Thursday, January 16, 2025

হাওয়া হয় বিনিয়োগের টাকাও

রাণীনগরে এমটিএফই অ্যাপসের ফাঁদে সর্বশান্ত হাজারও গ্রাহক

অর্থভুবন প্রতিবেদক, রাণীনগর (নওগাঁ) 

 

রাণীনগরে বিদেশি ‘এমটিএফই’ নামে অ্যাপসের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন হাজারও মানুষ। ওই অ্যাপসের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে দ্রুত আয় করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন তারা। সম্প্রতি অ্যাপস থেকে উধাও হয়ে গেছে বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা। উপজেলার শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল এ অ্যাপসটি। যেখানে প্রতিদিন সাধারণ মানুষ টাকা বিনিয়োগ করে দ্রুত আয় করার স্বপ্ন দেখছিলেন। এরই মধ্যে হঠাৎ করে অ্যাপস থেকে বিভিন্ন স্থানের মতো রাণীনগরের হাজারও বিনিয়োগকারীর কোটি কোটি টাকা উধাও হয়ে গেছে। এতে যারা দ্রুত আয় করার স্বপ্ন নিয়ে বিনিয়োগ করেছিলেন তারা এখন নিঃস্ব। উল্টো বিনিয়োগকারীদের কাঁধে ঋণের বোঝা ধরিয়ে দিয়েছে এমটিএফই। জানা গেছে, বিদেশি অ্যাপস মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ (এমটিএফই) নামের একটি অনলাইন ট্রেডিংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। এমটিএফই অ্যাপসটি চালু থাকা অবস্থায় অ্যাকাউন্ট চালু করার জন্য সর্বনিম্ন ২৬ ডলারের সমপরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে হতো। এরপর ইচ্ছামতো বিনিযোগ করা যেত। সে টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন পাওয়া যাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ। আর এসব প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলায় প্রচারণা চালিয়েছিলেন কিছু যুবক। আর এতেই হুমড়ি খেয়ে অ্যাপসটিতে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন বিভিন্ন পেশার হাজারও মানুষ। সে অ্যাকাউন্টে কেউ জমি বন্ধক রেখে, কেউবা জমানো টাকা আবার কেউবা বিভিন্ন এনজিও থেকে ধারদেনা করে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। তথ্য মতে, উপজেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি মানুষ এ অ্যাপসের ফাঁদে পড়েন। কেউ ৫০ হাজার, কেউ এক লাখ আবার কেউ কেউ ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছিলেন। সব মিলিয়ে রাণীনগর উপজেলা থেকে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি উপজেলাতে এমটিএফই অ্যাপসের কয়েকজন সিও এবং বস হিসাবেও পরিচয় দিয়ে কাজ করতেন। তারা কাউকে অ্যাকাউন্ট খুলে দিলে কোম্পানি থেকে তাদের কমিশনও দেওয়া হতো। ভুক্তভোগীরা জানান, এ আ্যাপসে অ্যাকাউন্ট খোলার পর বিনোয়োগ করা টাকার ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হতো। হঠাৎ করেই অ্যাকাউন্ট থেকে তারা আর টাকা উঠাতে পারছিলেন না। প্রতারণা করে তাদের টাকাগুলো নিয়ে উধাও হয়েছে এমটিএফই। লাভের আশায় এসে উল্টা ঋণের বোঝা ধরিয়ে দিয়েছে এমটিএফই। এতে করে বিনিয়োগকারীরা এখন সর্বস্বান্ত। তবে প্রথম দিকে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তারা মুনাফা তুলে নিয়েছেন। শেষের দিকে যারা ছিলেন তারা এখন সর্বস্বান্ত। উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকার মো. বিশাল জানান, ‘লাভের আশায় জমানো ২৪ হাজার টাকা অ্যাপসে ইনভেস্ট করেছিলাম। কিছুদিন তারা ওই টাকার ওপর লাভও দিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কিছুদিন আগ থেকে অ্যাপসটি থেকে টাকা উঠানো বন্ধ করে দেয়। এখন শুনছি তারা টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। এতে আমার প্রায় ৩০ হাজার টাকা চলে গেছে।’ রাণীনগর বাজারের মেহেদী খন্দকার বলেন, ‘লাভের আশায় ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। সব ডলার কেটে নিয়ে উল্টো অ্যাকাউন্টে বিশাল অংকের মাইনাস ডলার ধরিয়ে দিয়েছে। এখন উল্টা ঋণের বোঝা ধরিয়ে দিয়েছে এমটিএফই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা পরিশোধ করতে বলেছে। ২৪ ঘণ্টা পর আবার তাদের অ্যাপসে নোটিশ দিচ্ছে, ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে, আপনি ঋণ পরিশোধ করেননি। আপনাকে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হলো, এর মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে আপনাকে আইনি নোটিশ পাঠানো হবে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন তারা।’ উপজেলায় মাসুদ রানা নামে ব্যবসায়ী এমটিএফই অ্যাপসের সিও হিসাবে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির খবর পাওয়া গেলে তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এমটিএফই অ্যাপসের সিও নন বলে দাবি করেন। এ সময় তিনি বলেন, তিনি একজন বিনিয়োগকারী। অ্যাপসে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। টাকা উঠিয়েছেনও। এর মধ্যে তার ২৪ হাজার টাকা চলে গেছে। এছাড়া কাউকে অ্যাপসে টাকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেননি বলেও দাবি তার।

 

spot_imgspot_img

ছবিটা তুলে রাখুন ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে : ড. ইউনূস

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...

মায়ের ঘুমপাড়ানি সুর শান্তিধারা

আমাদের জোনাকজ্বলা গ্রাম বিদ্যুৎ তখনও দেখেনি। সন্ধ্যার কাছে বিকেল নতজানু হতেই সবুজ পাহাড়েরা মিশকালো হয়ে যায়। ফলে- আমরা চালের ফুটো দিয়ে চাঁদ দেখি, আর...

মাহবুবা ফারজানা নতুন তথ্য সচিব

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বেগম মাহবুবা ফারজানা। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ছিলেন। তাকে সচিব পদে পদোন্নতি...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here