মৌলভীবাজারে নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘মানুষের জন্য ন্যায়বিচারভিত্তিক ও শোষণমুক্ত জীবনমান চাওয়া আমাদের কর্তব্য। আমরা বিচারকের আসনে বসে বিচার করি। কিন্তু বিচারের অর্থ হচ্ছে- প্রত্যেক পরিবারে, প্রত্যেক সমাজে ন্যায়বিচার করা। এ জন্য ন্যায়বিচারক হওয়া খুব জরুরি। সেটা আপনি যে স্তরেই থাকুন না কেন। বিচারকের ওপর দায়িত্ব প্রথাগত বিচার করা। এ ক্ষেত্রে নির্মোহ বিচার করতে হবে। কিন্তু রোগের সমাধান নিহিত নৈতিক বোধের মধ্যে। অপরাধ কখন হয়? যখন আমাদের ভিতরে মনুষ্যত্ব মরে যায়।’ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রধান বিচারপতির মৌলভীবাজার আগমন উপলক্ষে সংবর্ধনার আয়োজন করে মৌলভীবাজার পৌরসভা।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে জেলা-উপজেলা, থানা-গ্রাম, এমনকি পাড়া-মহল্লায় নাগরিক সচেতনতার বিকল্প নেই। নাগরিক অধিকার ও দায়িত্বের যৌথ প্রক্রিয়া প্রয়োগে সবার আগে দরকার সচেতনতা ও শিক্ষা। প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে নানা আয়োজন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা জসীম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা ও দায়রা জজ আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর, প্রধান বিচারপতির স্ত্রী হাফিসা বানু, জেলা প্রশাসক ডক্টর ঊর্মি বিনতে সালাম, পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. কামাল হোসেন, কুলাউড়া পৌর মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন, কমলগঞ্জ পৌর মেয়র জুয়েল আহমদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডক্টর ফজলুল আলী, বয়োজ্যেষ্ঠ আইনজীবী শান্তিপদ ঘোষ, মুজিবুর রহমান, পৌরসভার প্যানেল মেয়র নাহিদ আহমদ, রাধাপদ দেব সজল, প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত প্রমুখ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘পৃথিবী তার সবুজ দিয়ে, বৃক্ষ দিয়ে আমাদের ভালোবেসেছিল। পরিবর্তে আমরা তাকে দিয়েছি যুদ্ধের দাবানল। স্মরণকালের ভয়াবহ এই যে তাপপ্রবাহ, প্রকৃতি তার নিয়মে প্রতিশোধ নিচ্ছে। সৌন্দর্যের এই জেলায় (মৌলভীবাজারে) বলতে চাই, আসুন প্রকৃতিকে ভালোবাসি। বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী, সুস্থ-সুন্দর পরিবেশ রেখে যেতে না পারলে একদিন তারা আমাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। এ ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। স্ব-স্ব জেলায় প্রাকৃতিক সম্পদ, বনাঞ্চল, পাহাড়, জলাভূমি-জলাশয়, নদনদী, স্বাভাবিক প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে।