অর্থভুবন প্রতিবেদক
হৃদরোগ চিকিৎসায় বাংলাদেশ এগিয়েছে। বিশ্বমানের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাও গড়ে উঠেছে। কিন্তু এখনো সেই চিকিৎসা শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক। সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসাব্যবস্থার ৯৫ শতাংশই ঢাকায়। ঢাকার বাইরে মাত্র তিন জেলায় সীমিত আকারে চিকিৎসা পাচ্ছে মানুষ। প্রান্তিক পর্যায়ে এই রোগের চিকিৎসা নেই বললেই চলে।
সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাও গড়ে উঠেছে ঢাকাকেন্দ্রিক। সারা দেশে ক্যাথল্যাবের ৭১ ও সিসিইউর ৫৭ শতাংশই ঢাকায়। কাগজে-কলমে ঢাকাসহ সাত জেলায় পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার কথা বলা হলেও ঢাকা বাদে বাকি ছয় জেলায় হৃদরোগ চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকার কারণে চিকিৎসা পাচ্ছে না মানুষ।
এখনো দেশে বেশ কিছু হৃদরোগের চিকিৎসা নেই; বিশেষ করে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পরবর্তী চিকিৎসা, হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট ও শিশুর জন্মগত হৃদরোগের চিকিৎসা দেশে হচ্ছে না। এ ছাড়া রোবটিক সার্জারি ও রোবটিক পিসিআইসহ (রিং পরানো) আরও কিছু আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নেই বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
সরকারি ও বেসরকারি জরিপের তথ্য এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে দেশে হৃদরোগের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ হৃদরোগ চিকিৎসায় এগিয়েছে, কিন্তু কতটুকু এগিয়েছে, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামাল অর্থভুবন প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাংলাদেশে হৃদরোগের সব চিকিৎসা হচ্ছে ও সেগুলো আন্তর্জাতিক মান সম্পন্নই বলা যায়। তবে ব্যবস্থাপনায় কিছুটা ঘাটতি থাকতে পারে। সারা দেশে ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার জন্য সমান চিকিৎসা দিতে পারছি না। যার সামর্থ্য আছে, সে চিকিৎসা নিতে পারছে। যার সামর্থ্য নেই, সে নিতে পারছে না। দেশে যে চিকিৎসা আছে, সেখানে এনজিওগ্রাম, রিং পরানো, বাইপাস সার্জারিসবই শহরকেন্দ্রিক। প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেগুলোর সুযোগ-সুবিধা নেই।’
বাংলাদেশে হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমেদ। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হৃদরোগ চিকিৎসায় আমরা এগোচ্ছি। কিন্তু কতটুকু এগোচ্ছি, সেটা ভেবে দেখা দরকার। প্রতিরোধ নিয়ে কাজ হচ্ছে না। প্রতিরোধ করতে না পারলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে এগোতে পারব না। প্রতিদিন রোগী বাড়ছে। দুই বছর আগে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে বেড ছিল ৪১৪টি। এখন হয়েছে ১ হাজার ৪০০। তখনো রোগী মেঝেতে থাকত, এখনো থাকে। প্রতিরোধ না থাকায় রোগী কমেনি, বরং বেড়েছে।’
অসংক্রামক ব্যাধির মৃত্যুতে শীর্ষে হৃদরোগ : সরকারের সর্বশেষ বাংলাদেশ স্টেপ সার্ভে-২০১৮-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট মৃত্যুর ৭৩ শতাংশই ঘটছে অসংক্রামক ব্যাধির কারণে। এই মৃত্যুর শীর্ষে রয়েছে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বা হৃদরোগ। অসংক্রামক ব্যাধিতে মোট মৃত্যুর ৩৬ শতাংশই ঘটছে হৃদরোগে। এরপর ক্যানসারে মারা যাচ্ছে ১১, ক্রনিক রেস্পাইরেটরি ডিজিজে ৯ ও ডায়াবেটিস মেলাইটাসে ৬ শতাংশ মানুষ মারা যাচ্ছে।
অবশ্য এর এক বছর আগেও হৃদরোগে মৃত্যু কম ছিল বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য থেকে জানা গেছে। সংস্থার ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী, সে বছর বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই ছিল অসংক্রামক ব্যাধিতে। সে হিসাবে মৃত্যু বেড়েছে ৬ শতাংশ। মোট মৃত্যুর ৩০ শতাংশ ছিল হৃদরোগে; অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে এই রোগে মৃত্যু বেড়েছে ৬ শতাংশ।
হৃদরোগে আক্রান্ত ৪ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ : গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৬ বছরের নিচে এবং ৪৬ বছরের ঊর্ধ্বে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বা সাড়ে ৪ শতাংশ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে নারী সাড়ে ৩ ও পুরুষ ৬ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই করোনারি ধমনি রোগের (করোনারি আর্টারি ডিজিজ) প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।
অন্য একটি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজে মৃত্যুতে বাংলাদেশ চার নম্বরে। এখানে প্রতি লাখ রোগীর মধ্যে মারা যাচ্ছে ২০৪ জন। মৃত্যুর শীর্ষে রয়েছে আফগানিস্তান ৩২৯ জন। এরপর পাকিস্তানে ২২৩, ভুটানে ২২২, ভারতে ১৬৬, মিয়ানমারে ১৬৫, নেপালে ১৫৩, শ্রীলঙ্কায় ৮৫ ও মালদ্বীপে ৫১ জন মারা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার গড় বয়স ৫৩ বছর। এই বয়সী রোগীদের ৮৮ শতাংশই পুরুষ। অন্যদিকে, স্বল্প বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। বর্তমানে ৪৬ শতাংশ রোগীর বয়স ৫০ বা এর নিচে।
৯৫ শতাংশ চিকিৎসা ঢাকাকেন্দ্রিক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেশ রূপান্তরকে জানান, বাংলাদেশে কার্ডিয়াক চিকিৎসার ৯৫ শতাংশ ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকার বাইরে কিছুটা চিকিৎসা হচ্ছে চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনায়। রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুরে চিকিৎসা নেই বললেই চলে; অর্থাৎ ওই তিন জেলা বাদে দেশের বাকি জেলাগুলোয় এই চিকিৎসা খুবই অবহেলিত। বরিশালে একজন মানুষের হার্ট অ্যাটাক হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার চিকিৎসা শুরু করতে হবে। কিন্তু তার ঢাকা আসতে সময় পার হয়ে যাবে। ওই রোগী মারা যাবে। ঢাকার বাইরে সরকারি হাসপাতালগুলোতে সিসিইউ আছে, কার্ডিওলজিস্ট পোস্টিং আছে, কিন্তু সিসিইউ যন্ত্রপাতি নষ্ট, ইকো মেশিন নষ্ট। ফলে তারা চিকিৎসা পায় না।
তিন হৃদরোগের চিকিৎসা নেই দেশে : এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমেদ অর্থভুবন প্রতিবেদককে বলেন, ‘একজন রোগীর যদি হার্ট ফেইলিউর থাকে এবং কোনো কারণে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এর পরের চিকিৎসা আমাদের দেশে হয় না। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে তাকে আমরা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করি। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে কিছু ডিভাইস ব্যবহার করে। এসব ডিভাইসের মাধ্যমে তারা হার্টের প্রেশার বাড়ায়, পরে হার্টে এনজিওগ্রাম ও এনজিওপ্লাস্টি করে। সেটাতেও কাজ না হলে তার হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে। এই ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পরের চিকিৎসাগুলো আমাদের দেশে নেই। ফলে এই রোগীগুলো বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।’
এ ছাড়া বাংলাদেশে হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয় না বলেও জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি বলেন, ভারতে প্রতি বছর ১ হাজারের বেশি হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়। সেখানে প্রতিটি শহরে ট্রান্সপ্ল্যান্টের ব্যবস্থা আছে।
শিশুর জন্মগত হৃদরোগের চিকিৎসার ব্যবস্থাও বাংলাদেশে পর্যাপ্ত নয় বলেও জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘এটা সাধারণত দরিদ্র পরিবারের বাচ্চাদের বেশি হয়। তাই বেসরকারি খাতও এগিয়ে আসছে না। সরকারিভাবে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল এই তিনটিতে কিছু কাজ হচ্ছে। ফলে প্রচুর জন্মগত হৃদরোগের শিশু চলে যায় ভারতের ভেলরে। সেখানকার শিশু হৃদরোগীর ৯০ শতাংশই বাংলাদেশের। মূলত জন্মগত হৃদরোগেই আমরা বেশি পিছিয়ে আছি। তবে শারীরিক দুর্বলতা থেকে দেখা দেওয়া হৃদরোগীর সংখ্যা এখন বাংলাদেশে কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া একেবারে মডার্ন চিকিৎসাব্যবস্থায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে।’
৫৭ জেলায় নেই ক্যাথল্যাব ও সিসিইউ : হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে সরকারি হাসপাতালে হৃদরোগীদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) শয্যা ও ক্যাথল্যাব যন্ত্র (এর মাধ্যমে হৃদরোগীদের পেসমেকার স্থাপন, করোনারি এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও ভাল্ব সম্প্রসারণ করা হয়) আছে মাত্র ৭ জেলায়। বাকি ৫৭ জেলায় হৃদরোগ চিকিৎসার এসব ব্যবস্থা নেই। এর মধ্যে সিসিইউ শয্যা আছে ৪৯টি। সবচেয়ে বেশি ঢাকায়, ২৮ শয্যা, যা মোট সিসিইউর ৫৭ শতাংশ। এরপর চট্টগ্রামে ৯, সিলেট, খুলনা, বরিশালে ৩টি করে, রংপুরে ২ ও রাজশাহীতে ১টি শয্যা আছে। বাকি ৫৭ জেলায় সরকারিভাবে কোনো সিসিইউ নেই।
একইভাবে ক্যাথল্যাব যন্ত্র আছে ৫৫টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ঢাকায় ৩৯টি, যা মোট ক্যাথল্যাবের ৭১ শতাংশ। এরপর চট্টগ্রামে ৭, সিলেট ও খুলনায় ৩টি করে এবং বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুরে ১টি করে ক্যাথল্যাব আছে।
অবশ্য ঢাকার বাইরে মাত্র তিন জেলায় চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনায় হৃদরোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলেন, যেসব জেলায় ক্যাথল্যাব ও সিসিইউ আছে বলা হচ্ছে, সেখানে ‘সিসিইউ’ লেখা থাকলেও ভেতরে মেশিন নষ্ট। ফলে চিকিৎসা পাচ্ছে না।
১০ হাজার মানুষের জন্য শয্যা ৪ : সরকারের স্টেপ সার্ভে অনুযায়ী, দেশে সরকারি পর্যায়ে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য শয্যা রয়েছে মাত্র ৪টি, নার্স ও মিডওয়াইফ রয়েছেন তিনজনেরও কম বা দুই দশমিক ৮ জন এবং চিকিৎসক রয়েছেন তিনজন; অর্থাৎ হৃদরোগ চিকিৎসায় সরকারিভাবে আড়াই হাজার মানুষের জন্য একটি শয্যা, ৩ হাজার ৩৩৩ জনের জন্য ১ জন নার্স ও ১ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
প্রতিরোধ নিয়ে কাজ হচ্ছে না : অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান বলেন, ‘যেহেতু হৃদরোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল, তাই প্রতিরোধই উত্তম বলছি। সে জন্য যাতে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কায়িক পরিশ্রম করতে হবে। শিশুদের জন্য এসব বিষয় পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি, যাতে তারা এখন থেকেই হৃদরোগের ব্যাপারে সচেতন থাকতে পারে। এ ছাড়া সাইক্লিং, সাঁতার কাটা, হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করা, ধূমপান বাদ দেওয়া এসব প্রতিরোধ বিষয়ে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।’
অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে হৃদরোগ চিকিৎসার মূল সমস্যা প্রিভেনশন বা প্রতিরোধ। এই রোগের চিকিৎসা এত ব্যয়বহুল যে ধনী দেশগুলোর পক্ষেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ডিভাইস, রিং বা স্টেন্টের দাম বেশি। হার্ট অ্যাটাকের একজন রোগীর চিকিৎসায় খরচ হয় তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা। এই খরচ সংকুলান করতে গিয়ে পুরো পরিবার বিপদে পড়ে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যবীমা নেই। ফলে ১০-৩০ শতাংশ রোগী চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে পারে। বাংলাদেশে রোগটি প্রতিরোধের ওপর জোর দেওয়া উচিত। অথচ সেখানে কোনো কাজ নেই। প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজি বলে যে একটি শব্দ আছে, সেটাও কেউ জানে না। কারও কোনো মাথাব্যথা নেই না চিকিৎসক, না সরকারের।
বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ দেখছেন চিকিৎসকরা : দেশে হৃদরোগ চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান। তিনি বলেন, প্রথম চ্যালেঞ্জ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষ জানে না যে তাদের হার্টের রোগ হলো কি না, হার্টের রোগ হলে তারা সেটা কীভাবে বুঝবে, কী করবে এগুলো তাদের জানাতে হবে।
এই চিকিৎসক আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সেখানে ওষুধ আছে, কিন্তু সমন্বয়হীনভাবে থাকে। সরকার এখন অনেক ওষুধ বিনা পয়সায় দিচ্ছে। এ ছাড়া শহর অঞ্চলে কিছু চিকিৎসা আছে। কিন্তু যেহেতু দেশে স্বাস্থ্যবীমা নেই এবং এই চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল, তাই দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা নিতে পারে না।
এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ‘দেশে হৃদরোগের চিকিৎসক আগের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু জনসংখ্যা হিসেবে সেটা খুবই কম। তারপরও যে চিকিৎসক আছেন, তারা চিকিৎসা দিচ্ছেন। তারপরও মানুষ বিদেশে যাচ্ছে। সেটা কমাতে পারলে ভালো হয়। এখানে চিকিৎসা সব আছে, কিন্তু ব্যবস্থাপনায় কিছুটা ঘাটতি আছে। হৃদরোগ সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারলে রোগীরা দেশের বাইরে কম যাবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, ধনী-গরিব, শহর ও গ্রামভিত্তিক নির্বিশেষে সবাইকে একই চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে, যাতে সবাইকে ঢাকামুখী বা শহরকেন্দ্রিক হতে না হয়। ব্যবস্থাপনার সমন্বয়হীনতা দূর করতে হবে। দেশে যে জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট আছে, সেগুলোকে কাজে লাগাতে পারি, ওষুধ সব আছে, শুধু দাম কমাতে পারি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সহজ করতে পারি, সর্বজনীন একটা স্বাস্থ্যবীমা করে দিতে পারি, তাহলে সবার জন্য চিকিৎসা সহজ হবে।’