Sunday, October 6, 2024

ইলেকট্রনিক যন্ত্র শিশুর বিকাশে বাধা

বর্তমান বিশ্বে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম মুঠোফোন। এ ছাড়া এই যন্ত্র শিক্ষা ও গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আজকাল নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির (ছোট পরিবার) বেশির ভাগ মা শিশুদের হাতে যন্ত্রটি দিয়ে নিজেদের কাজ করে থাকেন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, মায়েরা শিশুকে খাওয়ানোর সময় মুঠোফোন ব্যবহার করেন। একসময় অভ্যাসটা এমন পর্যায়ে যায় যে এটি ছাড়া শিশুকে খাওয়ানো সম্ভব হয় না। এ ছাড়া দীর্ঘদিন মুঠোফোন ব্যবহার করলে তাদের কারও কারও মধ্যে ‘স্ক্রিন ডিপেনডেন্সি ডিজঅর্ডারস’ তৈরি হতে পারে।

স্ক্রিন ডিপেনডেন্সি ডিজঅর্ডারসে শিশুদের মধ্যে কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। শারীরিক সমস্যা হচ্ছে ঘুমের অসুবিধা, পিঠ বা কোমরে ব্যথা, মাথাব্যথা, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, ওজন বৃদ্ধি, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি। কারও কারও মধ্যে আবেগময় উপসর্গ, যেমন উদ্বেগ, অসততা, একাকিত্ব, অপরাধবোধ ইত্যাদি হতে পারে। তারা বাইরে যেতে চায় না। দীর্ঘ সময় মুঠোফোন ব্যবহারের ফলে নানা মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।

মুঠোফোন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুরা। একটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের উপযুক্ত সময় প্রথম পাঁচ বছর। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ হচ্ছে কি না, কীভাবে বুঝবেন।

এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে শিশুর কথা বলতে শেখা, হাঁটাচলা শেখা এবং স্বাভাবিক বুদ্ধির বিকাশ হয়। তখন দীর্ঘ সময় মুঠোফোনে গেম খেলা, ইউটিউব দেখার ফলে স্বাভাবিক উদ্দীপনামূলক খেলাধুলা হয় না। এতে শিশুর স্নায়বিক বিকাশ ব্যাহত হয়। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ নির্ভর করে পরিবেশ ও অন্যান্য শিশুর সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদানের ওপর। বলা হয়, শিশু দেখতে দেখতে এবং অন্যদের সঙ্গে খেলতে খেলতে শেখে।

শিশু বেশি সময় মুঠোফোনে থাকলে মা-বাবার সঙ্গে তার সামাজিক যোগাযোগ এবং সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে মেলামেশা একেবারেই কমে যায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, অতিরিক্ত মুঠোফোন ও টিভি দেখলে পরবর্তী সময়ে শিশুদের মধ্যে অতিমাত্রায় চঞ্চলতা দেখা দিতে পারে, ঘুমের সময় কমে গেলে শিশুর বিকাশ ব্যাহত হতে পারে।

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড টেলিভিশন কমিটি শিশুদের ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেমন—

  • দুই থেকে পাঁচ বয়সের শিশুরা সারা দিনে এক থেকে দুই ঘণ্টা স্ক্রিন দেখতে পারবে। তা–ও সেটি মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান হতে হবে।

  • দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে মুঠোফোন না দেওয়া ভালো।

  • শিশুদের শোবার কক্ষ থেকে টেলিভিশন সরিয়ে ফেলা উচিত।

  • শিশুদের বিকাশের ক্ষেত্রে কিছু উদ্দীপনা দিতে হবে, যেমন শিশুর সঙ্গে কথা বলা, গল্প করা, ছড়া বলা, গান করা ইত্যাদি।

অতিরিক্ত মুঠোফোনের ব্যবহার শিশুদের সামাজিক দক্ষতা ও মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে শিশুদের মুখোমুখি যোগাযোগ ও হাতের কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হয়। শিশুদের শিক্ষার কাজে ডিভাইস লাগতে পারে, কিন্তু সেটা প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়।

  • অধ্যাপক গোপেন কুমার কুন্ডু, সাবেক চেয়ারম্যান, শিশু নিউরোলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ

spot_imgspot_img

ইসরাইলে হামলার ঘটনা হস্তক্ষেপ না করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে ইরান

 ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগশি বুধবার ইসরাইলে ইরানের হামলার ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ না করতে সতর্ক করেছেন। তেহরান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বার্তাটি তেহরানের সুইস...

জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে অভিনন্দন চীনের শি’র

একটি ‘গঠনমূলক ও স্থিতিশীল’ সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগকে স্বাগত জানিয়ে জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বেইজিং থেকে আজ...

জাতিসংঘের প্রধানকে ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণা ইসরাইলের

ইসরাইলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সুনিদিষ্টভাবে নিন্দা করতে ব্যর্থতার অভিযোগে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণা করেছে ইসরাইল।  আজ বুধবার ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাৎজ’র এক বিবৃতির উদ্ধৃতি...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here