যুক্তরাষ্ট্রের কম্পানি এক্সন মবিল বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহ দেখিয়ে গত বছর দুই দফায় প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। এবার তাদের প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন বহুজাতিক কম্পানিটির একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে বঙ্গোপসাগরে ব্লক বরাদ্দ এবং নানা বিষয় নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। এ সময় জ্বালানিসচিব মো. নূরুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সমুদ্রে ২৬টি ব্লক বরাদ্দ দিতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের সব কাজ শেষ করেছে পেট্রোবাংলা। সংস্থাটির চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘আগামী মাসের মধ্যে দরপত্রটি ছাড়া হবে।
এদিকে আন্তর্জাতিক কম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করতে এরই মধ্যে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তির (পিএসসি) সংশোধন করা হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে মডেল পিএসসিসহ অন্যান্য কার্যক্রমে অনুমোদনও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গত বছরের মার্চে প্রথম আগ্রহ প্রকাশ করে এক্সন মবিল। ওই সময় তারা গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লক ইজারা চেয়েছিল।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের অগভীর ও গভীর অংশকে মোট ২৬টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে অগভীর অংশে ব্লক ১১টি। আর গভীর সমুদ্রে ব্লক ১৫টি। অগভীর ব্লকে পানির গভীরতা ২০০ মিটার পর্যন্ত। এরপর গভীর সমুদ্র ব্লক। বিদেশি কম্পানিকে ব্লক ইজারা দেওয়ার পর তারা সেখানে গ্যাস আবিষ্কার করে। কিন্তু গ্যাসের মূল্য তাদের কম দিয়েছে বাংলাদেশ এই অজুহাতে তারা বাংলাদেশ ছেড়েছে। অথচ এসব গ্যাস উত্তোলন করা গেলে বিদেশ থেকে অতিরিক্ত দামে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করার দরকার হতো না। এখন টিকে আছে শুধু ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ওএনজিসি বিদেশ লিমিটেড (ওভিএল)। প্রতিষ্ঠানটি অগভীর সমুদ্রের ৪ নম্বর ব্লকে কাঞ্চন নামের এলাকায় অনুসন্ধান কূপ খনন করে গ্যাস পায়নি। পরে আরেকটি কূপ খননের কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, নতুন মডেল পিএসসি অনেকটা ভিন্ন। ২০১৯ সালের মডেল পিএসসি অনুযায়ী, অগভীর ও গভীর সমুদ্রের প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৫.৬ ও ৭.২৫ ডলার। সংশোধিত পিএসসিতে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে ব্রেন্ড ক্রুডের ১০ শতাংশ দরের সমান। অর্থাৎ বিশ্ববাজারে ক্রুডের দাম ১০০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে ১০ ডলার।