কেন্দ্রীয় খাসমহল মসজিদ। নব্বই বছর আগে ব্রিটিশদের গড়া পরিকল্পিত জনপদ ভোলার চরফ্যাশনের এই মসজিদে একসঙ্গে চার হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে। পরিবেশবান্ধব ও আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে গড়া মসজিদটি। মুসল্লিদের জন্য আছে প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা।
সাগরতীরবর্তী উপজেলা চরফ্যাশন। দক্ষিণের পর্যটনস্বর্গ চর কুকরিমুকরি এই উপজেলায় অবস্থিত। শহরের প্রাণকেন্দ্রে জ্যাকব টাওয়ারের পাশে নবনির্মিত এই মসজিদের অবস্থান।
চরফ্যাশন পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ভোলা জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর নকশা করেছেন ভোলার কৃতী সন্তান স্থপতি এ কে এম কামরুজ্জামান লিটন।
জুমার নামাজের আগে মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চরফ্যাশন উপজেলার প্রায় এক হাজার ৪০০টি মসজিদের ইমামসহ উপজেলার আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। নতুন এই মসজিদে জুমার নামাজের ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মাওলানা রফিকুল ইসলাম।
সিরামিক ইটের গাঁথুনির ফাঁক গলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে মসজিদে। ওপরে মাকড়সা আকৃতির কাচের গম্বুজ ভেদ করে সূর্যের আলোকরশ্মি ছড়াচ্ছে মসজিদজুড়ে। চরফ্যাশন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসান জানান, ১৭ হাজার বর্গফুট জায়গায় নির্মিত এই মসজিদকে পরিবেশবান্ধব রাখতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টোন চিপসের সমন্বয়ে সাদা সিমেন্টের প্লাস্টার করা হয়েছে। এই প্লাস্টার ১০০ বছর স্থায়ী হবে। নির্মাণ ব্যয়ের ২৫ কোটি টাকার মধ্যে চরফ্যাশন পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে দুই কোটি টাকা ব্যয় করে জ্যাকব টাওয়ার ও খাসমহল মসজিদের আশপাশে ওয়াকওয়ে ও ফুলের বাগান করা হয়েছে।
জুমার নামাজ আদায় করতে আসা কলেজ শিক্ষক ইউছুফ হোসেন ইমন ও ব্যবসায়ী মো. করীফ বলেন, মসজিদটি দেখতে খুব সুন্দর। খোলামেলা হওয়ায় নামাজ আদায় করেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন তাঁরা। বাইরের ও ভেতরের পরিবেশ নয়নাভিরাম।
চরফ্যাশন পৌরসভার মেয়র মো. মোরশেদ জানান, মসজিদটি চরফ্যাশন পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় থাকবে। এর পাশে নির্মিত সুউচ্চ জ্যাকব টাওয়ারের ২৫ শতাংশ আয় মসজিদ পরিচালনায় খরচ করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, ‘১৫ বছর ধরে চরফ্যাশনকে উন্নত শহরে রূপান্তরের জন্য চেষ্ট করে যাচ্ছি। আমি হয়তো এ এলাকাকে রাজধানী করতে পারব না। তবে এমন উন্নয়ন করব যাতে রাজধানীর মানুষ এ এলাকা দেখতে আসে। আমার সব কাজের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ হলো এই কেন্দ্রীয় খাসমহল মসজিদ।’ মসজিদটি বাংলাদেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব ও একমাত্র কাচের গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ বলে জানান তিনি।