Saturday, December 7, 2024

কারা ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে আছেন

ডা. এ. হাসনাত শাহীন

ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত সমস্যা, যেখানে রক্তের শর্করা বা গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। আমাদের দেহের অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেহের শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। ইনসুলিনের কাজ হলো গ্লুকোজকে মানুষের দেহের কোষগুলোয় পৌঁছে দেওয়া। এরপর সেই গ্লুকোজ ব্যবহার করে শরীরের কোষগুলো শক্তি উৎপাদন করে।

এই ইনসুলিনের পরিপূর্ণ বা আংশিক ঘাটতিতে অথবা ইনসুলিনের কার্যকারিতা হ্রাসে বা এ দুটি অবস্থার মিলিত প্রভাবে রক্তের স্বাভাবিক গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হয়।

কায়িক পরিশ্রমের ঘাটতি আর খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগের সাধারণ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেমন– ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, তৃষ্ণা পাওয়া, নিয়মিত খাওয়ার পরও ঘন ঘন খিদে লাগা, প্রচণ্ড পরিশ্রান্ত অনুভব করা, চোখে ঝাপসা দেখা, শরীরের বিভিন্ন অংশের কাটাছেঁড়া সহজে না সারা, কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া, প্রদাহজনিত রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া, হাত-পায়ে ব্যথা বা মাঝেমধ্যে অবশ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। অনেক ক্ষেত্রে এ লক্ষণগুলো সব সময় নাও থাকতে পারে।
 

প্রতি দু’জন ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে একজন জানেনই না যে তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এটাই ভয়ানক বিপদের কথা। কারণ ডায়াবেটিসের জটিলতাগুলো রোগের প্রাথমিক ধাপ থেকেই শুরু হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগী চোখের জটিলতা, হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি জটিলতা, পায়ে পচন, খোসপাঁচড়া প্রভৃতি জটিলতা নিয়ে ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় তাই ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও জটিলতা প্রতিরোধের অন্যতম পূর্বশর্ত।

জেনে নিন, ডায়াবেটিসের কোনো লক্ষণ না থাকলেও কাদের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত: বয়স ৪৫ বা তার বেশি হলে, স্থূল ব্যক্তি, রক্ত-সম্পর্কীয় নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস থাকলে, শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি থাকলে, প্রি-ডায়াবেটিস থাকলে, নারীদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বা অধিক ওজনের সন্তান প্রসবের ইতিহাস থাকলে, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকলে, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক হলে, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি এবং এইচডিএলের মাত্রা কম থাকলে।
তা ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সময়মতো ডায়াবেটিস নির্ণয় না হলে বেশি ওজনের শিশু জন্মদান, অকাল গর্ভপাত, মৃত সন্তান প্রসব, প্রসব-পরবর্তী শিশুমৃত্যু, শিশুর জন্মগত ত্রুটি বা প্রসব-পরবর্তী মা ও সন্তানের বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। তাই প্রথম চেকআপের সময় অথবা গর্ভধারণের ২৪-২৮ সপ্তাহে প্রত্যেক অন্তঃসত্ত্বা মায়ের ডায়াবেটিস শনাক্তকরণ পরীক্ষা করতে হবে।

লেখক : কনসালট্যান্ট, ডায়াবেটিস ও এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, ইমপালস হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা।

spot_imgspot_img

ছবিটা তুলে রাখুন ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে : ড. ইউনূস

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচারের অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...

মায়ের ঘুমপাড়ানি সুর শান্তিধারা

আমাদের জোনাকজ্বলা গ্রাম বিদ্যুৎ তখনও দেখেনি। সন্ধ্যার কাছে বিকেল নতজানু হতেই সবুজ পাহাড়েরা মিশকালো হয়ে যায়। ফলে- আমরা চালের ফুটো দিয়ে চাঁদ দেখি, আর...

মাহবুবা ফারজানা নতুন তথ্য সচিব

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বেগম মাহবুবা ফারজানা। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ছিলেন। তাকে সচিব পদে পদোন্নতি...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here