অর্থভুবন প্রতিবেদক
আহরণপ্রবণতা—যতটা সম্ভব পণ্য বা পণ্যের বড় অংশ দখলে রাখার ইচ্ছা, এমন এক প্রেরণা বা প্রণোদনা, আমি মনে করি ভয় ও প্রয়োজনীয়তার প্রতি আকাঙ্ক্ষার সম্মিলনই যার উৎস। আমার একবার এস্তোনিয়ার দুই ছোট্ট বালিকার সঙ্গে বন্ধুত্বের সুযোগ ঘটেছিল, যারা দুর্ভিক্ষে অভুক্ত থেকে প্রায় মারা যেতে বসেছিল।
কিন্তু আহরণপ্রবণতার মনোবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যা-ই হোক না কেন, কেউ অস্বীকার করতে পারবে না, এটা অন্যতম এক প্রেরণা, বিশেষ করে সবচেয়ে ক্ষমতাবানদের মধ্যে। আর এর কারণ হচ্ছে, যেমনটি আমি আগে উল্লেখ করেছি, এ এক অসীম প্রেরণা। যতই আপনি অর্জন করে থাকেন না কেন, আপনি সব সময়ই আরও বেশি আহরণ করতে চাইবেন; আকণ্ঠ পরিতৃপ্তি এমন এক স্বপ্ন, যা সব সময় আপনার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াবে।
আহরণপ্রবণতা, যদিও এটা পুঁজিবাদী পদ্ধতির মূল শক্তি, কোনোমতেই সবচেয়ে শক্তিশালী প্রেরণা নয়, যেটা ক্ষুধাকে জয় করেও টিকে থাকে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও শক্তিশালী এক প্রেরণা। মুসলিম ইতিহাসে বারবার রাজবংশগুলোর মধ্যে মতানৈক্যের জন্য হয়েছে। কারণ, সুলতানের অন্য স্ত্রীর সন্তানেরা একমতে পৌঁছাতে পারেরনি এবং ফলস্বরূপ গৃহযুদ্ধে সর্বস্বান্ত হয়েছেন তাঁরা। আধুনিক ইউরোপেও একই ঘটনা ঘটেছে।…
আহরণপ্রবণতা যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়ে শক্তিশালী হতো, তাহলে বিশ্ব অনেকটাই শান্তিতে থাকত। সত্যি বলতে কি, অসংখ্য মানুষ হাসিমুখে তাদের এই নিঃস্ব অবস্থা মেনে নেবে, যদি তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পূর্ণভাবে পর্যুদস্ত করতে সক্ষম হয়।
ব্রিটিশ লেখক বার্ট্রান্ড রাসেল ১৯৫০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।