নিজস্ব প্রতিবেদক,অর্থভুবন
বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য ও আন্তর্জাতিক মানের করতে অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। গুলশানে ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠকে দলটির একটি প্রতিনিধি দল এ কথা জানান। পূর্বনির্ধারিত এ বৈঠকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া, নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন বা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রয়োজনীয়তা, এবি পার্টির
রাজনৈতিক অবস্থানসহ নানা বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
এবি পার্টির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া এবং এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব ও মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস ছাড়াও ঢাকা দপ্তরের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান উপস্থিত ছিলেন।
পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এবি পার্টি বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরে। এতে বলা হয়েছে, বৈঠকে সামনের দিনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতায় এটা বারবার প্রমাণ হয় যে, দলীয় সরকার কখনই একটি বিশ্বাসযোগ্য ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে না।
ঢাকা-১৭ আসনের সাম্প্রতিক উপনির্বাচন প্রমাণ করেছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রতিনিধি দলটি আবাসিক প্রতিনিধিকে গত বছরের ডিসেম্বরে এবি পার্টি ঘোষিত দুই দফা দাবির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলে, সেখানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করা হয়েছিল। আশা করা যায়, এতে সব প্রধান রাজনৈতিক দল সম্মত হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বর্তমান জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এর থেকে উত্তরণ এবং পরবর্তী নতুন প্রজন্মের রাজনীতি ও এর বিপরীতে রাষ্ট্রযন্ত্রের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানার যে আগ্রহ, এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ তাকে স্বাগত জানান। এবি পার্টি পুরনো ধারার গতানুগতিক বংশপরম্পরার রাজনীতি থেকে পরিত্রাণের জন্য একটি নীতিভিত্তিক, সমস্যা সমাধানের রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরে।’
গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এবি পার্টি বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভ এবং সমাবেশের সময় দেশজুড়ে ব্যাপকভিত্তিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়ে দলীয় উদ্বেগ তুলে ধরে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করা এবং অন্য একটি বিতর্কিত সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে এটা প্রতিস্থাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেন, এটা চোখে ধুলা দেওয়ার একটি অপপ্রয়াস এবং নতুন বোতলে পুরনো মদ উপস্থাপনের উজ্জ্বল নজির।’
জাতিসংঘের প্রতিনিধি নির্বাচনপরবর্তী সংস্কার সম্পর্কে এবি পার্টির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে আগ্রহ প্রকাশ করলে এবি পার্টি প্রতিনিধি দল এ ব্যাপারে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও খসড়া পলিসিসমূহ তুলে ধরে রাষ্ট্র সংস্কারের নীতিসমূহের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।