অর্থভুবন ডেস্ক
সকালটা মেঘলা ছিল। ঘরময় বেজে যাচ্ছে সংগীতশিল্পী সুনিধি নায়েকের কণ্ঠে ‘বন্ধু, রহো রহো সাথে/ আজি এ সঘন শ্রাবণপ্রাতে।’ আহা। ‘সুনিধি নায়েক এখন ঢাকায় না?’ চট করেই মনে প্রশ্ন জাগল। ডায়েরি উল্টেপাল্টে খুঁজে বের করলাম তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। খুদে বার্তা পাঠিয়ে জানালাম, একটু কথা বলতে চাই। অল্প সময়ের মধ্য়েই ফিরতি মেসেজে তিনি সম্মতি জানালেন। বিকেলে ফোন করলাম। রিং বেজে যাচ্ছে।
এসব ভাবতে ভাবতেই সেলফোনের ওপাশ থেকে মিষ্টি গলা ভেসে এল, ‘হ্যালো!’ জানালাম, ব্যস্ততা না থাকলে খানিকক্ষণ আলাপ করা যাবে কি না। তারপর আলাপ চলল বেশ কিছুক্ষণ।
পূজার ছুটি কাটবে পশ্চিমবঙ্গে
পূজা বাড়িতে কাটবে, বাবার সঙ্গে। তাঁর গ্রামের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায়। দাদু জমিদার ছিলেন। পুরো গ্রামে নিজেদের পূজা হয়। এ সময়টা গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়।
পূজার কেনাকাটা
সপ্তমী থেকে দশমী অবধি সাজসজ্জা নিয়ে কী ভাবছেন? জানালেন, এখন বড় হয়ে গেছেন। ছোটবেলায় পূজা এলেই জামাকাপড় কেনার একটা ব্যাপার কাজ করত মনে। আগ্রহ করে পোশাক-আশাক কিনে দিতেন মা। কিন্তু তিনি চলে গেছেন সাড়ে তিন বছর হয়ে গেল। এই সময়টায় এখন সেভাবে আর কিছুই করা হয়ে ওঠে না। ‘পূজায় দুই-তিনটা শাড়ি কেনা হয় আর বাবার সঙ্গে বের হই, এই তো।’ খুব অল্প কথায় জানালেন সুনিধি।
পূজায় যা পরবেন, যেভাবে সাজবেন
সুনিধি নায়েক বরাবরই মিনিমালিস্ট। জাঁকজমক সাজগোজ খুব একটা পছন্দ করেন না; ভারী মেকআপ তো নয়ই। তবে এবার পূজায় অষ্টমীতে বাবার উপহার দেওয়া সাদা শাড়ি পরে অঞ্জলি দিতে যাবেন আর নবমীর দিন জামদানি শাড়ির সঙ্গে কানপাশা পরার ইচ্ছা
আছে তাঁর। সুনিধি জানান, তাঁর মা কানপাশা পরতেন। আর সেখান থেকেই এই অলংকারের প্রতি তাঁর একটা অন্য রকম মায়া রয়েছে।
দিন শুরু যেমন হয়
সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে পড়েন সুনিধি। ফ্রেশ হয়ে নাশতা সেরেই জিমে চলে যান। ওয়ার্কআউট করে ফিরে স্নান করে খেয়েই আবার স্টুডিওতে ছুট দিতে হয়।
ডায়েট প্ল্যান
সকালে নিউটেলা দিয়ে পাউরুটি, আমন্ড, সঙ্গে একটু ফলমূল দিয়ে ব্রেকফাস্ট সারেন। তারপর জিমে যান। দুপুরে বড় দুই পিস মাছের টুকরো বা একটু মাংস দিয়ে অল্প একটু ভাত খান; মানে প্রোটিনজাতীয় খাবারের সঙ্গে সামান্য কার্বোহাইড্রেট থাকে পাতে। সন্ধ্য়ায় শুধু কফি খান। এরপর একেবারে রাতের খাবার। রাতের খাবারে থাকে মাছ বা মাংস আর অল্প ভাত-সবজি।
ঘুমের রুটিন
‘আমি রাত জাগতে পছন্দ করি না। সাড়ে ১২টা-১টার মধ্য়ে ঘুমিয়ে যাই।’ একবাক্য়ে উত্তর দেন সুনিধি। সকাল-সকাল উঠে পড়তে হয় বলে পরিপূর্ণ ঘুমের জন্য এ সময়ের মধ্যেই বিছানায় চলে যান তিনি।
ক্যাজুয়াল ও পার্টিওয়্যারে যা পছন্দ
প্রায় সব ধরনের পোশাক পরেন সুনিধি। স্টুডিওতে বা কাজে কোথাও গেলে প্যান্ট আর টপসেই বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করেন। অন্যদিকে বিয়েবাড়ি বা পার্টিতে গেলে শাড়ি পরতে ভালো লাগে। এ ছাড়া কুর্তি, কামিজের মতো ওয়ানপিসও পরেন।
সৌন্দর্যের চাবিকাঠি
সৌন্দর্যের রহস্য কী? উত্তরে তিনি বলেন, ‘ত্বকের যত্নটা আমি সুন্দরভাবে নেওয়ার চেষ্টা করি। রাতের জন্য আমার একটা স্কিনকেয়ার রুটিনও আছে।’ কী সেই রুটিন সুনিধির? স্টুডিও থেকে রাতে বাড়ি ফিরে সবার আগে মেকআপ তোলেন। এরপর ক্লিনজার দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে প্রয়োজন হলে স্ক্র্যাব করে নেন। সপ্তাহে দুদিন স্ক্র্যাব ব্যবহার করেন তিনি। এরপর মুখ ধুয়ে ওভারনাইট সেরাম লাগিয়ে ময়শ্চারাইজার লাগান। তারপর ঘুমিয়ে পড়েন। এ ছাড়া সপ্তাহে তিন দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখে বরফ বুলিয়ে নেন। এই আইস থেরাপি তাঁর ত্বক সুন্দর রাখতে সহায়তা করে। ফলে আলাদা করে ফেশিয়াল করার প্রয়োজন হয় না।
সুগন্ধির টপ সিক্রেট
ভারসাচির সুগন্ধি তাঁর পছন্দের। এ ছাড়া বডিশপের সুগন্ধিও ব্যবহার করেন। তবে সুগন্ধি কেনার ক্ষেত্রে ফেসিনেশন নেই সুনিধির। টপ সিক্রেট হলো, সাধারণত সুগন্ধি উপহার দেন অর্ণব। ‘ও আমাকে গিফট করে বলেই সুগন্ধি মাখি!’ সুনিধির কথায় সমর্থন পাওয়া গেল।
হিল নাকি ফ্ল্যাট
জুতার বেলায় আরামটাই সবার আগে সুনিধির কাছে। ক্রকস তাঁর প্রিয় জুতা। সুনিধি বললেন, ‘আমার অনেক ক্রকস আছে।’ সবগুলোই প্রায় ভারত থেকে কেনা। বর্ষা বা শীত—যে ঋতুই হোক না কেন, তাঁর ক্রকস পরতে ভালো লাগে।
অবসরের সঙ্গী
‘অবসরে আমার বাচ্চাকে সময় দিই।’ বাচ্চা হলো তাঁর স্নেহের জার্মান শেফার্ড। দুই বছর ধরে এ পোষ্য়টি সুনিধির সঙ্গী হয়ে আছে। তাকে নিয়েই তিনি ঘুরতে বের হন, শপিংয়ে যান।
মাটন রান্নায় সিদ্ধহস্ত
ইদানীং সেভাবে রান্নাবান্না করার সুযোগ মেলে না। আবার পূজায় বাড়ি গেলে বাবাই রেঁধে-বেড়ে খাওয়ান। মোটকথা, বছরে দু-চারবার রান্না করা হয়। তবে যখন রান্না করেন, তখন মন দিয়েই করেন। মাটন খেতে দারুণ ভালোবাসেন সুনিধি। মাটনের সব ধরনের রেসিপি রান্নার চেষ্টা করেন। মাটন নিয়ে নিরীক্ষামূলক খাবার রান্না করতে ভালো লাগে সুনিধির।