অর্থভুবন প্রতিবেদক
বাংলাদেশে শিশুদের অধিকার সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত। বাংলাদেশে শিশু অধিকার সংরক্ষণের জন্য স্বাধীনতা লাভের পরপরই ১৯৭৪ সালে পাস করা হয় শিশু আইন-১৯৭৪। বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী প্রথম রাষ্ট্রগুলোর একটি। শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়াসে প্রণয়ন করা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০, জাতীয় শিশুশ্রম নিরোধ নীতিমালা-২০১০, জাতীয় শিশু নীতিমালা-২০১১, শিশু আইন-২০১৩, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১৫। জাতীয় শিশুনীতি ২০১১ সালে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধান, শিশু আইন ও আন্তর্জাতিক সনদগুলোর আলোকে শিশু অধিকার নিশ্চিত করা হবে। আরও বলা হয়েছে শিশুর সার্বিক সুরক্ষা ও সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিতকরণের কথা, শিশুর প্রতি সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্য দূরীকরণের কথা; কিন্তু এসব নীতি ও আইনের বাস্তব প্রয়োগ দৃশ্যমান হয় কোথায়? ২০১৩ সালে শিশু আইন প্রণয়নের পর আজ পর্যন্ত কোনো বিধিমালা আসেনি। ফলে আইন বাস্তবায়নে দেখা দিচ্ছে প্রতিবন্ধকতা এবং উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে শিশু নির্যাতন। বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ প্রতি বছর আসে ও যায় এবং বলা হয়- ‘আজকের শিশু আনবে আলো, বিশ্বটাকে রাখবে ভালো’। যে দেশে শিশুরা ঝুঁকির মধ্যে বেড়ে ওঠে, সে দেশের শিশুরা ভবিষ্যতের জন্য আলো নিয়ে আসবে কী করে, সেই প্রশ্ন মনকে বিচলিত করে। যে দেশে বছরের প্রথম ৯ মাসের মাথায় ৬০০ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, সে দেশে তাদের শৈশব আর যাই হোক, আলোকিত হতে পারে না। ভয়ে মোড়ানো অন্ধকারাচ্ছন্ন শৈশবের পথ বেয়ে আলোকিত ভবিষ্যতের দেখা মেলে কি? উল্লেখ্য, মাত্র দুই বছরের মধ্যে দেশ থেকে সব ধরনের শিশুশ্রম নির্মূল করার অঙ্গীকার আমাদের আছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের ৮ দশমিক ৭ নম্বরে সেটাই বলা হয়েছে।