ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর
সাংবাদিকদের জন্য গৃহ ও ভূমি বরাদ্দে সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক নেতারা। শুক্রবার ঢাকা সাংবাদিক পরিবার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের বিশেষ সাধারণ সভার উদ্বোধনী অধিবেশনে এ দাবি জানান তারা। সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান সাংবাদিকদের জন্য একটি জায়গা বরাদ্দে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। বক্তব্য দেন, বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কাজী রফিক ও আবু জাফর সূর্য, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সাজ্জাদ আলম খান তপু, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, সাংবাদিক নেতা আশরাফ আলী, খায়রুজ্জামান কামাল প্রমুখ। ঢাকা সাংবাদিক পরিবার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মোহাম্মদ আল-মামুনের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সমিতির সেক্রেটারি মো. মফিজুর রহমান খান বাবু।
প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের গৃহ ও ভূমির বিষয়ে যে দাবি উঠেছে আমি তার সুনির্দিষ্ট একটি সমাধান দিতে চাই। সাভারে বন বিভাগের হাজার একর জায়গা আছে। সেখান থেকে কিছু জায়গা দেওয়ার সুযোগ আছে। এজন্য আমি বলব, আপনারা পাঁচ একর জায়গার চৌহদ্দি উল্লেখ করে দুটি আবেদন করবেন। একটি আমাকে এড্রেস করে করবেন। আমি আমার ইউএনও ও এসি ল্যান্ডকে দিয়ে মেপে বরাদ্দের জন্য ডিসির মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আরেকটা হলো, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ফরোয়ার্ডিং নিয়ে আমি সেটা ভূমি মন্ত্রণালয়ে দেব। দুই জায়গা থেকে কাজটা হলে তাহলে এর সমাধান হবে।
তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি, স্যালুট করি। যতটুকু পারি তাদের উপকারের চেষ্টা করি। কারণ আপনারা আমাদের জন্য, সরকারের জন্য, দেশাবাসীর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন। আমরাও চাই, আপনারা যেন একটা নিরাপদ আশ্রয়ে পরিবার নিয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারেন। সাংবাদিকরা বলেছেন, প্রত্যেকের প্লট দরকার নেই। আমরা যদি অ্যাপার্টমেন্ট করে দিতে পারি তাহলে অল্প জায়গায় বেশি সংখ্যক সাংবাদিক ভাইদের অ্যাকোমোডেট করা যাবে। আমি সেই লক্ষ্যেই কাজ করব।
সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে যেসব দাবি এসেছে, এগুলো প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বাধা আছে বলে আমি মনে করি না। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য সংখ্যা তিন হাজার। এর মধ্যে অধিকাংশেরই মাথার ওপর ছাদ নেই। রাষ্ট্রীয় নীতি হলো বাংলাদেশে কোনো ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। এটি যেহেতু এখন রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে পরিণত হয়েছে, সরকার এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন, তাই সাংবাদিকরা বাইরে থাকবে কেন? এই তিন হাজার সাংবাদিকের যাদের এখনো ভূমি নেই, অনতিবিলম্বে তাদের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠা হওয়া দরকার। যাদের গৃহ নেই, সেই গৃহহীনদের দুঃখ, দুর্দশা দূর করার জন্য সারা দেশে লাখ লাখ গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। তাহলে কেন সাংবাদিকরা এই সুবিধার বাইরে থাকবে?
তিনি আরও বলেন, সরকার ঘোষিত নীতিমালার আলোকে সব সাংবাদিকের মাথার ওপর আমরা ছাদ দেখতে চাই। এটি করার জন্য আজকের প্রধান অতিথি যেন উদ্যোগী হয়ে ভূমিকা নেন। দু’একজন যদি উদ্যোগ নেন, তাহলে আমাদের দাবি পূরণে খুব একটা বিলম্ব হবে না। কারণ বিষয়টি ইতোমধ্যেই স্বীকৃত হয়ে আছে। আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় আছি, যেদিন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সবাই ভূমি ও গৃহের অধিকারী হবেন।
ওমর ফারুক বলেন, সাংবাদিকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা খুব জরুরি। আমরা যে প্রত্যেকের জন্য প্লট চাই-এমন নয়। চার-পাঁচজন সাংবাদিক মিলিয়ে পাঁচ কাঠার একটি প্লট দেন। সাংবাদিকরা সেখানে বহুতল ভবন করে নেবেন।
মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাভারের কোনো একটা জায়গা যদি আপনি (প্রতিমন্ত্রী) চিহ্নিত করে দিতে পারেন, তাহলে এই প্রক্রিয়ায় একটি দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়।