অর্থভুবন প্রতিবেদক
মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামের সবজিচাষি শীতকালীন আগাম কপি চাষ করে আনন্দের হাসি হাসার বদলে তাদের চোখ দিয়ে ঝরে পড়ছে পানি। কপিচাষিদের অভিযোগ তারা জেবিটি সিডসের রাজাসান জাতের কপির বীজ থেকে চারা তৈরি করেন। চারা রোপণের পর প্রতিটি গাছে ৩-৪টি করে ডগা গজিয়েছে, আবার কোন কোনটির পাতা কোঁকড়ানো। সেচ, সার, ওষুধ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে জমি থেকে বাঁধাকপির (পাতাকপি) গাছ তুলে ফেলছেন। ক্ষতি পূরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কপিচাষিরা মানববন্ধন করেছে। ওই গ্রামের পাতাকপিচাষি রফিকুল আলম জানান, তিনি নিজের ও বর্গা নেওয়া মিলে ১১ বিঘা জমিতে আগাম জাতের বাঁধাকপি চাষ করেছেন। কপি চাষাবাদে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আগাম জাতের কপির বীজ থেকে স্বাস্থ্যবান গাছ হলেও পাতা না বাঁধায় তিনি চরম ক্ষতির মুখে।
একই গ্রামের কপিচাষি রুহুল আমিন জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে কপিচাষে প্রায় একলাখ টাকা খরচ করেছেন। পাতা না বাঁধায় তিনি কোনো টাকা ঘরে তুলতে পারবেন না বলে হতাশা ব্যক্ত করেন। ওই গ্রামের নাজের আলি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন- কপির আবাদ করতে গিয়ে সারের দোকানে প্রায় ৫০ হাজার টাকা দেনা হয়েছে। ঋণের টাকায় চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারেন না জানিয়ে ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারের কাছে সহায়তার দাবি জানান।
সরজমিনে সদর উপজেলার বন্দর, বারাদি, উজ্জলপুর, কুলবাড়িয়া, সাহারবাটি গ্রামের অনেক কৃষকই ওই জাতের বীজ কিনে কপিচাষ করে প্রতারিত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেহেরপুর জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার রঞ্জন কুমার প্রামানিক বলেন, বাঁধা কপির আগাম রাজাসান জাতের পারফরমেন্স ভালো না। গত বছর আমরা এ জাতের বীজ আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। তারপর থেকে ‘আল্লাহর দান বীজ ভাণ্ডার’ এখানকার দোকান বন্ধ করে ঢাকা সিদ্দিক বাজারে বীজ ব্যবসা করছেন। ঢাকা থেকে সে বিভিন্ন মাধ্যমে মেহেরপুরের কৃষকদের মাঝে বীজ বিক্রি করেন।