কোরবানির ঈদে ফ্রিজের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষ করে ডিপ ফ্রিজের চাহিদা বাড়ে। তবে এবার কোরবানির ঈদের চিত্র ভিন্ন। বিক্রেতারা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কিছুটা কমে গেছে, অন্যদিকে ডলার ও কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সব ধরনের ফ্রিজের দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানির ঈদে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ফ্রিজ বিক্রি কমেছে।
রাজধানীতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুম ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির ঈদকে ঘিরে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো সব শ্রেণির ক্রেতাকে লক্ষ্য করে ছাড়সহ নানা অফার দিচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বছরের স্বাভাবিক সময়ে যে পরিমাণ ফ্রিজ বিক্রি হয়, শুধু দুটি ঈদকে ঘিরেই এর চেয়ে বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়ে থাকে।একসময় ক্রেতারা শুধু দামের বিষয়টি দেখত, এখন ফ্রিজ কেনার সময় দামের সঙ্গে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী, ডিজাইন, কম্প্রেসর, বিক্রয়োত্তর সেবা ও আধুনিক প্রযুক্তির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে অপেক্ষাকৃত কম দামে মোটামুটি ভালো মানের ফ্রিজ তৈরিতে সক্ষম হওয়ায় দেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজ জনপ্রিয় হচ্ছে।
ওয়ালটন, মিনিস্টার, সিঙ্গারসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুম ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নানা ডিজাইন ও রঙের ডিপ ও সাধারণ ফ্রিজ নিয়ে এসেছে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো। ক্রেতা আকর্ষণের জন্য ফ্রিজ বিক্রিতে ছাড়, ডিজিটাল ক্যাম্পেইন, স্ক্র্যাচ কার্ড অফারসহ ১২ মাস পর্যন্ত সহজ কিস্তির সুবিধাও দেওয়া হয়েছে।এর পরও ক্রেতা টানতে পারছে না কোম্পানিগুলো। মূলত এবার মূল্যস্ফীতি গ্রাহকদের ওপর যে চাপ তৈরি করেছে, তারই প্রভাব পড়েছে ফ্রিজের বাজারেও।
ঈদ উপলক্ষে নানা রং ও ডিজাইনের বেশ কিছু নতুন ফ্রিজ নিয়ে এসেছে দেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন। মধ্য বাড্ডার ওয়ালটন শোরুমের ম্যানেজার মোস্তফা কামাল বলেন, ‘সাধারণত প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে ঘিরে আমাদের ফ্রিজ সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। এ বছরও সেই পরিকল্পনা নিয়ে বাজারে নতুন ডিজাইনের ফ্রিজ আনা হয়েছে।ক্রেতা আকর্ষণে ঈদকে ঘিরে আমরা বিক্রিতে বিভিন্ন অফার দিয়েছি। প্রতিটি ওয়ালটন ফ্রিজে ১০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ ডিসকাউন্টসহ ডিজিটাল ক্যাম্পেইন অফার দেওয়া হয়েছে।’
মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিক্রি গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে। গত বছর কোরবানির ঈদে এই শোরুমে দুই হাজার ৩০০ ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। ১২৫ লিটার থেকে ৩০০ লিটার পর্যন্ত ডিপ ফ্রিজ রয়েছে। দাম ২৭ হাজার থেকে ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। সাধারণ ফ্রিজ ৯৩ লিটার থেকে ৬১৯ লিটার পর্যন্ত রয়েছে, সেগুলোর দাম ১৭ হাজার ৫০০ থেকে এক লাখ ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।’
বাড্ডার সিঙ্গার শোরুমের ম্যানেজার মো. রাশেদুর রহমান বলেন, ‘ডিপ ফ্রিজটি মূলত কোরবানির ঈদেই বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। তবে এবার গতবারের চেয়ে ১০ শতাংশ কম বিক্রি হচ্ছে। গ্রাহকদের জন্য ঈদ উপলক্ষে রেফ্রিজারেটরে আট হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ডিসকাউন্ট সুবিধাসহ স্ক্র্যাচ কার্ড ঘষলেই রেফ্রিজারেটর এবং ডিপ ফ্রিজে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট রয়েছে। একই সঙ্গে রয়েছে ১২ মাস পর্যন্ত সহজ কিস্তির সুবিধা।’