রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা বাংলাদেশ সরকারের প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এ বিষয়ে দ্রুততম এবং স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো ভূমিকা পালনের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, “প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিরাজমান হতাশা তাদেরকে আইন বিরোধী কর্মকা-ে সম্পৃক্ত করতে পারে যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।”
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সাথে আজ অপরাহ্নে প্রধানমন্ত্রীর কাযালয়ে (পিএমও) রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিভিন্ন বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহনে মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
পিএমও এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানায়, আলোচনা সভায় তাঁরা বাংলাদেশে অস্থায়ী ভিত্তিতে আশ্রয়গ্রহণকারী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন, স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর বিরূপ প্রভাব ও তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মানবিক সহায়তা ও তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিব ও সচিবগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মুখ্য সচিব সভায় আরও বলেন, মানবিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে যে সকল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তা তাদের প্রত্যাবাসনের পরে রাখাইনে টেকসই সহাবস্থানে সহায়ক হবে।
তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ও আগ্রহ নিয়ে কাজ করার জন্য রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণকে ধন্যবাদ জানান। আলোচনা সভায় উপস্থিত রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারগণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে তাঁদের সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তাঁরা স্থানীয় সম্প্রদায়ের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ রোহিঙ্গাদের আত্মনির্ভরশীলতার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
আলোচনা সভায় কানাডা ও জাপানের রাষ্ট্রদূত, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার উপ রাষ্ট্রদূত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ডেলিগেশনের চার্জ দ্যা এফেয়ার্স ও ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রিজিওনাল রিফিউজি কো-অর্ডিনেটর উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ইউএনএইচসিআর-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ, ইউএনআরসি-এর হেড অব অরগানাইজেশন ও ব্র্যাক-এর নির্বাহী পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে জননিরাপত্তা বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।