পরিপূর্ণভাবে ত্বকের যত্ন নিতে ফেসিয়াল খুব ভালো মাধ্যম। সঠিক নিয়মে এটি করতে পারলে ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার হয়। ফেশিয়াল বিভিন্ন ধরনের হয়। ফ্রুট ফেশিয়াল, গোল্ড ফেশিয়াল, হোয়াইটনিং ফেসিয়ালের পাশাপাশি সম্প্রতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাইড্রাফেসিয়াল। এর প্রতি অনেকের রয়েছে আকর্ষণ, আবার অনেকের মধ্য়েই আছে বিভ্রান্তি।
হাইড্রাফেশিয়াল কী
এই ফেসিয়ালে ভরটেক্স প্রযুক্তির হাইড্রা মেশিন ব্যবহার করা হয়। এই মেশিন ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মতো ত্বকের গভীর থেকে ময়লা তুলে আনে এবং ত্বকের উপরিভাগে জমা হওয়া মরা কোষ সরিয়ে ত্বক পরিচ্ছন্ন করে। এই ফেসিয়ালে মেশিনের সাহায্যে ত্বকের গভীর স্তরে সেরাম পৌঁছে দেওয়া হয়। ফলে ত্বকের যেসব কোষ নির্জীব হয়ে যায়, সেগুলো পুনরায় সতেজ হয়ে ওঠে। এ ছাড়া হাইড্রাফেসিয়ালের সাহায্যে কিছু জেল ব্যবহার করে তা ত্বকের অভ্যন্তরে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর ব্যবহার করা হয় এলইডি মাস্ক, যা ত্বকে সেরাম ও জেল, অর্থাৎ হাইড্রেশন লক করতে সাহায্য করে। ত্বকের ধরন বুঝে হাইড্রাফেসিয়ালে সেরাম বেছে নেওয়া হয়।
হাইড্রাফেশিয়াল একটু সময়সাপেক্ষ। প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগে যায়। তবে এর প্রভাব ত্বকে ১৫ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত বেশ ভালোভাবে বোঝা যায়। হাইড্রাফেশিয়াল অন্য সাধারণ ফেসিয়ালের তুলনায় খানিকটা ব্যয়সাপেক্ষ। ত্বকের ধরন ও সমস্যা অনুযায়ী এটি করাতে খরচ পড়তে পারে ১ হাজার ৮০০ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। হাইড্রাফেসিয়াল করার আগে অবশ্যই বয়সের ব্যাপারটিও লক্ষ রাখতে হবে। সাধারণত বয়স ২০ বছরের নিচে হলে এই ফেসিয়াল না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।উপকারিতা
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
- ত্বকের কালো দাগ কমে আসে ও ব্রণ কমে যায়।
- ত্বকে নতুন কোষ জন্মায়।
- মেছতা দূর হয়।
- যাঁদের ত্বকে বলিরেখা পড়েছে এবং প্রচুর ব্রণের প্রবণতা রয়েছে, তাঁদের জন্য হাইড্রাফেসিয়াল একটি সমাধান হতে পারে।
বাড়িতে হাইড্রাফেশিয়াল
বিউটি স্যালনে হাইড্রাফেশিয়াল নেওয়া সবচেয়ে ভালো। কিন্তু খরচের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চাইলে ঘরোয়া পদ্ধতিতেও এটি করা যায়। হারমনি স্পার বিউটি এক্সপার্ট রহিমা সুলতানা রিতা বলেন, ‘হাইড্রাফেশিয়াল নাম শুনে বোঝাই যায় যে এই ফেসিয়ালের মাধ্যমে ত্বক হাইড্রেট রাখার চেষ্টা করা হয়। তবে ভেতর থেকে হাইড্রেট রাখার জন্য আমাদের প্রথমে শরীরে পানি ও তরলজাতীয় খাবারের জোগান দিতে হবে।’যেভাবে করবেন
- প্রথমে ত্বকে ডাবল ক্লিনজিং করতে হবে। এরপর একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে মুখে ভাপ দিলে ত্বকের পোরসগুলো খুলে যাবে।
- পরবর্তী ধাপে ত্বক ভালোমতো স্ক্রাবিং করুন।
- ব্রণ স্টিক দিয়ে ব্ল্যাক হেডস ও হোয়াইট হেডস বের করে ফেলুন।
- এরপর প্যাক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে চিয়াসিড, বিট, মধু ইত্যাদির মিশ্রণ। এ ছাড়া অ্যালোভেরা জেল ও চিয়াসিড একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে ব্যবহারের ফলে হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
- এরপর ত্বকের সমস্যা বুঝে একটি টোনার ব্যবহার করুন। শসার রস টোনার হিসেবে ভালো কাজ করে। চাইলে এটিও টোনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। সবশেষে ত্বক ময়শ্চারাইজ করতে একটি হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।