অর্থভুবন প্রতিবেদক
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে ভয়াবহ আগুন লাগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে। সেদিন আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে দুই শতাধিক দোকান। আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া কিছু চালের আড়ত এবার ডুবেছে বৃষ্টির পানিতে। গত বৃহস্পতিবার রাতে হওয়া তুমুল বৃষ্টিতে ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকা ডুবে যায়। বাদ যায়নি দুর্ঘটনাকবলিত এ মার্কেটও।
কৃষি মার্কেটের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ২ জুলাই বৃষ্টির পানিতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এবার মাত্র তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে আবারও পানিতে ডুবল বাজার। কাকতালীয়ভাবে দুদিনই বন্ধ ছিল কৃষি মার্কেট। বাধ্য হয়ে পানির দামে ভেজা চাল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ ভেজা চাল শুকানোর কোনো ব্যবস্থাও নেই।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে চালের পাইকারি বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, পানিতে ভিজে যাওয়া চাল-ডালসহ বিভিন্ন পণ্যের বস্তা বের করছেন ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ জমে থাকা পানি সরাতে ব্যস্ত। এরপর ভিজে যাওয়া চালের বস্তা নামমাত্র দামে বিক্রি করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের একজন বিসমিল্লাহ ট্রেডিংয়ের মালিক শামসুজ্জামান। ভেজা চাল নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করছেন তিনি। ক্ষতির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই দোকানের প্রায় ৩০০ বস্তা চাল নষ্ট হয়েছে বৃষ্টির পানিতে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৯ লাখ টাকা। তিন মাস আগেও একবার পানি উঠেছিল। তখনো ১০০ বস্তা চাল নষ্ট হয়।
বৃষ্টি হলেই মার্কেটে পানি ওঠার কারণ জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের পাশের রিংরোড মার্কেট উঁচু হওয়ায় সব দিকের পানি দ্রুত চলে আসে এ মার্কেটে। কোনো দিকের পানি নামতে পারে না। একটু বেশি বৃষ্টি হলেই পানি জমে মার্কেটে। আরেক ব্যবসায়ী তাহের ট্রেডার্সের মালিক মো. ইমরান বলেন, পানিতে ১৫০ বস্তা চাল ভিজেছে। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগে পানি উঠে ৫০ বস্তা চাল নষ্ট হয়েছিল। তখনো পানির দামে বিক্রি করতে হয়েছে। চালের আড়তে পানি উঠে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ভিজে যাওয়ার খবরে পার্শ্ববর্তী এলাকার অনেকেই কম দামে চালসহ অন্যান্য পণ্য কিনতে এসেছেন কৃষি মার্কেটে।
কৃষি মার্কেট চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু জানান, গতকালের (বৃহস্পতিবার) বৃষ্টিতে তাদের আড়তের প্রতিটি দোকানে পানি ঢুকে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগেও কোরবানির ঈদের পর বৃষ্টিতে আড়ত তলিয়ে সব চাল ভিজে যায়। তিনি বলেন, ‘আমাদের চালের আড়তটি অন্য এলাকার তুলনায় নিচু হওয়ায় তাজমহল রোড, নতুন কাঁচাবাজার ও টিক্কা পাড়ার পানি মার্কেটে সহজেই ঢুকে যায়। গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রবল বৃষ্টির দুই ঘণ্টা পর পানি নেমে যায়। এর মধ্যেই প্রতিটি দোকানে পানি প্রবেশ করে চাল ভিজে যায়।’