স্বাস্থ্যকর ডায়েটের প্রধান চাবিকাঠি হলো প্রতিদিন খাবারে সঠিক পরিমাণে ক্যালোরি রাখা। আপনি কী পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করছেন ও কী পরিমাণ শক্তি গ্রহণ করছেন, তা ব্যালান্স করে এই উপায়। যদি আপনি শরীরের প্রয়োজনের বেশি খাবার খান, তবে বাড়বে আপনার ওজন।
কারণ, আপনি যে শক্তি ব্যবহার করছেন না, তা বাড়তি ফ্যাট আকারে শরীরে জমে যাবে। আবার খুব কম খেলেও ওজন কমে যাবে। শরীরকে তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিতে খেতে হবে ব্যালান্স ডায়েট, অর্থাৎ সব ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন সুস্থ পুরুষকে প্রতিদিন ২ হাজার ৫০০ গ্রাম ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত। আর একজন নারীর প্রতিদিন দরকার ২০০০ গ্রাম ক্যালোরি।
ফাইবার স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট খাওয়া
খাবার খাওয়ার স্বাস্থ্যকর একটি উপায় হলো ফাইবার স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট খাওয়া। ফাইবার স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট আছে আলু, রুটি, ভাত, পাস্তা, সিরিয়াল ইত্যাদি। হাই ফাইবার ও হোল গ্রেইন খাবার, যেমন পাস্তা, ব্রাউন রাইস, খোসাসহ আলু খাবার তালিকায় রাখুন। এ ধরনের খাবারে সাদা বা রিফাইন করা খাবারের থেকে বেশি স্টার্চি কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার লম্বা সময় পেট ভরা রাখে। প্রতি বেলায় এর যেকোনো একটি খাবার রাখার চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু যখন খাবারগুলো তৈরি করবেন, খেয়াল রাখতে হবে ক্যালোরি যেন বাড়তি না হয়। ক্যালোরি বাড়ায় আলুর চিপসে দেওয়া অতিরিক্ত তেল, ব্রেডে দেওয়া বাটার ও পাস্তায় দেওয়া চিজি ক্রিম।
তৈলাক্ত মাছ খাওয়া
প্রোটিনের একটি ভালো উৎস হলো মাছ। এ ছাড়া থাকে মিনারেল ও ভিটামিন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সপ্তাহে অন্তত ২ ভাগ মাছের প্রোটিন খাওয়া উচিত এবং এর ১ ভাগ হওয়া দরকার তৈলাক্ত মাছ। তৈলাক্ত মাছে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাট। হার্টের অসুখে এই ফ্যাট বেশ উপকারী।
প্রতিদিন প্রচুর ফল ও সবজি
বিশেষজ্ঞরা বলেন, দিনের খাবারের ৫ ভাগ খাবার খেতে হবে ফল ও সবজি। সকালের নাশতায় সিরিয়ালের সঙ্গে খেতে পারেন কলা বা মিড মর্নিংয়ে তাজা ফল। তাজা ফল ও সবজিতে থাকে ৮০ গ্রাম ও শুকনা ফলে থাকে ৩০ গ্রাম। আর ১৫০ এমএল তাজা ফল, সবজির জুস ও স্মুদিতে থাকে ১ ভাগ প্রোটিন। কিন্তু দিনে ১ গ্লাসের বেশি আবার আপনার দাঁতের জন্য ভালো নয়।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম খাওয়া
শরীরে সব ধরনের খাবারই প্রয়োজন, যার মধ্যে রয়েছে ফ্যাটও। ফ্যাট হয় দুই ধরনের। স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট । স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে কোলেস্ট্ররল বাড়ায়, যা হার্টের সমস্যা তৈরি করে। প্রতিদিন গড়ে একজন পুরুষ ৩০ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট খেতে পারেন ও একজন নারী ২০ গ্রাম।
সকালের নাশতা বাদ না দেওয়া
অনেকেই মনে করেন, সকালের নাশতা বাদ দিলেই বুঝি কমবে ওজন। কিন্তু এভাবে ওজন কমানো অস্বাস্থ্যকর উপায়। সকালের ব্যালেন্স খাবার হতে পারে হাই ফাইবার ও লো ফ্যাটের খাবার, যাতে চিনি ও লবণ থাকে কম। এতে পাওয়া যায় যথাযথ পুষ্টি। হোল গ্রেইন সিরিয়ালে কিছু ফল মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন মজাদার সকালের নাশতা।
কম লবণ
লবণ খাবারের স্বাদ বাড়ায়, কিন্তু মাত্রাছাড়া লবণ করে ক্ষতি। এতে বেড়ে যায় ব্লাডপ্রেশার এবং বাড়ে হার্টের ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও। খাবারে ১ দশমিক ৫ গ্রাম লবণ থাকা মানেই তা অতিরিক্ত লবণের খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক ও ১১ বছরের বেশি শিশুদের ৬ গ্রাম বা ১ চা–চামচের বেশি লবণ এক দিনে খাওয়া উচিত নয়।