অর্থভুবন ডেস্ক
চিরায়ত খাবারের অভ্যাস বদলাতে হলে নিজেকে সুবুদ্ধিসম্পন্ন হতে হবে। অর্থাৎ প্রতিদিনের খাবারের অভ্যাস বদলাতে হলে চাই ফুড লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন। এ জন্য ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে। যেমন-ধরুন বেশি ওজনের লোক সে তার খাবারের ক্যালরির সঙ্গে সমন্বয় করবে ব্যায়ামের মাধ্যমে ক্যালরি ব্যয় করে। মনে রাখতে হবে-ওজন বেশি থেকেই সৃষ্টি নেয় হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি। ডায়েটারি জীবনধারা বদলাতে হলে কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-
▶ খাবারের এক তৃতীয়াংশ থাকবে কাঁচা অথবা হালকা রান্না করা শাকসবজি ও ফল। এগুলোতে রয়েছে অনেক পুষ্টি। আবার শর্করা ও আঁশের জন্য সহজেই ক্ষুধা নিবারণ হবে এবং অন্য খাবারের চাহিদা কমবে।
▶ খেতে হবে ভুসিযুক্ত আটার রুটি, ভুট্টা, লাল চাল, পাউরুটি, পাস্তা, ডাল, ময়দা ও সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল এগুলোতে আছে শর্করা ও আঁশ।
▶ সংরক্ষিত খাবার ও বিশুদ্ধ চিনি বাদ দিতে হবে। চিনি ও মিষ্টি খাবারে ওজন বেড়ে যেতে পারে। বাণিজ্যিক খাবারে চিনি বেশি থাকে। যেমন-টিনজাত ফল, সংরক্ষিত ফল, বাণিজ্যিক সিরিয়াল, কেক, বিস্কুট, কুকিজ, মিষ্টি, কর্ণফ্লেক্স, সফট ড্রিংকস, বোতলজাত ফলের রস, অ্যালকোহল ইত্যাদি। এছাড়া চকলেট, ক্যান্ডি তো আছেই। সারা দিনের ক্যালরির ১০ শতাংশ চিনি আপনি গ্রহণ করতে পারেন। ইচ্ছা করলে আপনি খাবার থেকে ৪৫ শতাংশ চিনি বাদ দিতে পারেন। এটা অর্জন করা মোটেও কঠিন কাজ নয়।
▶ প্রাকৃতিকভাবে চর্বি উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন খাবার। খুব সহজেই এ ক্যালরি কমানো যেতে পারে। যেমন-
* মাংসের পরিমাণ দৈনিক ৭৫-১০০ গ্রামের বেশি হবে না। খেতে হবে চর্বি ছাড়া কচি মাংস। রান্নার আগেই দৃশ্যমান চর্বি ফেলে দিতে হবে। মাংসের সঙ্গে খেতে হবে পাস্তা, ভাত, রুটি, সিম, ডাল ইত্যাদি।
* ভাজা খাবার বাদ দিতে হবে। এর পরিবর্তে খাবেন গ্রিল, শিক, ভাঁপানো অথবা কেক।
* লাল মাংস না খেয়ে খেতে হবে সাদা মাংস অর্থাৎ মুরগি, হাঁস, কবুতর, পাখির মাংস। রান্নার আগে হাঁস-মুরগির চর্বি ফেলে দিতে হবে।
* মাছে সম্পৃক্ত চর্বি নেই। এতে অতিরিক্ত সুবিধা হিসাবে পাওয়া যাবে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। যা ত্বকের জন্য উপকারী। তবে ছোট মাছই উত্তম।
* বাদ দিতে হবে স্লাইস করা মাংস যা বার্গার, স্যান্ডউইচে ব্যবহার করা হয়। সসেজ বাদ দিলেও ভালো। কারণ এগুলোতে চর্বি দৃশ্যমান থাকে না।
* সীমিত করতে হবে মাখন ও মার্জারিন। রান্না করতে হবে পলি আনস্যাচুরেটেড ও মনোআনস্যাচুরেটেড তেল দিয়ে। যেমন-অলিভ ওয়েল, তিলের তেল, বাদাম তেল, সয়াবিন তেল ইত্যাদি।
* স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। সেজন্য বাদ দিতে হবে কেক, পেস্ট্রি, বিস্কুট, আইসক্রিম, কাস্টার্ড, ক্রিম, চকলেট ইত্যাদি দিনে ২৫ গ্রামের মতো চর্বিই যথেষ্ট।
লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা