অর্থভুবন প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর বাগমারায় গোপনে খাজনা দিয়ে প্রায় ৪০ বিঘা সরকারি খাসজমি দখলের চেষ্টা করছে একটি চক্র। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), ইউএনও এমনকি জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে কোনো অনুমতি না নিয়েই জমির ডিজিটাল জরিপের সময় গোপনে হোল্ডিং খুলে দেওয়া হয়েছে খাজনা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। স্থানীয় তহশিলদারকে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এসি ল্যান্ড।
ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক তদন্তে ওই জমির মালিকানা দাবি করা সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। সাদ্দামের বাড়ি জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর এলাকায়। তবে এর সঙ্গে উপজেলা ভূমি অফিসের একটি চক্র জড়িত রয়েছে বলেও তদন্তে উঠে এসেছে।
সূত্র মতে, সরকারি খাসজমি স্থানীয় উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অনুমতি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সূত্রটি আরো জানায়, ২০১৮-১৯ সালের দিকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের সময় গোপনে বাগমারার ওই ৪০ বিঘা জমির খাজনা পরিশোধ করা হয় অনলাইনে। পরে ওই জমির মালিক হিসেবে সাদ্দাম হোসেনের নাম অনলাইনে এন্ট্রি করা হয়।
স্থানীয় জামিলুর রহমান নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলা ও স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একটি চক্রের সহযোগিতায় কোনো বরাদ্দপত্র ছাড়াই গোপনে সরকারি ৪০ বিঘা জমির খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে। ওই জমি বেহাত করতেই মূলত এ কাজটি করা হয়েছে। পরে মামলা করে জমির কাগজপত্র তৈরি করার চেষ্টা করবে চক্রটি।
জানতে চাইলে স্থানীয় বড় বিহানালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এটি আমার সময়ে হয়নি। আগের তহশিলদারের আমলে জালিয়াতিটা হয়েছে। এর সঙ্গে পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকার সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন। তবে ভূমি অফিসের লোকজনও জড়িত থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যা উঠে আসবে, আমি এসি ল্যান্ড স্যারকে সেটিই জানাব।’ তিনি আরো বলেন, ‘জমি জরিপের সময় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অনেককেই ডেকে এনে ওই কাজ দেওয়া হয়েছিল। যাঁরা ডাটা এন্ট্রি করেছে, তাঁরাও জড়িত থাকতে পারে।’
জানতে চাইলে বাগমারার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী বলেন, ‘ডিজিটাল ভূমি জরিপের সময় ভুল করেও কাজটি হতে পারে। তবে অনলাইনে খাজনা পরিশোধ করা হলেও তাঁর কোনো নথি আমাদের কাছে নেই।’