অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
কেন বেশি বেশি লবণ খাওয়া ভালো নয়
খাওয়ার সময় অনেকে পাতে আলাদা লবণ নিয়ে থাকেন, কেউ আবার সামনে রাখেন সল্ট শেকার। খাবার যা-ই নেন না কেন, পাতে ঝেড়ে নেন লবণ। অথচ কমবেশি সবাই জানে, এই লবণ ক্ষতি করে রক্তচাপের।
কিডনি রক্ত থেকে বাড়তি পানি বের করে দিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। লবণে আছে সোডিয়াম। রক্তে বেশি সোডিয়াম থাকলে বেশি পানি টেনে নেয় রক্ত। রক্তনালিতে বেশি লবণ মানে রক্তে পানির পরিমাণ বেশি। এ জন্য রক্তচাপ বেড়ে যায়। রক্তে চাপ বেশি থাকলে কালক্রমে রক্তনালিদের করতে হয় কঠোর পরিশ্রম। একে মোকাবিলা করতে গিয়ে রক্তনালির দেয়াল হয় পুরু। ফলে তার ভেতরের পরিসর কমে যায়। সে জন্য রক্ত চাপ আরও বেড়ে যায়। বিভিন্ন দেহযন্ত্রে যায় কম রক্ত। অথচ এই রক্ত-ই অক্সিজেন আর অন্য পুষ্টি উপকরণ বয়ে নিয়ে যায় দেহের বিভিন্ন জায়গায়। রক্ত যখন কম যায়, তখন হার্টে ব্যথা হয়। এ অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক হওয়াও বিচিত্র নয়। কম রক্ত মগজে গেলে ঘটাতে পারে স্ট্রোক। দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাক আর স্ট্রোকের অর্ধেকের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ।
প্রাপ্তবয়স্ক আর ১১ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের দিনে ৫-৬ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। সাধারণত ৬ গ্রাম লবণ এক চা-চামচ পরিমাণ হয়ে থাকে। আর তাতে থাকে ২.৪ গ্রাম সোডিয়াম। শিশুদের লবণ খেতে হবে আরও কম। আমরা যে খাবার খাই, তার তিন-চতুর্থাংশ রেডিমেড খাবার। সেগুলো হতে পারে রুটি, সকালের নাশতা, সিরিল ইত্যাদি। এ অবস্থায় কী করবেন?
■ খাবার পরীক্ষা করে দেখুন, তাতে লবণ কম কি না।
■ রান্নার সময় লবণ দেবেন না। দিন লতাগুল্মের ফ্লেভার, গোলমরিচ, মসলা ও লেবুর রস।
■ কোনোভাবেই খাবার পাতে লবণ নেবেন না।
■ টেবিলে সল্ট শেকার রাখবেন না।
■ সস বা আচার খাবেন না। এমনকি রান্নাতেও দেবেন না।
■ টেক অ্যাওয়ে বা ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁয় যাবেন না।
■ নতুন ফ্লেভারে জিব অভ্যস্ত হলে খাবারে আর লবণ যোগ করতে হবে না।
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল