অর্থভুবন ডেস্ক
রবিউল আউয়াল হিজরি সনের তৃতীয় মাস। রসুলের (সা.) জন্ম নবুওয়াত হিজরত এবং ওফাত সংঘটিত হয়েছে রবিউল আউয়াল মাসে। সেহেতু রসুল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসার মাস এটি। হাদিসে এসেছে ওই ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত ইমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ সে তার পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্ততি থেকে রসুল (সা.)-কে বেশি ভালোবাসবে, অর্থাৎ পিতা-মাতা থেকেও নবীকে বেশি ভালোবাসতে হবে।
এ ভালোবাসার মর্মার্থ হলো রসুল আমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা পালন করা, যা থেকে বিরত থাকতে বলছেন তা থেকে বিরত থাকা। কেননা যেই ব্যক্তি রসুলের দেখানো পথে তাঁকে অনুসরণ করল সে তাকে অনুগত করল।
আল্লাহতায়ালা বলেন, নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা নবীর ওপর রহমত নাজিল করেন এবং ফেরেশতা ও তাঁর প্রতি রহমত কামনা করেন, হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ পড় এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও (সুরা আহজাব-৫৬)।
হাদিসে এসেছে, হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পড়ে আল্লাহ তার ওপর ১০টি রহমত বর্ষণ করেন, তার ১০টি গুনাহ মাফ করেন, তার জন্য রহমতের ১০টি দরজা খুলে দেওয়া হবে (মুসনাদে আহমাদ ও নাসায়ি)।
আমর ইবনে রাবিয়া (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রসুল (সা.)-কে খুতবা দেওয়ার সময় বলতে শুনেছি, আমার ওপর দরুদ পাঠকারীগণ যতক্ষণ দরুদ পড়তে থাকে ফেরেশতারা ততক্ষণ তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। সুতরাং বান্দার ইচ্ছা সে দরুদ কম পড়বে না বেশি পড়বে (মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে মাজা)।
কেয়ামতের দিন রসুল (সা.)-এর সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে ওইসব ব্যক্তি যারা বেশি বেশি দরুদ পড়ে। হাদিসে এসেছে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন রসুল (সা.) বলেন, কেয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে বেশি কাছাকাছি হবে যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পড়েছে (তিরমিজি)।
দুনিয়া ও পরকালের সব চাওয়া-পাওয়া পূর্ণ হবে, রসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠে। উবাই ইবনে কাব (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) একবার আল্লাহর জিকিরের খুব তাগিদ দিলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রসুল (সা.) আমি আপনার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে থাকি। আমি আবার বললাম দোয়ার কত ভাগ আপনার জন্য নির্ধারণ করব। তিনি বললেন তোমার যে পরিমাণ ইচ্ছা, আমি বললাম ৪ ভাগের এক ভাগ।
তিনি বললেন, তোমার যা ইচ্ছা তবে বেশি করলে ভালো, আমি বললাম অর্ধেক, তিনি বললেন তোমার যতটুকু ইচ্ছা, বেশি করলে আরও ভালো। আমি বললাম তাহলে ৩ ভাগের ২ ভাগ।
তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা হয়, তবে বেশি করলে আরও ভালো। আমি বললাম তাহলে কি আমার দোয়ার পুরোটাই হবে আপনার দরুদ। তিনি বললেন, তবেই তো তোমার উদ্দেশ্য হাসিল হবে, তোমার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে (তিরমিজি ও তাবরানি)।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক