অর্থভুবন ডেস্ক
শুধু মেধার জোরে দুই বছর বয়সেই শিখে ফেলেছে একাধিক ভাষা, স্টেজে টানা গান গেয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কেউবা সাত বছর বয়সেই সফলভাবে রোগীর দেহে অস্ত্রোপচার করেছে। কেউবা আবার কৈশোরেই হয়ে গেছে বিলিয়নিয়ার। এককথায় শৈশবেই হইচই ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বে। হার মানিয়েছে বয়সকেও। মেধা ও মনন দিয়ে বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দিয়েছে- এমন কয়েকজন খুদে মাস্টারের গল্প
বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের সর্বোচ্চ আইকিউ স্কোর ২১০ তারই দখলে
কিম উন ইয়ঙ। বিশ্বের যে কয়জন খুদে বালক মেধা ও মনন দিয়ে বিশ্ব দরবারে হইচই ফেলে দিয়েছিল তাদের মধ্যে সে অন্যতম। ১৯৬২ সালের ৮ মার্চ কোরিয়ায় জন্ম নেওয়া এই বালক পৃথিবীর বিস্ময় বালকদের একজন। ১ মাসেরও কম সময়ে যে কোনো ভাষা শিখে ফেলার বৈচিত্র্যময় মেধা তাকে সবার চেয়ে আলাদা করে দিয়েছিল। মোটকথা ভাষার ওপর ভেসেই আলোকিত হয়েছে তার গোটা জীবন। বিকশিত হয়েছে তার মেধা ও মনন। কিম মাত্র দুই বছর বয়সে কোরিয়ান ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি, জার্মান, জাপানি ভাষায় পারদর্শী হয়ে ওঠে। যেনতেন পারদর্শী নয়, যাকে বলে পরিপক্ব। মুহূর্তের মধ্যেই এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় কথা বলতে পারত। যে কোনো ভাষা অস্বাভাবিক কম সময়ে শিখে ফেলার এই অভূতপূর্ব মেধার পুরস্কারস্বরূপ ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে যায় সে। পড়াশোনায় তার মেধার স্পষ্ট ছাপ পাওয়া যায়। ইন্টেগ্রাল ক্যালকুলাসগুলোর সমাধান দিয়ে ইউনিভার্সিটির বাঘা বাঘা প্রফেসরদেরও তাক লাগিয়ে দেয় এই বালক। এমনকি কিছু কিছু ভাষা এক মাস নয়, এক সপ্তাহেই শিখে ফেলে। এরই প্রতিদানস্বরূপ এই মেধাবী বালক সবচেয়ে কম বয়সে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পৃথিবীর সেরা গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান নাসায় ডাক পায়। তখন তার বয়স ছিল সবেমাত্র আট। অন্যদিকে ভাষার পাশাপাশি বুদ্ধিমত্তায়ও তার দক্ষতা ছিল প্রবল। মুহূর্তের মধ্যেই যে কোনো ধাঁধা বা পাজল সমাধান করে ফেলত। অনেকেই হয়তো জানেন না, বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের সর্বোচ্চ আইকিউ স্কোর ২১০ তারই দখলে।
জর্জ স্মিথের মেধার চমক দেখা যায় মাত্র দুই বছর বয়সে
‘শিশুদের জন্য শান্তিপূর্ণ একটি পৃথিবী’ স্বপ্নের স্লোগান নিয়ে এগিয়ে চলছে জর্জ স্মিথ। মূলত ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ অ্যাডভোকেট প্রতিষ্ঠানের কারণেই বিশ্ববাসী আজ তাকে চেনে। জর্জ স্মিথের মেধার চমক দেখা যায় মাত্র দুই বছর বয়সে। অপেক্ষাকৃত জটিল গণিতের সমস্যা সমাধান করে দিতে পারত ১৪ মাস বয়সেই। এই অস্বাভাবিক মেধাবী বালক পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা পায় শিশুদের নিয়ে নানামুখী কাজ করে। শিশু অধিকার রক্ষা, শিশুদের জন্য সুশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশ-বিদেশ ছুটে যায় এই বালকটি। তার ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ অ্যাডভোকেট প্রতিষ্ঠার পর শিশুদের নিয়ে কাজ করার এই পরিসর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়। খুব অল্প বয়সেই সুনাম কুড়াতে থাকে সে। শিশুদের নিয়ে কাজ করতে থাকা বালক বয়সেই বিখ্যাত ব্যক্তিদের প্রিয়ভাজন হয়ে ওঠে। ছড়িয়ে পড়ে তার মেধা ও মননের গুণগান।
সাত বছর বয়সী এই সার্জন মানবদেহে অস্ত্রোপচারে যে সফলতা দেখিয়েছে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে যুগে যুগে অনেক বিস্ময়কর চিকিৎসক এসেছেন। তাদের মেধা দিয়ে স্থান করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। কিন্তু আতিক জাসওয়াল সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। সাত বছর বয়সী এই সার্জন মানবদেহে অস্ত্রোপচারে যে সফলতা দেখিয়েছে তা সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায়। ১০ মাস বয়সেই কথা বলতে শিখে ফেলার পর থেকেই বাবা-মা ও স্বজনদের ধারণা ছিল সে অন্য আর ১০ জন বালকের মতো হতে যাচ্ছে না। হলোও তাই। চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সহজাত প্রবৃত্তি থেকেই নিজে বিজ্ঞান আর অ্যানাটমি পড়তে শুরু করে। তবে খুব সামান্যই পড়েছে বরং স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে সার্জনদের সঙ্গে থেকে অপারেশন দেখার সুযোগ কাজে লাগাতে থাকে। অপারেশন দেখার আগ্রহ দেখে ডাক্তাররাও তাকে বাধা দিতেন না। সাত বছর বয়সেই সফল অস্ত্রোপচার করে বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দেয় সে। অল্প বয়সেই সার্জন হওয়ার পেছনে যে ছোট গল্পটি আছে সেটাও মনকাড়া। দরিদ্র এক প্রতিবেশী তার মেয়েকে নিয়ে এসেছিল ছোট্ট একটা অপারেশন করে দেওয়ার জন্য। তখনো হাতেকলমে অপারেশন করা শুরু করেনি আতিক। শত অনুরোধের পর একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে আতিক অপারেশন করতে সায় দেয়। রোগীর মা মূলত অর্থাভাবে তাকে দিয়ে তার মেয়ের অপারেশনটি করাতে চাইলেও আতিকের বাবা-মা শুরুর দিকে তাকে বারণ করেন। কিন্তু আতিকের প্রতি অগাধ বিশ্বাস থেকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় এবং এই খুদে সার্জন সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় সফলভাবে অপারেশনের মাধ্যমে।
সময়ের সেরা শিশু পেইন্টার হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়
সমসাময়িক আলোচনায় যত বিস্ময় বালিকা রয়েছে তাদের একজন ইলিটা। সব সময়ের সেরা শিশু পেইন্টার হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। তার পেইন্টিংগুলোর বিষয়বস্তু মূলত অ্যাবস্ট্রাক্ট সাবজেক্ট। হাঁটার আগেই পেইন্টিং শিখে ফেলেছিল ইলিটা। রং, তুলি নিয়ে কাগজে আঁচড় কাটতে দেখে তার বাবা আর্ট পেপার নিয়ে আসেন। শৈল্পিক ভাবনামিশ্রিত পেইন্টিংগুলো দেখে তিনি অল্প কয়েক দিনেই বুঝতে পারেন আসলে আর্ট ও পেইন্টিং নিয়ে ইলিটার আঁকিবুঁকি মোটেই উদ্দেশ্যহীন, নামমাত্র কিছু নয়। তাই পেইন্টিংগুলো একত্রে জড়ো করতে থাকেন। প্রথমে প্রদর্শনীর ইচ্ছা ছিল না। মাত্র দুই বছর বয়সেই অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্টের একটি পুরো গ্যালারিই ছিল তার। ২০১১ সালে আমেরিকার নিউইয়র্কে তার প্রথম একক পেইন্টিং প্রদর্শনী হয়; তখন তার বয়স ছিল চার বছর। তার অভাবনীয় পেইন্টিং-জ্ঞান বোদ্ধাদেরও অবাক করে দেয়। পেইন্টিংগুলোতে রং ও বিষয়বস্তুর সম্মিলন সত্যিই বিস্ময়করভাবে এক কথায় অসাধারণ ছিল। প্রদর্শনীতে দর্শকরা যথেষ্ট মুগ্ধ হয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অবাক হয়ে দেখেন দুই বছর বয়সী শিল্পীকে। তার পেইন্টিংগুলো নিলামে তোলা হলে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। নিউইয়র্কের সেই একক প্রদর্শনীতে আনা মোট ২৪টি পেইন্টিং বিক্রি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে স্পষ্ট করে কেউই মুখ খোলেননি। তার একেকটি পেইন্টিং সাড়ে ৪ হাজার ডলার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। উদ্দেশ্যহীন ও আঁকিবুঁকি পেইন্টিংগুলোর জন্যই বিশ্ববাসী আজ তাকে জানতে পেরেছে, পেরেছে চিনতে।
তিন বছর বয়সে স্টেজে একটানা দুই ঘণ্টা গান গাওয়ার রেকর্ড
তার শুরুটা হয়েছিল খুব স্বাভাবিকভাবেই। বাবার মিউজিক স্টুডিওতে খেলার ছলেই মাইক্রোফোন হাতে গান গাইত সে। নিজের শিশুসন্তানের এই খেলাকে প্রথমে তেমন গুরুত্বও দিতেন না তার বাবা
শিল্পী ক্লিউপেট্রা স্টারানের নামের সঙ্গে যারা পরিচিত তাদের অনেকেই হয়তো আঁচ করতে পারেন না তার বয়স ঠিক কত কম। ২০০৬ সালে নিজের একক একটি অ্যালবাম বের হওয়ার পর ক্লিউপেট্রা নিয়ে মাতামাতি শুরু হলে বিশ্ববাসী তাকে প্রথম জানতে পারেন। গান নিয়ে এগিয়ে আসার পেছনে তার বাবা-মার সরাসরি হাত ছিল না। যখন তিন বছর বয়সে স্টেজে একটানা দুই ঘণ্টা গান গাওয়ার রেকর্ড গড়ে তখন উপস্থিত দর্শক বিশ্বাসই করতে পারছিল না। অনেকটা হতবাক হয়ে যান সবাই। মন্ত্রমুগ্ধের মতো ঘণ্টা দুই পার হওয়ার পর যখন সে থামে তখন করতালির স্রোতে চাউর হয় চারদিক। অনেকের প্রিয় শিল্পীর তালিকায় চলে আসে সে। তখনো তার কোনো একক অ্যালবাম বের হয়নি। অ্যালবাম বের হওয়ার আগেই তুমুল আলোচিত হয়ে যায় সে। তার আসন্ন অ্যালবামের খোঁজে মিডিয়া তোড়জোড় শুরু করে। তার প্রথম একক অ্যালবামটি এখন পর্যন্ত কোনো শিশুশিল্পীর সবচেয়ে ব্যবসাসফল অ্যালবাম হিসেবে ধরা হয়। তার শুরুটা হয়েছিল খুব স্বাভাবিকভাবেই। বাবার মিউজিক স্টুডিওতে খেলার ছলেই মাইক্রোফোন হাতে গান গাইত সে। নিজের শিশুসন্তানের এই খেলাকে প্রথমে তেমন গুরুত্বও দিতেন না তার বাবা। তবে মেধার চমক ঠিকই চোখে ধরা পড়ে একসময়। ধীরে ধীরে সেলিব্রেটি হয়ে ওঠা এই শিশুটি এখন পর্যন্ত লাইভ স্টেজ শো করা দামি শিশুশিল্পীদের একজন।
হঠাৎ বিলিয়নিয়ার হওয়া একজন কিশোরের বাস্তব গল্প সে নিজেই
মাইকেল কেভিন কার্নি। হঠাৎ বিলিয়নিয়ার হওয়া একজন কিশোরের বাস্তব গল্প যেন সে নিজেই। টিভি শোতে যখন একের পর এক সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিচ্ছিল সবাই হতবাক হয়ে শুধু তাকিয়ে ছিল- কী করে এই কিশোর মাথা খুঁটিয়ে উত্তরগুলো বের করে আনছে। কার্নি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যাজুয়েট। ২০০৮ সালে টেলিভিশন গেম শো ‘হু ওয়ান্টস টু বি মিলিয়নিয়ার’ জিতে নিয়ে সবার আলোচনায় আসে এই বিস্ময় বালক। টিভি গেম শো থেকে ১০ লাখ ডলার জেতার পর তার মেধার প্রশংসা সারা দুনিয়াতেই চলতে থাকে। হঠাৎ বিলিয়নিয়ার হওয়া এই বালক ছয় বছর বয়সে স্কুল আর ১০ বছর বয়সে কলেজের পড়াশোনা শেষ করে। শিক্ষকতা পেশায় আসে ১৭ বছর বয়সে। তার উপস্থিত বুদ্ধি ও আইকিউ ভীষণ সমৃদ্ধ বলে সবাই মেনে নিয়েছেন। টিভি গেম শোতে তার পর্বটি ‘হু ওয়ান্টস টু বি মিলিয়নিয়ার’ শোর অন্যতম সেরা পর্ব হিসেবে ভোট দিয়েছে লাখো-কোটি দর্শক।
খুদে দাবাড়ুর নাম উচ্চারণ করলে উঠে আসে ফ্যাবিয়ানো
দাবা খেলাটিই বুদ্ধি আর কৌশলের প্রয়োগ। এ দাবা খেলাতে যে খুদে দাবাড়ু সবাইকে চমকে দিয়েছে তার নাম ফ্যাবিয়ানো লুইজি ক্যারুয়ানা। পৃথিবীর সবচেয়ে খুদে দাবাড়ুর নাম উচ্চারণ করলে যে নামটি সবার আগে উঠে আসে তা হলো ফ্যাবিয়ানো। শুধু ঘরোয়া খেলায় নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সে সুনাম কুড়িয়েছে সারা বিশ্বে। নিত্য নতুন চাল আবিষ্কার করে ঘায়েল করেছে প্রতিপক্ষকে। ১৪ বছর বয়সেই দাবায় গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পেয়েছে সে। ইতালি আর আমেরিকার দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে খানিকটা টানাপোড়েন বয়ে নিয়ে এই শিশু ২০১২ দাবাড়ু ফিদে লিস্টে সপ্তম স্থানে ছিল। আর ওয়ার্ল্ড জুনিয়র দাবাড়ু হিসেবে প্রথম স্থানে ছিল।
‘মিস্টার পকেট বিলিয়ার্ডস’ নামে মোসকনিকে বেশির ভাগ মানুষই চেনেন
১৯১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া উইলি মোসকনি পুল খেলায় অপ্রতিরোধ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। ‘মিস্টার পকেট বিলিয়ার্ডস’ নামে মোসকনিকে বেশির ভাগ মানুষই চেনেন। এ পর্যন্ত ১৫ বার ওয়ার্ল্ড স্টেইট পুল চ্যাম্পিয়ানশিপ জিতে নিয়েছে সে। বাবা পুল খেলতে বারে যেতে না দেওয়ায় ঘরেই গোল আলু আর ঘর ঝাড়ুর লাঠি দিয়ে বিলিয়ার্ড খেলা শুরু করেছিল সে। পুল খেলায় বাচ্চার এই আগ্রহ যে এতদূর গড়াবে সেটা কে ভাবতে পেরেছিল? অবশ্য সময় গড়িয়ে যেতেই পুল খেলায় তার নৈপুণ্য দেখিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। প্রতিদ্বন্দ্বীকে খেলায় কুপোকাত করে দিতে বাজি ধরত বন্ধুদের সঙ্গে। সেই বিলিয়ার্ড খেলাই এখন তাকে নিয়ে গেছে বিস্ময় বালকদের কাতারে। শৈশবের দিনগুলোতে খেলার নেশা ছিল প্রচ-। বিলিয়ার্ড খেলার জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে চলে যেত বন্ধুদের সঙ্গে। বাজি ধরতে গিয়ে বিলিয়ার্ড খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে কৌশলগত দক্ষতা কাজে লাগাতে থাকে। নতুন নতুন ‘ট্রিকস’ আবিষ্কার করতে থাকে। বিকশিত করতে থাকে নিজের কৌশলকে। একেক দিন একেক রকম ‘পকেটশট’ অনুশীলন করতে গিয়ে টের পেয়ে যায় খেলায় জেতার রহস্য কী। তার টানা জয়ের পেছনে মানসিক শক্তির চেয়ে দক্ষতা বেশি- এমন কথা অনেকে বলে বেড়ালেও সে নিজে তা বিশ্বাস করে না। জেতার পেছনে তার নিবিড় অনুশীলনই মূলকথা। শৈশবে বাবার অনুমতি না মেলায় ঘরে আলু দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলার সেই দিনগুলোর কথাই বলেছে। সবচেয়ে বড় কথা, মোসকনি কখনোই প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানো বা জয়ের জন্য নয় বরং বাজি জেতার জন্য খেলা শুরু করত।
যে কোনো কঠিন জিনিস ও যুক্তির মাধ্যমে সমাধান খুঁজত সে
ক্রিপকের জন্ম ১৯৪০ সালের ১৩ নভেম্বর। ক্রিপকে গণিত, যুক্তিবিজ্ঞান, ভাষা ও অধিবিদ্যায় পারদর্শী। দার্শনিক হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে গেছে সারা দুনিয়ায়। সবচেয়ে বড় কথা, যে কোনো কঠিন জিনিস ও যুক্তির মাধ্যমে সমাধান খুঁজত সে। শুধু নিজে নয় অন্যকেও এই সমাধানে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা ছিল তার। একজন লজিশিয়ান হিসেবে হাইস্কুলে পড়াকালীনই ওই হাইস্কুলে শিক্ষকতা করার প্রস্তাব পেয়ে যান। কিন্তু মায়ের অমত থাকায় নিজের স্কুলে ছাত্রাবস্থায় শিক্ষকতার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল সে। শৈশবেই তার মেধার অস্বাভাবিক বহির্প্রকাশ থেকে তার সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা তাকে সমীহ করে চলত। স্কুল আর ইউনিভার্সিটিতে পড়া শেষ করে সে নিজের মেধা খাটায় তার প্রিয় বিষয়গুলোতে। পৃথিবীর সেরা দার্শনিকদের তালিকায় তিনি যেমন আছেন, তেমনি সমসাময়িক বিশ্বে যুক্তিবিজ্ঞান আর বিশেষায়িত প্রকরণ লজিকগুলো তার সেরা কাজ বলে সর্বজনবিদিত। তাই তো আজও তার যুক্তির গ্রহণযোগ্যতা বিকশিত হচ্ছে।