Saturday, December 7, 2024

ট্রমা কাটাতে কাছের মানুষের সহায়তা নিন

অর্থভুবন ডেস্ক

ট্রমা হলো এক ধরনের মনোদৈহিক চাপজনিত ঘটনা। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ভয়াবহ ঘটনার অভিজ্ঞতা, যা প্রত্যক্ষদর্শীর মনে ট্রমার সঞ্চার করতে পারে কিংবা তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হতে পারে, এমন কোনো ঘটনা থেকে পরে এই ট্রমা সৃষ্টি হতে পারে। একে ‘পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিস-অর্ডার’ বা সংক্ষেপে ‘পিটিএসডি’ বলা হয়।

কারণ

তীব্র মানসিক চাপ তৈরি করার মতো ঘটনা যেমন—বন্যা, ভূমিকম্প, ভবনধস, বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড, যেকোনো পরিবহনের মারাত্মক দুর্ঘটনা, ধর্ষণ, হত্যাযজ্ঞ, যুদ্ধ, প্রচণ্ড শারীরিক নির্যাতন ইত্যাদি থেকে এ রোগের সৃষ্টি হয়।

 
সরাসরি দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়াও যাঁরা দুর্ঘটনা খুব কাছ থেকে দেখেন অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উদ্ধারকর্মী, চিকিৎসক তাঁদের মধ্যেও এ রোগ দেখা দিতে পারে। তবে সাধারণ কারণেও কেউ কেউ ট্রমার শিকার হতে পারেন। যেমন—গালাগাল, হ্যারাজমেন্ট, কর্মক্ষেত্রে ব্যর্থতা, কোনো বিশেষ গ্রুপ থেকে বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি।

 

পিটিএসডিতে আক্রান্ত হলে যা ঘটে

আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত সেই ঘটনা বা সেই স্থানে যেতে চাইবেন না, ফ্লাশব্যাক হয়, অর্থাৎ ভয়ংকর স্মৃতি চোখের সামনে বারবার চলে আসে, আতঙ্কে থাকে, দুঃস্বপ্ন দেখে, মনোযোগে সমস্যা হয়, অন্যদের থেকে দূরে থাকে, সব সময় বেশি সতর্ক থাকে চারপাশের পরিবেশ নিয়ে।

 
দুর্ঘটনার কথা মনে হলে তীব্র শারীরিক প্রতিক্রয়া তৈরি হয়। যেমন—

 

–   বুক ধড়ফড় করা

–   শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হওয়া

–   বমি বমি ভাব

–   ঘাম হওয়া

–   মাংসপেশিতে টান অনুভব করা

–   এড়িয়ে চলা

–   স্তব্ধ হয়ে যায় ইত্যাদি।

 

কিভাবে মোকাবেলা করবেন

–   সংকটের সময়ে মনে রাখবেন, এই খারাপ সময়টাও সাময়িক।

–   পরিবারের লোকদের সঙ্গে কোয়ালিটি সময় কাটান।

 

 

–   প্রচণ্ড স্ট্রেস লাগলে চোখ বন্ধ করে রাখুন কিছুক্ষণ। এতে একাগ্রতা বাড়বে। নেগেটিভ এনার্জি কমবে।

–   আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ফিরে যান। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, যোগব্যায়াম ও জোরে হাঁটুন।

 

 

–   সমস্যা কোথায় হচ্ছে, তার শিকড় বের করুন। তারপর সমাধান করুন।

–   সব ক্ষেত্রে অ্যাডজাস্ট ও কম্প্রোমাইজ করার অভ্যাস বাদ দিন। এর ফলে আমরা আরো একটি ভয়ানক ট্রমার দিকে এগিয়ে যাই। কখনো আবার নিজের জন্য শক্ত অবস্থান নিন।

–   নিজের জন্য বাস্তবধর্মী লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।

–   শিশুর সামনে যতটা সম্ভব সংযত থাকুন। অভিভাবকের ব্যবহারও শিশুদের মনে ট্রমা তৈরি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, সব থেকে ভয়ানক হলো শিশুদের ট্রমা। কারণ পরে এটি একটি মানসিক রোগের বড়সড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

–   মনের কথা বিশ্বস্ত এবং বিচক্ষণ কারো সঙ্গে বলুন।

–   আপনার পরিচিত কেউ দুর্ঘটনার শিকার হলে তাঁর কথা শুনুন। তাঁর অনুভূতি ও মোকাবেলা করার ধরন গ্রহণ করার চেষ্টা করুন।

–   চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। ট্রমা থেকে মুক্তি পেতে আচরণগত থেরাপি, এক্সপোজার থেরাপিসহ নানা ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে।

পরামর্শ দিয়েছেন

ডা. রুবাইয়াৎ ফেরদৌস

কনসালট্যান্ট, লাইফ স্প্রিং লিমিটেড।

spot_imgspot_img

ছবিটা তুলে রাখুন ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে : ড. ইউনূস

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...

মায়ের ঘুমপাড়ানি সুর শান্তিধারা

আমাদের জোনাকজ্বলা গ্রাম বিদ্যুৎ তখনও দেখেনি। সন্ধ্যার কাছে বিকেল নতজানু হতেই সবুজ পাহাড়েরা মিশকালো হয়ে যায়। ফলে- আমরা চালের ফুটো দিয়ে চাঁদ দেখি, আর...

মাহবুবা ফারজানা নতুন তথ্য সচিব

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বেগম মাহবুবা ফারজানা। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ছিলেন। তাকে সচিব পদে পদোন্নতি...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here