অর্থভুবন প্রতিবেদক
আমাদের প্রিয় নবী (সা.) সব নবীর সেরা। তাঁর উম্মত সর্বোত্তম উম্মত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা সব নবীর ওপর আমাকে মর্যাদা দিয়েছেন এবং সব উম্মতের ওপর আমার উম্মতকে মর্যাদা দিয়েছেন।’ (তিরমিজি) তিনি আরো বলেছেন, ‘আমি আদম সন্তানের নেতা, এতে আমার কোনো অহংকার নেই।
নবীজির ব্যতিক্রমী ১০ গুণ
আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবিবকে নবী-রাসুলদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করার পর ব্যতিক্রমী ১০টি গুণ দান করেছেন। দুটি হাদিসে এ ১০ গুণের বর্ণনা রয়েছে। আমিরুল মুমিনিন আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, আমাকে এমন কতিপয় বৈশিষ্ট্য প্রদান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো নবী-রাসুলকে প্রদান করা হয়নি। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! এ বৈশিষ্ট্য কী কী? তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন—
১. ‘ভয়-ভীতি দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে।
২. ‘আমাকে গোটা দুনিয়ার চাবি দেওয়া হয়েছে।’ অর্থাৎ দুনিয়া নবী (সা.)-এর করতলগত এবং অধীন হবে।
৩. ‘আমার নাম রাখা হয়েছে আহমদ, তথা অতি প্রশংসাকারী।’ এমন নাম কোনো নবী-রাসুলের রাখা হয়নি।
৪. ‘আমার জন্য মাটি পবিত্র বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।’ ফলে পানির বিকল্প হিসেবে এই উম্মতের জন্য মাটি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ।
৫. ‘আমার উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতকে এমন তিন বৈশিষ্ট্য দান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো উম্মতকে দান করা হয়নি। এক. সালাম, তা জান্নাতিদের অভিবাদন। দুই. সারিবদ্ধ হয়ে ইবাদত করা। এটি ফেরেশতাদের বৈশিষ্ট্য। তিন. আমিন বলা। এটি মুসা ও হারুন (আ.) ছাড়া কোনো নবীর সময় ছিল না। (ইবনে খুজাইমা)
মুসলিম শরিফের অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমাকে ছয় জিনিস দ্বারা অন্য নবীদের ওপর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তন্মধ্যে একটি আগের মতো। ব্যতিক্রমগুলো হলো—
৬. ‘আমাকে সংক্ষেপে অধিক অর্থবহ কথা বলার যোগ্যতা দান করা হয়েছে।’
৭. ‘আমার জন্য গনিমত তথা যুদ্ধলব্ধ মাল হালাল করা হয়েছে, যা অন্য নবী-রাসুলদের সময় হালাল ছিল না।’
৮. ‘গোটা জমিনকে আমার জন্য মসজিদ ও পবিত্র স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।’ ফলে এই উম্মতের জন্য যেকোনো স্থানে নামাজ পড়া জায়েজ। অন্য নবীদের সময় এ সুযোগ ছিল না, তাদের উপাসনাগৃহে নামাজ আদায় করতে হতো।
৯. ‘আমি সমগ্র সৃষ্টির প্রতি প্রেরিত হয়েছি।’ নবী (সা.) হলেন বিশ্বনবী। আর কেউ বিশ্বনবী নন। সবাই ছিলেন আঞ্চলিক ও নির্দিষ্ট এলাকার নবী। এবং একই সময়ে কয়েকজন নবী ছিলেন।
১০. ‘আমার দ্বারা নবুয়ত সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।’ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি শেষ নবী, আমার পরে আর কেউ নবী হবে না।’ (মুসলিম)
লেখক : প্রধান ফকিহ, আল-জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসা, ফেনী।