অর্থভুবন ডেস্ক
বরিশালের উজিরপুরে ৩টি এনজিওর প্রতারণার শিকার হয়েছে ২২শ মানুষ। ভোসড (প্যান্ডামিক ফিশারিজ লিমিটেড), অর্গানিক এগ্রো ফিশারিজ লিমিটেড ও অন্বেষা ফাউন্ডেশনের প্রতারণায় উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দারা এখন নিঃস্বপ্রায়। তাদের ১৯৬ একর জমি জালজালিয়াতি করে রেকর্ড করিয়ে দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা চালানোর প্রতিবাদে শুক্রবার শিবপুর গ্রামে ৫ শতাধিক মানুষ মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছে। দুপুরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত এনজিও ভোসডের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে তারা ঝাড়ু মিছিল করে। এ সময় তারা দোষী মোস্তাফিজুর রহমানের বিচার দাবি করেন।
সাতলা ইউনিয়নের ৩নং (শিবপুর) ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহাবুবুর রহমান বলেন, তিনটি এনজিও ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন থেকে আমাদের ভোগদখলীয় জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছি। আমাদের এই জমি নিয়ে গেলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। সন্তানদের নিয়ে পথে বসতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, শিবপুর মৌজার ৮০৭নং ডিপি খতিয়ানে ভোসডসহ কয়েকটি এনজিওর বহু দাগের সূচিতে অনিয়মের কারণে বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস তদন্ত করে। এরপর দেখা যায়, খতিয়ানে মূলকপি ফেলে দিয়ে একটি ডুপ্লিকেট কপি সংযোজন করে। এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে উজিরপুর সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ভোসডের চেয়ারম্যান একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মহাদেব দাস, পরিচালক মিন্টু মিয়া, অর্গানিকের মালিক আমিনুল ইসলাম সাগরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অন্বেষার চেয়ারম্যান অমেলুন্দু কর্মকার বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল হয়েছে কি না আমার জানা নেই। ওখানে আমরা ২০০৩ সাল থেকে ফিশারিজ ব্যবসা করে আসছি। কেউ কখনো আমাদের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেনি। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যানের প্ররোচনায় এমনটা হতে পারে।
সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল বাসার লিটন বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান, সাগর, অন্বেষাসহ একই ভূমিদস্যু বাহিনী গ্রামের অসহায় মানুষের জমি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এটা আমরা কোনোভাবেই হতে দেব না।
সাতলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, বিষয়টি আমরা আমাদের অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে বরিশাল-২ আসনের (বানারীপাড়া-উজিরপুর) সংসদ-সদস্য শাহে আলম বলেন, শিবপুরবাসীর সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। আমি যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রয়েছি। প্রশাসনকে আমি জানিয়ে দিয়েছি শিবপুরবাসীর জন্য যেন কিছু করে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ-সদস্য রুবিনা মিরা বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। জনগণের সম্পত্তি এভাবে বেহাত হতে দেওয়া যাবে না। আমি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে রয়েছি।