদের উদ্দ্যেশ্য। আর আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সমন্বয়ের মাধ্যমে ক্যান্সার নির্মূল করা। তাই সমন্বয় অত্যন্ত জরুরী।