আমরা যা খেয়ে পেট ভরাই, তা সব সময় খাদ্য নয়। যা শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে, শরীরকে কর্মক্ষম রাখে, সেটাই খাবার হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বেশির ভাগ মানুষই সঠিক খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত নন। ৭৫ ভাগ অসংক্রামক রোগ হয় ভুল খাদ্যাভ্যাসে।
কুসুম ছাড়া ডিম: ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগীরা ডিমের কুসুম খান না। কিন্তু ডিমের গুণাগুণ কুসুমেই থাকে। একটা মাঝারি আকারের ডিমে কোলেস্টেরল মাত্র ১৮৬ মিলিগ্রাম, যা আমাদের শরীরের প্রতিদিনের চাহিদার চেয়ে অনেক কম। কুসুমে ভিটামিন ডি, ই, কে, বি, আয়রন, জিংক, ফলিক অ্যাসিড, কোলিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসহ প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিডও থাকে।
দুধে পানি মেশানো: অনেকে দুধের ফ্যাট কমাতে পানি মিশিয়ে খান। কিন্তু পানি মেশালে দুধের ফ্যাট কমে না, বরং কমে যায় উপকারিতা। উচিত হচ্ছে, দুধ গরম করার পর দুধের ওপরে জমা সর বাদ দেওয়া অথবা কম ফ্যাটের দুধ খাওয়া।
আমিষ কম খাওয়া: অনেকে মাছ-মাংস খেতে চান না। অথচ এগুলো প্রোটিন-জাতীয় খাবার, যা দরকারি। সামুদ্রিক মাছ আরও ভালো। মাংসের চর্বি ক্ষতিকর। তাই গরু-খাসির মাংস খেতে হলে আগে মাংসে লেগে থাকা সাদা চর্বি বাদ দিতে হবে। রান্নার পর ঝোল ছাড়া মাংস খাবেন। কারণ, ঝোল মানেই তেল। মাছের তেল অবশ্য উপকারী। তাই কম তেলে রান্না করা মাছ খান রোজ।
ভাত না খেয়ে রুটি: ডায়াবেটিস বা ওজন কমাতে অনেকে বেশি বেশি রুটি খান। কিন্তু ভাত-রুটি দুটিই শর্করা। সুতরাং যেটাই খাবেন, মেপে খাবেন। চাহিদার অতিরিক্ত খেলেই সমস্যা।
রাতের খাবারের পর দুধ: অনেকে রাতে খাওয়ার পর এক গ্লাস দুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এটি ভালো নয়। কারণ, রাতে খাবারের পর আমাদের কোনো কাজ থাকে না। তাই ক্যালরি তেমন খরচ হয় না। উত্তম হচ্ছে, রাতের খাবার ৮টার মধ্যে খেয়ে রাত ১০টার দিকে পরিমিত দুধ খেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া। রাতের খাবার দেরিতে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে দুধ বিকেলে খান। তবে রাতে ঘুমানোর আগে একটু কুসুম গরম দুধ খেলে ঘুম ভালো হয়।
মাংসের ঝোল দিয়ে রুটি খাওয়া: অনেকে মাংস না খেয়ে মাংসের ঝোল দিয়ে রুটি খান। এটাও খারাপ অভ্যাস। প্রথমত, এখানে আমিষ পাচ্ছে না শরীর। দ্বিতীয়ত, ঝোল মানে তেল খাচ্ছেন। তেলের ক্যালরি মাছ-মাংস বা ভাত-রুটির দ্বিগুণ।
রাতের খাবার বাদ: অনেকেই, বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীরা রাতে খান না। খাবার শরীরের জ্বালানি। কোনো বেলায় না খেলে রক্তের সুগার কমে যেতে পারে, শরীর দুর্বল লাগতে পারে। সুতরাং, সুষম খাবার খেয়ে ডায়াবেটিস ভালো রাখতে হবে।
-
মো. ইকবাল হোসেন, জে্যষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল