রংপুর চিড়িয়াখানা
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র রংপুর চিড়িয়াখানা। এখানকার প্রধান আকর্ষণ ছিল বাঘিনী ‘শাওন’। অসুস্থ হয়ে গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মারা যায় একমাত্র রয়েল বেঙ্গল টাইগারটি। এরপর থেকেই শূন্য পড়ে ছিল খাঁচাটি। প্রায় দেড় বছর পর শূন্য খাঁচা পূর্ণ করতে চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বাঘ। তবে
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল থেকে রোমিও-জুলিয়েটকে দেখতে চিড়িয়াখানায় ভিড় করতে দেখা যায় দর্শনার্থীদের। এর আগে বিকাল ৩টার দিকে লাল কাপড়ে মোড়ানো লোহার দুটি খাঁচায় করে রংপুর চিড়িয়াখানার ফটকে এসে পৌঁছে দুই বছর বয়সী রোমিও-জুলিয়েট। পরে সেখান থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে বরণ করা হয় বাঘ দম্পতিকে। সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর চিড়িয়াখানায় রোমিও-জুলিয়েটের শুভাগমন ও জন্মদিন উপলক্ষে খাঁচার সামনে কাটা হয় কেক।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারি এ চিড়িয়াখানায় শাওন নামের একটিমাত্র বাঘিনী ছিল। ২০০৩ সালের ৩০ জুন ওর জন্ম হয়েছিল ঢাকার মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায়। সে হিসেবে মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ১৮ বছর ৭ মাস। ২০১০ সাল থেকে রংপুর চিড়িয়াখানায় তাকে সঙ্গীহীনভাবে খাঁচাবন্দি রাখা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে সুস্থ-সবলই দেখা গেছে। বার্ধক্যের কারণে মারা যায় শাওন।
এদিকে রোমিও-জুলিয়েটের পরিচর্যা, খাদ্য সরবরাহসহ খাঁচা সংস্কার করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে শুরু হয়েছে প্রচার।
বাঘের খাদ্য সরবরাহকারী রমজান আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খাঁচাটি শূন্য ছিল। রোমিও-জুলিয়েটের কারণে আজ খাঁচা পূর্ণতা পেল। আমরা ভীষণ আনন্দিত। ওদের জন্য মাংস সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের দিক থেকে তাদের পরিচর্যায় কোনো ঘাটতি থাকবে না।
এ ব্যাপারে রংপুর চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর আম্বার আলী তালুকদার বলেন, গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ১৬ দিন অভুক্ত থেকে মারা যায় চিড়িয়াখানার একমাত্র বাঘিনী ‘শাওন’। ফলে এতদিন বাঘ শূন্য ছিল রংপুর চিড়িয়াখানা। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একজোড়া বাঘ আনার জন্য। অবশেষে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে বাঘ বহনকারী গাড়িটি এসে পৌঁছে। রোমিও-জুলিয়েটের আগমনে এখন দর্শনার্থী বাড়ছে।
জানা যায়, প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের শাসনামলে রংপুর নগরীর হনুমানতলা এলাকায় ১৯৮৯ সালে রংপুর চিড়িয়াখানাটি গড়ে ওঠে। এটি দর্শনার্থীদের জন্য ১৯৯২ সালে খুলে দেওয়া হয়। প্রায় ২২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ চিড়িয়াখানায় ৩৩ প্রজাতির প্রায় ২৬০টি প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে সিংহ, বাঘ, জলহস্তী, হরিণ, অজগর সাপ, উটপাখি, ইমু, বানর, কেশওয়ারি, গাধা, ঘোড়া, ভাল্লুক উল্লেখযোগ্য।