সম্পাদকীয়
একশ্রেণির শিল্পী রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের স্বাধীন এক আধ্যাত্মিক জগতের স্রষ্টা হিসেবে কল্পনা করেন এবং সেই জগতের সব সৃষ্টি ও মানুষের যাবতীয় দায়-দায়িত্বও তাঁরা তাঁদের ঘাড়ে নিয়ে নেন; কিন্তু তাঁরাও একসময় অবসন্ন হয়ে পড়েন। কেননা পৃথিবীর কোনো প্রতিভাবানের পক্ষেই তা ধারণ করা সম্ভব নয়। নিছক একজন মানুষ, যিনি বা যাঁরা একসময় নিজেকে অস্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রচার করেছেন, প্রকৃতপক্ষে তাঁর পক্ষেও সম্ভব হয় না আধ্যাত্মিকতার এ ধরনের স্থায়ী একটি প্রক্রিয়া নির্মাণের। যখন স্রষ্টা হিসেবে নিজের পরাজয় তাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরে, তিনি তখন পৃথিবীর পুরোনো সব বিবাদের প্রসঙ্গ তুলে সেগুলোর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেন; দোষ চাপিয়ে দেন অজস্র খণ্ড খণ্ড দ্বন্দ্বে, আধুনিক আত্মা তত্ত্বেও এবং সর্বোপরি জনগণের বোধ ও উপলব্ধির অপারঙ্গমতায়।
শিল্পের অযৌক্তিকতা তৈরি হয় মূলত একধরনের আচ্ছন্নতা, অপরিণামদর্শিতা এবং জনগণের ওপর রহস্যময়তা সঞ্চালনের কারণে, যা শিল্পীর অনুপযুক্ত হাতে সৃষ্টি কিংবা একধরনের জাদুময়তা তৈরির ব্যর্থ প্রয়াস।
রুশ লেখক আলেকসান্দর সলঝেনিৎসিন ১৯৭০ সালে নোবেল পুরস্কার পান।