বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল মার্কেটিং পেশার গুরুত্ব বাড়ছেই। অনলাইনভিত্তিক কাজের কারণে অনেক মানুষ এই সেক্টরকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে। বর্তমানে najmc.com-এ মার্কেটিং কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছেন নাজমুল আহমেদ। একই সঙ্গে নতুন মার্কেটিং ট্রেন্ড শেখা, কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন ফ্রি কোর্স, কনটেন্ট তৈরি করছেন তিনি।
দেশে ডিজিটাল মার্কেটিং পেশার সম্ভাবনা কতটুকু?
নাজমুল আহমেদ : দেশে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিছু বছর আগেও কোনো কোম্পানি বুঝত না যে, তাদের ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস লাগবে, সেখানে এখন কোম্পানিগুলো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানে ও বুঝে। এ সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে হলে এখনই উপযুক্ত সময়, আরও পরে করতে চাইলে দেরি হয়ে যেতে পারে।
কাজের ক্ষেত্র কেমন?
নাজমুল আহমেদ : ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং পরিচিত কাজের ক্ষেত্র হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ। এ ছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে সোশ্যাল মিডিয়া এক্সিকিউটিভ, ইমেইল মার্কেটার, মেটা বিজনেস ম্যানেজার, কপিরাইটার এবং অ্যাড স্পেশালিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে।
নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কোন দিকগুলো বিবেচনা করবে?
নাজমুল আহমেদ : ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩টি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। এক. মানুষ হিসেবে কেমন, দুই. মার্কেটিং সম্পর্কে গভীর ধারণা আছে কি না এবং তিন. কাস্টমার সাইকোলজি বুঝে কি না।
পেশার চ্যালেঞ্জ কোথায়?
নাজমুল আহমেদ : এই পেশার সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানুষজন আসলে জানে না শুরু করবে কোন জায়গা থেকে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানসম্মত উন্মুক্ত রিসোর্স না থাকা, যেখান থেকে অন্তত সবাই মার্কেটিংয়ের বেসিকটা আয়ত্ত করতে পারবে।
এই পেশায় যারা আসতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে
নাজমুল আহমেদ : সবার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিন দিন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রটা লোকালি এবং গ্লোবালি অনেক বড় হচ্ছে। দেশেই প্রচুর চাহিদা লক্ষ করা যাচ্ছে। এই পেশায় আসতে চাইলে, তারা যেন বেসিক থেকে অ্যাডভান্স ভালো করে শিখে তারপর এই সেক্টরে আসেন।
ডিজিটাল মার্কেটার হিসাবে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছে থাকলে বেসিক ট্রেনিংটা খুবই জরুরি। বেসিক ট্রেনিংটা ঠিক থাকলে পরবর্তী ধাপ কী হবে সে নিজে নিজেই খুঁজে নিতে পারবে।
যোগ্যতা, দক্ষতা, আয় নিয়ে বলুন
নাজমুল আহমেদ : শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। তবে শেখার পেছনে প্রচুর সময় ও শ্রম দিতে পারে তাহলে যোগ্যতা এবং দক্ষতা দুটোই অর্জিত হবে। যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী একজন ডিজিটাল মার্কেটার শুরুতে ১৫০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবে।
পেশার প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণ
নাজমুল আহমেদ : পেশার মূল প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে মানুষকে ভুল মার্কেটিং শেখানো এবং মার্কেট সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করে দেওয়া। উত্তরণের উপায় হচ্ছে যার কাছ থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখছি বাধ্যতামূলকভাবে তার ব্যাকগ্রাউন্ড আগে চেক করে নেওয়া। ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে তিনি আসলেই কাজ করছেন কি না, না শুধু শেখান এই বিষয়গুলো জেনে নেওয়া জরুরি।
ফ্রি কোর্স উন্মোচন করলেন কেন?
নাজমুল আহমেদ : ১৫ বছরের ক্যারিয়ারের যাত্রায় আমার মনে হচ্ছে, ফান্ডামেন্টাল বা একদম শুরুর দিকের কিছু জিনিস যদি আগে থেকে জানতাম তাহলে এই পর্যায়ে আসতে যে সময় লেগেছে সেটা হয়তো অনেক কমে যেত। এই ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলো খুবই ছোট ছোট, কিন্তু জানতে অনেক সময় লেগে গেছে। আমি বিশ্বাস করি, ফ্রি-তেই সবার এগুলো জানা উচিত। সবসময় চাচ্ছি, মার্কেটিং শিখতে গিয়ে আমি যে ভুলগুলো করেছি, বেসিক লেভেলের যে জিনিসপত্রগুলো আমি পাইনি একজন নতুন লার্নারের ক্ষেত্রে যেন এমন না হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চাইলে কোন জায়গা থেকে শুরু করবে, কীভাবে শুরু করবে, বেসিকটা কীভাবে জানবে এইসব বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে গিয়েই এই ‘Free Digital Marketing Fundamentals Course’ কোর্স উন্মোচন করা। আমি দেখেছি, বর্তমানে অনলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অনেক কোর্স রয়েছে যেগুলোর দাম অনেক বেশি আবার কম দামের কিছু কোর্স রয়েছে যেগুলো মানসম্মত না। সবাই যেন সহজে শিখতে পারে এবং ক্যারিয়ার গড়ায় সহায়ক হয় সেজন্যই ৫ ঘণ্টার অধিক কোর্সটি সম্পূর্ণ ফ্রি-তে উন্মোচন করেছি। কোর্স লিংক : https://www.youtube.com/watch?v=uNNcfiqNajg