অর্থভুবন ডেস্ক
ভালো-মন্দরেড মিট খাওয়া ভালো না খারাপ এটা নিয়ে নানা দ্বিমত আছে। রেড মিট বেশি খাওয়া যেমন ক্ষতিকর। তেমনি শরীরের জন্য অনেক উপকারও আছে। তাই রেড মিট কেন খাবেন আর কেন খাবেন না, এ বিষয়ে জেনে নিন।
গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া প্রভৃতি পশুর মাংসকে রেড মিট বা লাল মাংস বলে। এতে মায়োগ্লোবিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে বলে কাঁচা অবস্থায় টকটকে লাল দেখায়। পুষ্টিগুণের বিচারে লাল মাংস অনেক সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর আয়রন, প্রোটিন, ভিটামিন বি, জিঙ্ক এবং অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে, যা শরীর গঠনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ভালো দিক
লাল মাংস প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। শরীরের বৃদ্ধি সাধন, ক্ষয়পূরণ ও শরীর গঠনে লাল মাংসের ভূমিকা অপরিসীম। দেহের অস্থি, পেশি, দাঁত, নখ, নানা দেহযন্ত্র প্রোটিন দিয়ে তৈরি। প্রোটিন থেকেই তৈরি হয় রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি। প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরিতেও প্রয়োজন এই প্রোটিনের। এ ছাড়া লাল মাংসে থাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, ভিটামিন এ, বি, জিঙ্ক, ফসফরাস, সেলেনিয়াম প্রভৃতি খাদ্যোপাদান। তাই শরীরের জন্য লাল মাংসের প্রয়োজন আছে বৈকি।
মন্দ দিক
প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস এই লাল মাংস হলেও এগুলোতে সম্পৃক্ত চর্বির (স্যাচুরেটেড ফ্যাট) মাত্রা থাকে বেশি। থাকে প্রচুর খারাপ কোলেস্টেরলও। ফলে বেড়ে যেতে পারে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। লাল মাংসের প্রধান ক্ষতি হলো, এর উচ্চমাত্রার ট্রাইগ্লিসারাইড (টিজি) ও এলডিএল, যা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। এই কোলেস্টেরল ধমনির প্রাচীরকে পুরু করে তোলে। ফলে হৃৎপিন্ডে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়।
এভাবে চলতে থাকলে একপর্যায়ে রক্তনালির ব্লক তথা হৃদরোগের অন্যতম কারণ হয়ে দেখা দেয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ১০০ গ্রামের বেশি লাল মাংস খান, তাদের হৃদরোগে মৃত্যুঝুঁকি ১৫ শতাংশ, ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি ১১ শতাংশ এবং বৃহদন্ত্র ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। লাল মাংসে থাকে এক বিশেষ ধরনের ইনফ্লামেটরি যৌগ, যা পাকস্থলীর প্রদাহের জন্য দায়ী। এই যৌগ পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহদন্ত্রের ক্যানসারের জন্যও দায়ী। ফুসফুস আক্রান্ত হওয়া, কোলন ও স্তন ক্যানসারেও এর ভূমিকা থাকে। যত বেশি লাল মাংস খাওয়া হবে, এসবের ঝুঁকি ততই বাড়ে। অতিরিক্ত লাল মাংস গাউট, আর্থ্রাইটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেপটিক আলসার, পিত্তপাথর, প্যানক্রিয়াসের প্রদাহ, কিডনি রোগ প্রভৃতি সৃষ্টি করতে পারে।