অর্থভুবন ডেস্ক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রশাসনে আরেক দফা পদোন্নতি দিতে যাচ্ছে সরকার। এবার সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে প্রায় ২৫০ জনকে। গত মাসেই ২২১ জনকে যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। তাতে প্রশাসনে যুগ্ম সচিবের সংখ্যা দাঁড়ায় পদের চেয়ে প্রায় তিন গুণ। এর আগে মে মাসে ১১৬ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত সচিব করা হয়। ওই পদোন্নতির ফলে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪২৬। অথচ অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১৪০।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) সূত্রে জানা যায়, এবার উপসচিব হিসেবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিসিএস ২৯তম ব্যাচকে নিয়মিত গণ্য করা হচ্ছে। এ ব্যাচের পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ১৯৫। এ ক্ষেত্রে আগের বঞ্চিত কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ক্যাডারের অন্তত ১৫০ জনসহ সাড়ে তিন শর বেশি কর্মকর্তার কর্মজীবনের নথিপত্র যাচাই-বাছাই করছে পদোন্নতির সুপারিশকারী কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে তারা ছয়টি বৈঠক করেছে। আরও দু-তিনটি বৈঠকের পর তালিকা চূড়ান্ত করার কথা। সব ঠিক থাকলে এ মাসেই পদোন্নতি হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডির (নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ) দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, উপসচিব হিসেবে পদোন্নতির জন্য ইতিমধ্যে এসএসবির বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। আরও বৈঠক হবে। এরপরই পদোন্নতি হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ৭ অক্টোবরের তথ্যমতে, ৪৩০টি সুপারনিউমারারি পদসহ উপসচিবের অনুমোদিত পদ ১ হাজার ৪২৮।
কর্মরত আছেন ১ হাজার ৪৭৭ জন। এসএসবি সূত্রে জানা গেছে, এবারের পদোন্নতির জন্য লেফট আউট (আগের বঞ্চিত) তালিকার বাইরে নিয়মিত ব্যাচ থেকে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে ২৯তম ব্যাচের ১৯৫ জনকে। এর মধ্যে ইকোনমিক ক্যাডার থেকে প্রশাসনে একীভূত হওয়া কর্মকর্তা আছেন ২৯ জন।
২০১১ সালের ১ আগস্ট ২৯তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারে ১৮৯ জন যোগ দিলেও পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন ১৬৬ কর্মকর্তা। তাঁরা ইতিমধ্যে চাকরিজীবনের এক যুগ পার করেছেন। এর বাইরে আগের বঞ্চিত প্রায় ২০০ কর্মকর্তা এখনো সিনিয়র সহকারী সচিব পদে আছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন বিসিএস ১০ম ব্যাচের ১ জন, ১১তম ব্যাচের ৮ জন, ১৩তম ব্যাচের ১২ জন, ১৫তম ব্যাচের ৯ জন, ১৭তম ব্যাচের ৪ জন, ১৮তম ব্যাচের ২ জন এবং ২০তম ব্যাচের ১২ জন। এর বাইরেও বিলুপ্ত ইকোনমিক ক্যাডারসহ অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তারাও আছেন পদোন্নতির বিবেচনায়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনের আগে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কিছুটা উদারভাবে দেখতে বলা হয়েছে। এ কারণে ২৯তম ব্যাচের পদোন্নতিযোগ্য প্রায় সবাই এ যাত্রায় পার হয়ে যেতে পারেন। পাশাপাশি আগের বঞ্চিত সিনিয়র কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশেরও সুযোগ মিলতে পারে। অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাসহ প্রায় ২৫০ জন উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি পেতে পারেন। সবশেষ গত বছরের ১ নভেম্বর ২৫৬ জনকে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল।
পদোন্নতি বিধিমালা অনুযায়ী উপসচিব হিসেবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নিতে হয়। উপসচিব হিসেবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সিনিয়র সহকারী সচিব পদে ৫ বছর চাকরিসহ সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। অন্তত ৮৩ বেঞ্চমার্ক (মূল্যায়ন নম্বর) পেতে হয়।