রাজশাহীর বাঘায় ১৮ কেজি মাংস ও ১০০ ডিম খাওয়া সেই বাবুল আক্তার (৫০) আর নেই। সোমবার রাত ১১টায় নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়েছে। ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন।
জানা যায়, বাবুল ২০ থেকে ২৫ কেজি ওজনের একটি কাঁঠাল নিমিষেই খেয়ে ফেলতেন। বিদ্যুৎগতিতে ১১ মন ওজনের কাঠের গুল একাই কাঁধে নিয়ে বহন করতেন। এক দৌড়ে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতেন স্বাভাবিকভাবে। টানা ৪ ঘণ্টা সাঁতার কেটেও ক্লান্তি বোধ করতেন না। ১২৫ কেজি ওজনের বিশাল দেহ নিয়ে অনায়াসে গাছে উঠে ডাব পেড়ে খেতেন।
বাবুলের স্ত্রী লাইলা বেগম বলেন, আমার শাশুড়ি বলতেন, আমার স্বামী ১৯৭৩ সালে জšে§র পরপরই নাকি পৌনে এক কেজি করে গরুর দুধ পান করতেন। তিনি (বাবুল) প্রাপ্ত বয়সে প্রতিদিন সকালের নাস্তায় ৫ কেজি গরুর মাংস খেতেন অথবা ২৫ থেকে ৩০টি মুরগির ডিম। এটা ছিল তার স্বাভাবিক খাবার। আর কেউ বাজি ধরলে ১০ থেকে ১৫ কেজি মাংস ও ৫০ থেকে ১০০টি ডিম অনায়াসে খেয়ে ফেলতেন। বয়স বৃদ্ধির পর শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে চিকিৎসকের কথামতো খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন।
বাবুলের মেয়ে যুথি খাতুন বলেন, বাবা একজন শক্তিশালী মানুষ ছিলেন। তার বিশাল দেহ আর অস্বাভাবিক খাওয়ার অভ্যাসের কারণে তাকে অনেকে ‘খাদক’ বলে ডাকতেন।
ছেলে নবাব আলী বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জীবনে প্রথমবারের মতো বন্ধুদের সঙ্গে তিনি রাজধানী ঢাকায় গিয়েছিলেন। ধানমন্ডিতে ‘ভূত রেস্তোরা’ নামে একটি হোটেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তখন বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে ওই হোটেলে শতাধিক লোকের সামনে খাসির ১৮ কেজি মাংস ও ১০০টি ডিম এক টেবিলে বসে খেয়েছিলেন। এরপরই তার নাম মিডিয়ায় উঠে আসে। সে সময় অদ্ভুত এই খাওয়ার কাহিনি তুলে ধরে ‘খাদক’, ‘ভোজন রসিক’সহ নানা নামে বাবাকে নিয়ে খবর প্রচার করা হয়েছিল।
মনিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বাবুল আক্তারের অনেক জমি ছিল। এসব জমি বিক্রি করে ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া করতেন। এলাকায় সবার প্রিয় ছিলেন বাবুল। তার মৃত্যুতে স্থানীয়দের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।