অর্থভুবন প্রতিবেদক
নাই টেলিফোন, নাইরে পিয়ন, নাইরে
শহরটির পশ্চিমাঞ্চলে ফোন কল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা নিষিদ্ধ করেছে দেশটির আধাসামরিক বাহিনী। বাধ্য হয়েই চিঠি চালাচালির হারানো দিনে ফিরে যাচ্ছেন স্থানীয়রা। হাতে লেখা চিঠিগুলোকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতে পিয়নের ভূমিকায় থাকছেন ট্র্যাক্সি ড্রাইভাররা। কখনো কখনো সেই চিঠি পৌঁছাচ্ছে, কখনো বেখেয়ালে হারিয়ে বেমালুম গায়েব। এএফপি।
দারফুরের অনেক বাসিন্দাই এখন গোপনে চিঠি আদান-প্রদানের এ পথ বেছে নিয়েছেন। এমনই একজন দক্ষিণ দারফুরের বাসিন্দা আহমেদ ইসা (২৫)। রাস্তার পাশের একটি ক্যাফেতে বসে রাজধানী নিয়ালায় আত্মীয়দের কাছে একটি বার্তা লিখছিলেন। এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে এল ডাইনে এবং নৃশংস যুদ্ধস্থানে চিঠিগুলোই যোগাযোগের একমাত্র উপায়। লড়াইয়ের শুরুতেও নিয়ালার অভ্যন্তরে আশপাশের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন ছিল। কেননা, নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর (আরএসএফ) যুদ্ধ লেগেই থাকত।’ দারফুর থেকে পাঠানো চিঠিগুলো পাঠাতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগে। এ বিষয়ে আহমেদ ইসা আরও বলেন, ‘চিঠিটি আসার জন্য আপনাকে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে এবং এটি ঠিকমতো পৌঁছাবে কি না তা-ও আপনি নিশ্চিতভাবে জানেন না। সেই চিঠির উত্তর কবে আসবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই।’ চিঠিবাহক এমনই একজন এক ড্রাইভার সুলেমান মোফাদ্দাল। অনেক বাসিন্দাই এখন তার মতো ড্রাইভারদের কাছে চিঠি হস্তান্তরের অপেক্ষায় থাকেন। কখন তারা আসবে এবং নিয়ালা যাওয়ার পথে চিঠিগুলো বহন করবে। মোফাদ্দাল এএফপিকে বলেন, ‘প্রায়ই, প্রাপক অবিলম্বে একটি চিঠি লেখেন এবং চালক চলে যাওয়ার আগে দ্রুত তা ফিরিয়ে দেন।
তারপরে ড্রাইভার সামনের রাস্তায় বোমা, মিলিশিয়া চেকপয়েন্ট বা সুদানের বর্ষার বৃষ্টিপাত উপেক্ষা করে চিঠিগুলো পৌঁছানোর চেষ্টা করে।’ বিশ্বকে সুদানের ভয়াবহ সহিংসতা সম্পর্কে জানান দেন মানবাধিকার রক্ষক আহমেদ গৌজা। তিনি নিজেই ১৬ দিন ‘কোনো তথ্য ছাড়াই’ নিয়ালায় তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেন।
বলেন, ‘প্রিয়জনের খবর থেকে আমরা বঞ্চিত হয়ে প্রতি মুহূর্তেই মারা যাই।’ ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সামরিক-আধাসামরিক দ্বন্দ্বে সুদানবাসীকে প্রতিদিনই নতুন নতুন এমন ভোগান্তীর সম্মুখীন হতে হচ্ছে।