Saturday, December 7, 2024

উপহার আদান-প্রদান করা সুন্নত

অর্থভুবন প্রতিবেদক

উপহার মানুষকে আনন্দিত করে। সম্পর্ক মজবুত করে। তাই মুমিনের উচিত মাঝেমধ্যে উপহার আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের ভাতৃত্বের বন্ধন শক্ত করা। আমাদের নবীজি (সা.)-ও সাহাবায়ে কেরামকে উপহার আদান-প্রদানের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা পরস্পর উপহারাদি বিনিময় করো, তোমাদের পারস্পরিক মহব্বত সৃষ্টি হবে।’ (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫৯৭)

 

আর আল্লাহর জন্য পারস্পরিক মহব্বত/ভালোবাসা সৃষ্টি করাও ইবাদত। যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরের সঙ্গে মহব্বত রাখে, আল্লাহ তাদের ওপর খুশি হন। তাদের ভালোবাসেন।

তাদের ক্ষমা করেন। কঠিন কিয়ামতের দিন আল্লাহর জন্য ভালোবাসা স্থাপনকারীদের আরশের ছায়ায় বিশেষ স্থান দেবেন। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রিয় মানুষকে মাঝেমধ্যে হাদিয়া দেওয়ার চেষ্টা করা সুন্নত। কেউ হাদিয়া দিলে তা ছোটই হোক, তা গ্রহণ করাও সুন্নত।
 
আমাদের নবীজি (সা.)-ও ক্ষুদ্র হাদিয়াও গ্রহণ করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যদি আমাকে হালাল পশুর পায়া বা হাতা খেতে ডাকা হয়, তবু তা আমি গ্রহণ করব আর যদি আমাকে পায়া বা হাতা হাদিয়া দেওয়া হয়, আমি তা গ্রহণ করব।’ (বুখারি, হাদিস : ২৫৬৮)

 

কেউ হাদিয়া দিলে নবীজি (সা.)-ও তাকে প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করতেন। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) হাদিয়া গ্রহণ করতেন এবং তার প্রতিদানও দিতেন। (বুখারি, হাদিস : ২৫৮৫)

তবে নবীজি (সা.) সদকা কখনোই গ্রহণ করতেন না।

শুধু নবীজি (সা.)-ই নন, তাঁর পরিবার-পরিজনকেও সদকা দেওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এ জন্য কেউ নবীজি (সা.)-কে কিছু দিতে চাইলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করতেন, যে জিনিসটি সদকা কি না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর খিদমতে কোনো খাবার আনা হলে তিনি জানতে চাইতেন, এটা হাদিয়া, না সদকা? যদি বলা হতো সদকা, তাহলে সাহাবিদের তিনি বলতেন, তোমরা খাও। কিন্তু তিনি খেতেন না। আর যদি বলা হতো হাদিয়া, তাহলে তিনিও হাত বাড়াতেন এবং তাদের সঙ্গে খাওয়ায় শরিক হতেন। (বুখারি, হাদিস : ২৫৭৬)

 

তাই যাদের মহান আল্লাহ সচ্ছলতা দিয়েছেন, যারা জাকাত ইত্যাদি খাওয়ার উপযুক্ত নয়, তারাও যদি টের পায় যে কেউ তাকে সদকার জিনিস দিচ্ছে, তাহলে তার জন্য নিষেধ করার সুযোগ আছে। অন্যথায় সুন্নতের নিয়তে হাদিয়া গ্রহণ করতে পারে, হাদিয়া দাতাকে এর প্রতিদান দিয়ে দিতে পারে। এমনিভাবে কেউ দাওয়াত দিলেও তা গ্রহণ করা সুন্নত। যদি তার অর্থ-সম্পদ হারাম না হয়। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা দাওয়াত দানকারীর ডাকে সাড়া দিয়ো, উপহারাদি ফেরত দিয়ো না এবং মুসলিমদের প্রহার করো না।’ (মুসনাদ আহমাদ ও ইবনে হিব্বান)

কিছু জিনিস এমন আছে, এগুলো কেউ নবীজি (সা.)-কে হাদিয়া দিলে তিনি প্রত্যাখ্যান করতেন না। ইবনে উমার (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিনটি বস্তু প্রত্যাখ্যান করা যায় না : (১) বালিশ, (২) সুগন্ধি, (৩) দুধ।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৯০)

তাই কেউ যদি এই জিনিসগুলো হাদিয়া হিসেবে দিতে চায়, তাহলে নবীজি (সা.)-এর সুন্নতের নিয়তে এগুলো সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করা যেতে পারে।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন

 

 

spot_imgspot_img

ছবিটা তুলে রাখুন ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে : ড. ইউনূস

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...

মায়ের ঘুমপাড়ানি সুর শান্তিধারা

আমাদের জোনাকজ্বলা গ্রাম বিদ্যুৎ তখনও দেখেনি। সন্ধ্যার কাছে বিকেল নতজানু হতেই সবুজ পাহাড়েরা মিশকালো হয়ে যায়। ফলে- আমরা চালের ফুটো দিয়ে চাঁদ দেখি, আর...

মাহবুবা ফারজানা নতুন তথ্য সচিব

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বেগম মাহবুবা ফারজানা। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ছিলেন। তাকে সচিব পদে পদোন্নতি...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here