Saturday, December 7, 2024

যশোর জেলা পরিষদ মার্কেট অনুমোদন ছাড়াই ৩৩টি দোকান নির্মাণ শুরু

অর্থভুবন ডেস্ক

যশোর জেলা পরিষদের মার্কেটে নতুন করে ‘অনুমোদন’ ছাড়াই ৩৩টি দোকান নির্মাণ শুরু হয়েছে। এই দোকানগুলো নিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্য হবে অভিযোগ উঠেছে। দোকান বরাদ্দের জন্য দোকানপ্রতি তিন থেকে চার লাখ টাকা নেয়া হচ্ছে। এ দোকান বরাদ্দ নিয়ে পুরানো ও নতুন ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার দুপুরে মার্কেটে পুরানো ব্যবসায়ীরা দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করলে জেলা পরিষদ বাধা দেয়। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ কারণে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ উঠেছে, ‘পুরানো ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক দোকান বরাদ্দ না দিয়ে; মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।’

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে যশোর জেলা পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে ও যশোর ইনস্টিটিউট মাঠের এক প্রান্তে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সম্প্রতি যশোর ইনস্টিটিউটের মাঠ উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ শুরু করলে ইনস্টিটিউট অংশের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদকালে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হয় উন্নয়ন কাজ শেষ হলে এসব ব্যবসায়ীকে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের মার্কেটে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের অবসানের পর ইনস্টিটিউট তার সীমানায় প্রাচীর দিয়ে দেয়। সেই প্রাচীর ঘেঁষে যশোর জেলা পরিষদের মার্কেটে নতুন করে ৩৩টি দোকান স্থাপন শুরু হয়েছে। কোনো ধরনের ‘অনুমোদন’ ছাড়াই এই দোকানগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। আর এই দোকানগুলো বরাদ্দের জন্য ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রথম দিকের দশটি দোকান নতুন ব্যবসায়ীদের চার লাখ টাকা করে নিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর এর পরের দোকানগুলো পুরানো ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এই দোকানগুলো থেকে বরাদ্দ বাবদ ৩ লাখ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের রশিদ ছাড়াই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এই অর্থ গ্রহণ করছেন। দোকান বরাদ্দ পাওয়ার আশায় ব্যবসায়ীরাও মুখ বুজে এই টাকা পরিশোধ করছেন। ফলে অনুমোদন ছাড়াই এই ৩৩ দোকান নির্মাণ করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কোটি টাকার বাণিজ্যে নেমেছেন বলে অভিযোগকারীদের দাবি।

এদিকে জেলা পরিষদ তাদের মিশন অনুযায়ী দোকানঘর নির্মাণ শুরু করলে মার্কেটের পুরাতন ব্যবসায়ীরা বাঁধা দেন। পূর্ব প্রতিশ্রম্নতি অনুযায়ী সোমবার ১২ পুরাতন ব্যবসায়ীরা জেলা পরিষদ মার্কেটে দোকান তৈরি শুরু করেন। দোকান তৈরির এক পর্যায়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দোকান নির্মাণে বাঁধা দেন। এ সময় জেলা পরিষদ কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের জানান, এখানে প্রতিটি দোকান নির্মাণ করতে হলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। জেলা পরিষদের কর্মকর্তা বাধা দিলে জেলা পরিষদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

যশোর ইনস্টিটিউট মার্কেট অংশের সভাপতি বাবু বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, ‘ইনস্টিটিউটের মাঠ থেকে যখন তাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছিল; তখন তাদের বলা হয়েছিল জেলা পরিষদের মার্কেটে স্থান দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক ব্যবসায়ীরা সরে আসেন। এদিন জেলা পরিষদের মার্কেটে দোকান নির্মাণ করতে আসলে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। এখন দোকান নির্মাণ করতে দেবে না; উল্টো তিন থেকে চার লাখ টাকা প্রতিটি দোকানের জন্য দিতে হবে বলে জানিয়েছে। তিনি জানান, ‘আমাদের জন্য বরাদ্দ জায়গা পুরাতন ব্যবসায়ীদের আগে অগ্রাধিকার না দিয়ে জেলা পরিষদ নতুন ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। নতুন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল দোকান বরাদ্দ দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।’

নাজমুল হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা করি পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা। এত টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নেব কীভাবে। জায়গা না দিলে আমরা ব্যবসা করব কীভাবে। জায়গা নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দিলে তারা আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

এই বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) একেএম শফিকুল আলম বলেন, ‘দোকান বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের দু’পক্ষ জড়ো হতে থাকে। এসময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান বলেন, জেলা পরিষদের মার্কেটে ‘অস্থায়ী দোকান’ নির্মাণ করা হচ্ছে। অস্থায়ী দোকান করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়া লাগে না। ওই স্থানে যেহেতু আগেই মার্কেট ছিল, তাই দোকানগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, মার্কেটে অস্থায়ী দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে দোকান বরাদ্দ নিয়ে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

spot_imgspot_img

ছবিটা তুলে রাখুন ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে : ড. ইউনূস

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...

মায়ের ঘুমপাড়ানি সুর শান্তিধারা

আমাদের জোনাকজ্বলা গ্রাম বিদ্যুৎ তখনও দেখেনি। সন্ধ্যার কাছে বিকেল নতজানু হতেই সবুজ পাহাড়েরা মিশকালো হয়ে যায়। ফলে- আমরা চালের ফুটো দিয়ে চাঁদ দেখি, আর...

মাহবুবা ফারজানা নতুন তথ্য সচিব

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বেগম মাহবুবা ফারজানা। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ছিলেন। তাকে সচিব পদে পদোন্নতি...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here