অর্থভুবন ডেস্ক
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ বছর এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৭১৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ১৩৮ জন। যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের বেশির ভাগই সাত-আট ঘণ্টা বা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছে।
ঢাকা মেডিক্যালে যে রোগীরা আসে তাদের বেশির ভাগ খুব জটিল পর্যায়ে আসে।
রেফার করার আগে তাই রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসাগুলো দিয়ে দেওয়া দরকার।
ঢাকার বাইরের রোগীরা যখন আসে তখন আর চিকিৎসাটুকু করার মতো পর্যাপ্ত সময় পাই না আমরা। যদি চিকিৎসা করার সময়টুকু পেতাম সে ক্ষেত্রে হয়তো মৃত্যুটা কমানো সম্ভব হতো। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা তাদের জন্য হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থাও করেছি। তাদের পাশে থেকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োজিত করা আছে।
সাংবাদিকরা প্রায়ই প্রশ্ন করেন, ডেঙ্গু ইউনিট কেন করতে পারিনি। আসলে আমাদের সমস্যা হলো রোগী আসে স্রোতের মতো। শুধু ডেঙ্গু রোগী তো নয়, সব ধরনের রোগী আসে এবং তাদের ভর্তি রাখতে হয়। আমরা যদি সব রোগীকে বিছানা দিই তাহলে রোগী ভর্তির সংখ্যা কমে যাবে। তখন আরেকটা দুর্যোগ তৈরি হবে। অনেক মানুষ চিকিৎসা পাবে না।
আমরা দেখেছি, সব রোগীকে শয্যা দিতে গেলে তিন-চার শর বেশি রোগী ভর্তির সুযোগ থাকে না। কারণ ডেঙ্গু ছাড়া অন্যান্য যে রোগী রেফারেল হয়ে এখানে আসে সারা বাংলাদেশ থেকে, তাদের অবস্থাও জটিল থাকে। তাদের কিন্তু অন্য হাসপাতালও নেয় না। এসব বিবেচনা করে আমরা সব রোগী ভর্তি করি। কোথায় জায়গা পাবে সেটা পরের বিষয়, চিকিৎসাটা আমরা দেওয়ার চেষ্টা করি। একবারে চিকিৎসা না পাওয়া থেকে কিছুটা হলেও তো তারা চিকিৎসা পেল।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হলো রেফারেল হাসপাতাল। আর রেফারেল হাসপাতালে সব সময় মৃত্যু বেশি হয়ে থাকে।
আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার নতুন রোগী আসে। এর মধ্যে ৩০ জনের কম মৃত্যু হয়। সে হিসাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে স্ট্যান্ডার্ড, সেটা আমাদের আছে। আমরা যদি স্ট্যান্ডার্ড চিকিৎসা দিতে যাই, রোগীরা বিছানায় থাকবে, মশারি টানানো থাকবে, একটু আরামে থাকবে। তাহলে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। কারণ অন্য রোগীরা তখন চিকিৎসা পাবে না। সব দিক বিবেচনা করে আমাদের এই হাসপাতালটি চালাতে হচ্ছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক, পরিচালক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল