অর্থভূবন ডেস্ক:
বাংলাদেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন সাড়ে চার মাস আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গত বৃহস্পতিবার এই বাজারে ৩৮১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গত সাড়ে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৮ মার্চ ডিএসইতে সর্বনিম্ন ২৭২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ায় লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে। আবার লেনদেনও ঘুরপাক খাচ্ছে হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানিকে ঘিরে। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ সময় ধরেই বেশির ভাগ শেয়ারে লাভের মুখ দেখছেন না। আবার অনেক শেয়ারের কেনাবেচায়ও অংশ নিতে পারছে না বিনিয়োগকারীদের একটা বড় অংশ। কারণ, ভালো ভালো শেয়ারও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে।
শেয়ারবাজারের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে আজকের লেনদেনের প্রায় এক–পঞ্চমাংশ বা ২১ শতাংশ ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের দখলে। লেনদেনে এ খাতের এগিয়ে থাকার পেছনে মুখ্য ভূমিকা ছিল দুটি কোম্পানির। কোম্পানি দুটি হলো ফু–ওয়াং ফুড ও এমারেল্ড অয়েল।
ঢাকার বাজারে বৃহস্পতিবার খাদ্য খাতের কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফু–ওয়াং ফুড ও এমারেল্ড অয়েলের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৩ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১১ শতাংশ। এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষ ৫ কোম্পানির তালিকায়ও ছিল কোম্পানি দুটি। এর মধ্যে ফু–ওয়াং ফুড শীর্ষে, আর এমারেল্ড অয়েল চতুর্থ স্থানে ছিল।
ডিএসইতে বেশ কিছুদিন ধরে খাতভিত্তিতে খাদ্য ও বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারই বেশি কেনাবেচা হচ্ছিল। মূল্য বৃদ্ধিতেও শক্তিশালী অবস্থানে ছিল বিমা খাত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী মিডিয়াকে বলেন, ‘বাজারে কোনো একটি খাত বা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লেই বিনিয়োগকারীরা মুনাফা ধরতে সেদিকে ছোটেন। এ ক্ষেত্রে আবার কার আগে কে মুনাফা তুলে নেবেন—সেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তাতে বেড়ে যায় বিক্রির চাপ।
এই প্রবণতা বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে। এ কারণে আমরা দেখছি, বাজারে মাঝেমধ্যে গতি ফিরলেও সেটি বেশি দিন টেকসই হচ্ছে না।’
বাজারে যখন টেকসই ধারা থাকে না, তখন নতুন কোনো বিনিয়োগও আসে না বলে জানান একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের ৬ হাজার ২৯৭ পয়েন্টেই অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন হওয়া ৩২৪ কোম্পানির মধ্যে ১৬৮টিরই দাম ছিল অপরিবর্তিত। আর দাম বেড়েছে ৭২টির এবং কমেছে ৮৪টি কোম্পানির শেয়ারে দাম।